‘পাকিস্তানে বিপিএলের উন্মাদনা তুঙ্গে’
Published: 4th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়ার পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরেছেন তিন ক্রিকেটার। শুধু কি জাতীয় দলে ফেরা…আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে সুযোগ পেছেন তারা। ফরচুন বরিশালের ফাহিম আশরাফ, রংপুর রাইডার্সের খুশদিল শাহ ও চিটাগং কিংসে উসমান খানের কপাল খুলেছে। বিপিএলে তিন ক্রিকেটারই নিজের রঙ ছড়িয়েছেন।
বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আলাদা নজর আছে বিপিএল প্রতিযোগিতায়। সেই উন্মাদনা কতোটা জানতে চাওয়া হয়েছিল ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে আসা পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আলীর কাছে। যিনি গতকাল প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ২৪ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন। যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেরও প্রথম ৫ উইকেট।
বিপিএল নিয়ে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানাতে গিয়ে ৩২ পেরোনো মোহাম্মদ আলী বলেছেন, ‘‘শুধু বিপিএল নয়, পাকিস্তানে সব ধরণের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আগ্রহ তুঙ্গে থাকে। আমি প্রথমবারের মতো বিপিএলে খেলছি। খেলাটাকে উপভোগ করেছি।’’
বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে সেই ডিসেম্বরেই ঢাকা এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী। খেলার সুযোগ পাননি লিগের ১২ ম্যাচে। মাঝে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। আবার বরিশালের ডাকে ফিরে এসেছেন। এসেই দলের জয়ের নায়ক হয়েছেন। বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে দলকে তুলেছেন বিপিএল ফাইনালে।
ম্যাচের অপেক্ষায় থাকা এ পেসার সুযোগটি কাজে লাগানোয় দারুণ উচ্ছ্বসিত, ‘‘আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি খেলি বা না খেলি দলকে অবশ্যই জিতবে হবে। আমি এটাও বিশ্বাস করি আপনি যদি সুযোগ না পান তাহলে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা এমন না যে, আপনি সুযোগ পাচ্ছেন না বলে নিজেকে তৈরিও রাখবেন না। এজন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম। এমন সময়োপযোগী পারফরম্যান্সের জন্য। এবং এই পারফরম্যান্সটা কঠিন স্তরেই আসল। কঠিন পরিস্থিতিতেও। এজন্য আমি বেশি খুশি।’’
‘‘দলের জন্য পারফর্ম করতে পারা নিশ্চিতভাবেই আনন্দের। আমি পাকিস্তানেও এ ধরণের পারফরম্যান্স করেছি একাধিকবার। আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি চেষ্টা করেছি ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা রাখতে কঠিন মুহূর্তে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং করার চেষ্টা করেছি।’’ - যোগ করেন আলী।
নিজের শেষ ওভার করতে এসে ৪ উইকেট নেন তিনি। বিপিএলে এর আগে কোনো বোলার ওভারে ৪ উইকেট পায়নি। নতুন এই কীর্তি গড়ায় গর্বিত আলী, ‘‘এটা দারুণ অনুভূতি যে এক ওভারে চারটি উইকেট নেওয়া।’’
জাতীয় দলের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো অভিষেক হয়নি তার। টেস্ট খেলেছেন মোটে ৪টি। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬ উইকেট পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার রেকর্ড ঈর্ষণীয়। ৪৭ ম্যাচে ১৭৪ উইকেট ২৫.
