সুমাইয়ার চিঠিতে বিশ্বাস নেই বাফুফের!
Published: 4th, February 2025 GMT
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কাছে পাঠানো চিঠি ইংরেজিতে লেখা। গত বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা মেয়েদের তিন পৃষ্ঠার বিবৃতি লেখা বাংলায়। দুই ভাষায় লেখার কারণেই বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের চিঠি নিয়ে সন্দেহ বাফুফের বিশেষ কমিটির। চিঠির মূল লেখকের নাম জানতে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে আলাদাভাবে প্রশ্ন করেছেন বিশেষ কমিটির সদস্যরা।
জাপানে বেড়ে ওঠা মাতসুশিমা সুমাইয়া ইংরেজিতে চিঠি লিখেছেন বলে কমিটির সামনে উত্তর দিয়েছেন সবাই। এমনকি সুমাইয়াও বলেছেন সতীর্থদের হয়ে তিনিই চিঠি লিখেছেন। কিন্তু ইংরেজি লেখা চিঠি নিয়ে মেয়েদের এ দাবি বিশ্বাস হচ্ছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের। তাদের কথা সভাপতি তাবিথ তো বাংলা বোঝেন, তাহলে তাঁর কাছে যে চিঠি গেছে, সেটা ইংরেজিতে কেন? ঘটনাগুলো যেহেতু বাফুফের অভ্যন্তরীণ, অন্য কোনো দেশে ঘটেনি, সে হিসেবে ইংরেজিতে লেখার প্রশ্নই ওঠে না বলে মেয়েদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত থাকা একটি সূত্র গতকাল সমকালকে জানিয়েছে। নিজের লেখা চিঠির বিষয়ে জানতে সোমবার সুমাইয়ার মোবাইলে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও ওপাশ থেকে সাড়া মেলেনি।
জাপানে বেড়ে ওঠা সুমাইয়া বাংলাদেশের নারী ফুটবলের অন্যতম তারকা। বাংলাদেশের অন্য নারী ফুটবলারদের চেয়ে তাঁর ইংরেজি দক্ষতা বেশ ভালো। বিশেষ কমিটিতে তিনি বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতে দিয়েছেন। এখানেও বিদ্রোহী ফুটবলারদের পরিকল্পনা আছে বলে ধারণা করছেন বাফুফে কর্তারা। ‘তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে চিঠি কেন ইংরেজিতে লেখা হয়েছে? তারা বলেছে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য। তাহলে সাংবাদিকদের কেন বাংলা চিঠি দিয়েছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কেউ কেউ চুপ হয়ে যান। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে সুমাইয়াকে সামনে এনে সাবিনারা আড়াল করতে চাচ্ছেন চিঠির আসল লেখককে। চিঠিটা কোথা থেকে এসেছে, সেটা আমরা বুঝে গেছি। সভাপতি আমাকে বলেছেন বাইরের দেশে পড়াশোনা করেছি, আমিও তো এমন ভাষায় চিঠি লিখতে পারি না। সুমাইয়ার জন্য খারাপ লাগছে। একটা সহজ-সরল মেয়েকে ওরা সামনে এনেছে। সুমাইয়া তো বলেই দিয়েছে সে হয়তো বাংলাদেশ ছেড়ে জাপান চলে যাবে। দুঃখটা আরও বেশি লাগছে ৪-৫টা মেয়ের জন্য ৮-১০ জন ঝরে যাবে’– জানিয়েছে ওই সূত্র।
শুধু চিঠির বিষয়ই নয়, কমিটির সামনে বাটলারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেয়েরা। ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে অনুশীলনে যাওয়া মেয়েদের নাকি শাসাতেন ব্রিটিশ এ কোচ। এমনকি অনুশীলনের সময় দুটি পাস ভুল হলে নাকি গালাগাল করতেন বাটলার– এমন অভিযোগও বিশেষ কমিটিকে শুনিয়েছেন সাবিনা-সুমাইয়ারা। একজন পেশাদার কোচ তাঁর শিষ্যদের কাছ থেকে সেরাটা বের করার জন্য এমনটা করতে পারেন বলে মনে করছেন ফুটবল-সংশ্লিষ্টরা। শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ কোচের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের আগে নারী উইং অন্তত অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারত বলে ক্ষোভ জানান মেয়েরা।
দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তাদের ধারণা, পারফরম্যান্স ও বয়সের কারণে কয়েকজন নারী খেলোয়াড় দল থেকে বাদ পড়তে পারেন। তাই আরও দুই বছর ক্যাম্পে থাকার জন্য বাটলারের বিরুদ্ধে কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলার গিয়েছেন বলে গুঞ্জন বাফুফের অভ্যন্তরে।
শুধু বাটলারের বিরুদ্ধে ১৮ নারী ফুটবলারের বিদ্রোহী হওয়ার পেছনে বাফুফের সাবেক টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিকে নিয়ে সন্দেহ অনেকের। কারণ বাটলারের সঙ্গে স্মলির সম্পর্ক অনেকটা দা-কুমড়োর মতো। অতীতে বাংলাদেশে আসার কথা থাকলেও স্মলি থাকায় বাফুফের প্রস্তাবে সাড়া দেননি বাটলার। আবার বাফুফে নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বাটলারকে যেমন চান, তেমনি করে সাবেক টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির প্রতিও তাঁর দুর্বলতা আছে।
তাই মেয়েদের আন্দোলনের এই ইন্ধনে বেশ কয়েকটি গোষ্ঠীর সম্পর্ক থাকতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। সে জন্য নারী উইংয়ের সঙ্গে বসার কথা বিশেষ কমিটির। একই সঙ্গে বাটলারের সতীর্থ অন্য কোচিং স্টাফদেরও তলব করতে পারে কমিটি। সবার সঙ্গে কথা বলার পর বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিশেষ কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে। তখনই বেরিয়ে আসতে পারে ভেতরের অজানা অনেক বিষয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ ষ কম ট র ফ টবল র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তিক্ততা ভুলে শহিদকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা (ভিডিও)
বলিউডের তারকা জুটি কারিনা কাপুর ও শহিদ কাপুর। তাদের রুপালি পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন চুটিয়ে প্রেম করার পরও ভেঙে যায় সেই সম্পর্ক।
প্রেমের ভাঙন কারিনা-শহিদের মনে তিক্ততা তৈরি করে। মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল তাদের। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কারিনা কাপুর খান ও শহিদ কাপুর। ঝলমলে এই অনুষ্ঠানে কথা তো দূরের কথা, শহিদ কাপুরকে পাত্তাই দেননি কারিনা। এবার সেই শহিদ কাপুরকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন কারিনা।
গতকাল জয়পুরে অনুষ্ঠিত হয় আইফা অ্যাওয়ার্ডের সংবাদ সম্মেলন। সেই মঞ্চের একটি ভিডিও ক্লিপ এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। তাতে দেখা যায়, মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়ানো করন জোহর, শহিদ কাপুরসহ অনেকে। মঞ্চে গিয়ে শহিদকে জড়িয়ে ধরেন কারিনা। এরপর খানিকটা সময় তারা কথাও বলেন।
আরো পড়ুন:
ছাবা ঝড়: ২৩ দিনে আয় ১ হাজার কোটির দুয়ারে
সবচেয়ে বেশি আয় করা নারীকেন্দ্রিক পাঁচ সিনেমা
এ দৃশ্য দেখে বিস্মিত নেটিজেনরা। একজন লেখেন, “ওহ মাই গড, শহিদ-কারিনা একসঙ্গে।” আরেকজন লেখেন, “কি রসায়ন।” জুনায়েদ নামে একজন লেখেন, “নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে অন্তর্জালে।
কারিনাকে জড়িয়ে ধরা ও তার সঙ্গে কথা বলার ব্যাপার নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পড়েন শহিদ। এ অভিনেতা বলেন, “আমাদের জন্য এটি নতুন কিছু নয়। আমাদের আজ মঞ্চে দেখা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখানে-সেখানে একে অপরের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি করি। এটা আমাদের জন্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার। মানুষ যদি এটাকে ভালোভাবে নেয় তাহলে এটা ভালো।”
বলিউডের অন্যতম আলোচিত জুটি শহিদ ও কারিনা কাপুর। তাদের প্রেম কাহিনিও ঠিক তেমন। ২০০৩ সালে ‘ইশক ভিশক’ সিনেমার মাধ্যমে নায়ক হিসেবে শহিদের বলিউডে অভিষেক হয়। তাকে দেখে প্রেমে পড়েন কারিনা। ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় সিজনে হাজির হয়ে এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, শহিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাকে কল করতেন, মেসেজ পাঠাতেন। এমনকি, এই অভিনেতাকে বিয়েও করতে চান বলে জানান।