কেন এমনটা হচ্ছে সেই কারণ জানাতে গিয়ে আলী বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি এটা অনেকেরই ধারনা, যারা লাল বলের ক্রিকেটে খেলছে তারা সাদা বলের ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারে না। বিশ্বজুড়েই এই ধারনাটা আছে। আমার সাদা বলের ক্রিকেটের সাফল্য ধারা নতুন কিছু নয়। আমি আগেও বলেছি, আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করার চেষ্টা করি সেটা চারদিনের ম্যাচ হোক বা ওয়ানডে ম্যাচ হোক। কিংবা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। আমি এখানে এসেছি কেবল উপভোগ করার জন্যই। সেটা যেকোনো ফরম্যাটেই হোক না কেন।’’
চারদিনের ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে আলী যোগ করেন, ‘‘আমি সব সময়ই বলি, টেস্ট ক্রিকেট ও চারদিনের ক্রিকেট সবচেয়ে কঠিন খেলা। যখন একজন বোলার চারদিনের কিংবা টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মিত বোলার হয়, তাহলে সীমিত পরিসরের খেলাগুলো তার জন্য সহজ হয়ে যায়। সেটা সবার জন্যই। আপনি বলতে পারেন, টি-টোয়েন্টি বৈচিত্র্যপূর্ণ খেলা। চারদিনের ক্রিকেট অনেকটাই কন্ডিশন নির্ভর। আপনি সেখানে সব সময়ই চাইবেন কেবল ভালো জায়গায় বোলিং করতে। ফলে তাদের জন্য সীমিত পরিসরের প্রতিযোগিতা তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়।’’
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ল র হয় র জন য উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিপিএলে প্লে-অফের আগে ব্যাটে-বলে সেরা যারা
বিতর্কের ছায়া থাকলেও মাঠের লড়াই জমজমাটই ছিল এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে গ্রুপ পর্ব, সামনে প্লে-অফের লড়াই। তবে দলগুলোর চূড়ান্ত লড়াইয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতা ছিল নজরকাড়া।
ব্যাট হাতে এবারের আসরে দারুণ পারফর্ম করেছেন দেশি ক্রিকেটাররা। শীর্ষ পাঁচ রান সংগ্রাহকের মধ্যে প্রথম চারজনই বাংলাদেশি। তবে তাদের মধ্যে তিনজনের দল বিদায় নিয়েছে গ্রুপ পর্ব থেকেই। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তানজিদ হাসান তামিমের দল ঢাকা ক্যাপিটালস আগেই ছিটকে গেছে। অন্যদিকে বিপিএলের ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার তাসকিন আহমেদের দল দুর্বার রাজশাহীও প্লে-অফে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে।
রানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ঢাকার তানজিদ তামিম। দল ব্যর্থ হলেও ব্যক্তিগতভাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এই ওপেনার। ১২ ম্যাচে ৫টি ফিফটি ও ১টি সেঞ্চুরির সাহায্যে করেছেন ৪৮৫ রান, গড় ৪৪ এর বেশি ও স্ট্রাইকরেট ১৪১.৩৯। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন খুলনার নাইম শেখ, যার রান ৪৪৪। প্লে-অফে এলিমিনেটর ম্যাচে তিনি থাকছেন, সেখানে ভালো খেললে তার সামনে আরও দুই ম্যাচের সুযোগ থাকবে। ১৪৮ স্ট্রাইকরেটে ৩টি ফিফটি ও ১টি সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে।
তৃতীয় স্থানে থাকা এনামুল হক বিজয়ের (দুর্বার রাজশাহী) সংগ্রহ ৩৯২ রান। ১৩০ স্ট্রাইকরেটে তিনি ১টি সেঞ্চুরি ও ২টি ফিফটি করেছেন। চতুর্থ স্থানে থাকা সিলেট স্ট্রাইকার্সের জাকির হাসানের রান ৩৮৯, আর পঞ্চম স্থানে থাকা চিটাগাং কিংসের ইংলিশ ব্যাটার গ্রাহাম ক্লার্ক করেছেন ৩৭৭ রান।
বোলিংয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ। পুরো আসর জুড়ে দারুণ ফর্মে থেকে ২৫ উইকেট শিকার করেছেন এই পেসার। তার দল বিদায় নেওয়ায় তাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ থাকছে বরিশালের ফাহিম আশরাফ ও রংপুর রাইডার্সের আকিব জাভেদের সামনে। বরিশালের বিদেশি পেসার ফাহিম আশরাফ ২০ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। রংপুরের আকিব জাভেদ এখন পর্যন্ত শিকার করেছেন ১৯ উইকেট। ১৮ উইকেট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন চিটাগাং কিংসের দেশি পেসার খালেদ আহমেদ। খুলনার আবু হায়দার রনি ও রংপুরের খুশদিল শাহ নিয়েছেন ১৭টি করে উইকেট।