বাস্তবে তাদের প্রেমের গল্প মধুর হলেও শুরুতে রিল লাইফে তাদের রসায়ন দর্শকের খুব একটা মনে ধরেনি। তাদের প্রেমের গুঞ্জন যখন বলিপাড়ায় উড়ছে তখন, ‘ফিদা’ (২০০৪) সিনেমায় প্রথম জুটিবদ্ধ হন তারা। কিন্তু বক্স অফিসে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। ২০০৬ সালে ‘থার্টি সিক্স চায়না টাউন’ ও ‘চুপ চুপ কে’ সিনেমায় একসঙ্গে পর্দায় হাজির হলেও বক্স অফিস মাতাতে পারেননি তারা। তবে এই জুটিকে দর্শকের মন মতো পর্দায় তুলে ধরতে পেরেছিলেন নির্মাতা ইমতিয়াজ আলী। ‘জব উই মেট’ সিনেমায় তাদের রসায়ন আজও ভক্তদের মনে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু পর্দায় রসায়ন জমে উঠলেও ততদিনে ম্লান হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনের প্রেম। এই সিনেমার সেটেই তাদের ব্রেকআপ হয়। এমনকি সিনেমার ‘তুমসে হি’ গানের শুটিংও আলাদাভাবে করেন শহিদ-কারিনা।
তবে কী কারণে তাদের সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল তা আজও অজানা। গুঞ্জন শোনা যায়, শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি কারিনার মা ববিতা কাপুর। তা ছাড়া সিনেমায় নায়কের চরিত্রে শহিদকে নেওয়ার সুপারিশ করতেন কারিনা। তার মা সেটিও পছন্দ করতেন না। এছাড়া ব্যক্তিত্বের দিক থেকে শহিদ ও কারিনা ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা। শহিদ চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে কারিনা হাসিখুশি থাকেন ও একটু বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন। প্রেমে পড়ার পর তাদের এই ব্যাপারগুলো সম্মুখে আসে। তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো, বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল এবং এ সকল কারণে তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে।
২০০৭ সালে ‘কিসমত কানেকশন’ সিনেমার শুটিং করতে বিদ্যা বালানের সঙ্গে কানাডা যান শহিদ। অন্যদিকে ভারতের লাদাখে সাইফ আলী খানের সঙ্গে ‘তাশান’ সিনেমার শুটিং করছিলেন কারিনা। সেই সময় বিদ্যার সঙ্গে শহিদ কাপুরের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়, যা শুনে কষ্টে পেয়েছিলেন কারিনা। সেই সময় এই অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়ান সাইফ আলী খান। পরবর্তীতে তাদের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হতে থাকে। এরপর প্রেম। এদিকে ‘কামিনে’ সিনেমা করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শহিদ। তবে এই অভিনেতার সেই সম্পর্কও বেশিদিন টেকেনি।
২০১৬ সালে অভিষেক চৌবের ‘উড়তা পাঞ্জাব’ আবারো এক মঞ্চে হাজির করে শহিদ-কারিনাকে। সিনেমাটিতে তাদের একসঙ্গে কোনো দৃশ্য ছিল না। কিন্তু ট্রেইলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন তারা।
ব্যক্তিগত জীবনে বর্তমানে শহিদ ও কারিনা দুজনই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে সুখী। ২০১২ সালে সাইফকে বিয়ে করেন কারিনা। এই দম্পতির দুটো পুত্রসন্তান রয়েছে। অন্যদিকে অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই মিরা রাজপুতকে বিয়ে করেন শহিদ কাপুর। ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট এ দম্পতির মেয়ে মিশা এবং ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাদের পুত্র জেইন কাপুরের জন্ম হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ঢাকা/শান্ত