বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়ার পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরেছেন তিন ক্রিকেটার। শুধু কি জাতীয় দলে ফেরা…আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে সুযোগ পেছেন তারা। ফরচুন বরিশালের ফাহিম আশরাফ, রংপুর রাইডার্সের খুশদিল শাহ ও চিটাগং কিংসে উসমান খানের কপাল খুলেছে। বিপিএলে তিন ক্রিকেটারই নিজের রঙ ছড়িয়েছেন। 

বোঝাই যাচ্ছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আলাদা নজর আছে বিপিএল প্রতিযোগিতায়। সেই উন্মাদনা কতোটা জানতে চাওয়া হয়েছিল ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে আসা পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আলীর কাছে। যিনি গতকাল প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ২৪ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন। যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেরও প্রথম ৫ উইকেট। 

বিপিএল নিয়ে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানাতে গিয়ে ৩২ পেরোনো মোহাম্মদ আলী বলেছেন, ‘‘শুধু বিপিএল নয়, পাকিস্তানে সব ধরণের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আগ্রহ তুঙ্গে থাকে। আমি প্রথমবারের মতো বিপিএলে খেলছি। খেলাটাকে উপভোগ করেছি।’’ 

বরিশালের হয়ে বিপিএল খেলতে সেই ডিসেম্বরেই ঢাকা এসেছিলেন মোহাম্মদ আলী। খেলার সুযোগ পাননি লিগের ১২ ম্যাচে। মাঝে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। আবার বরিশালের ডাকে ফিরে এসেছেন। এসেই দলের জয়ের নায়ক হয়েছেন। বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে দলকে তুলেছেন বিপিএল ফাইনালে। 

ম্যাচের অপেক্ষায় থাকা এ পেসার সুযোগটি কাজে লাগানোয় দারুণ উচ্ছ্বসিত, ‘‘আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি খেলি বা না খেলি দলকে অবশ্যই জিতবে হবে। আমি এটাও বিশ্বাস করি আপনি যদি সুযোগ না পান তাহলে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা এমন না যে, আপনি সুযোগ পাচ্ছেন না বলে নিজেকে তৈরিও রাখবেন না। এজন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম। এমন সময়োপযোগী পারফরম্যান্সের জন্য। এবং এই পারফরম্যান্সটা কঠিন স্তরেই আসল। কঠিন পরিস্থিতিতেও। এজন্য আমি বেশি খুশি।’’ 

‘‘দলের জন্য পারফর্ম করতে পারা নিশ্চিতভাবেই আনন্দের। আমি পাকিস্তানেও এ ধরণের পারফরম্যান্স করেছি একাধিকবার। আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি চেষ্টা করেছি ধৈর্য ও ধারাবাহিকতা রাখতে কঠিন মুহূর্তে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং করার চেষ্টা করেছি।’’ - যোগ করেন আলী। 

নিজের শেষ ওভার করতে এসে ৪ উইকেট নেন তিনি। বিপিএলে এর আগে কোনো বোলার ওভারে ৪ উইকেট পায়নি। নতুন এই কীর্তি গড়ায় গর্বিত আলী, ‘‘এটা দারুণ অনুভূতি যে এক ওভারে চারটি উইকেট নেওয়া।’’ 

জাতীয় দলের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো অভিষেক হয়নি তার। টেস্ট খেলেছেন মোটে ৪টি। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টেও ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬ উইকেট পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার রেকর্ড ঈর্ষণীয়। ৪৭ ম্যাচে ১৭৪ উইকেট ২৫.

০২ গড়ে। নিয়মিত লাল বলে ক্রিকেট খেলায় তাকে অনেকেই উপেক্ষিত রাখে সাদা বলের ক্রিকেটে।

কেন এমনটা হচ্ছে সেই কারণ জানাতে গিয়ে আলী বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি এটা অনেকেরই ধারনা, যারা লাল বলের ক্রিকেটে খেলছে তারা সাদা বলের ক্রিকেটে পারফর্ম করতে পারে না। বিশ্বজুড়েই এই ধারনাটা আছে। আমার সাদা বলের ক্রিকেটের সাফল্য ধারা নতুন কিছু নয়। আমি আগেও বলেছি, আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করার চেষ্টা করি সেটা চারদিনের ম্যাচ হোক বা ওয়ানডে ম্যাচ হোক। কিংবা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। আমি এখানে এসেছি কেবল উপভোগ করার জন্যই। সেটা যেকোনো ফরম্যাটেই হোক না কেন।’’ 

চারদিনের ক্রিকেট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে আলী যোগ করেন, ‘‘আমি সব সময়ই বলি, টেস্ট ক্রিকেট ও চারদিনের ক্রিকেট সবচেয়ে কঠিন খেলা। যখন একজন বোলার চারদিনের কিংবা টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মিত বোলার হয়, তাহলে সীমিত পরিসরের খেলাগুলো তার জন্য সহজ হয়ে যায়। সেটা সবার জন্যই। আপনি বলতে পারেন, টি-টোয়েন্টি বৈচিত্র্যপূর্ণ খেলা। চারদিনের ক্রিকেট অনেকটাই কন্ডিশন নির্ভর। আপনি সেখানে সব সময়ই চাইবেন কেবল ভালো জায়গায় বোলিং করতে। ফলে তাদের জন্য সীমিত পরিসরের প্রতিযোগিতা তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ল র হয় র জন য উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সামগ্রিক পারফরম্যান্

দেখতে দেখতে শেষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫। আর মাত্র একটি ম্যাচ। এরপরই পর্দা নামবে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই টুর্নামেন্টের। আজ রোববার (০৮ মার্চ, ২০২৫) বিকেলে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউ জিল্যান্ড। তার আগে চলুন দেখে নেওয়া যাক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সামগ্রিক পারফরম্যান্স কেমন।

:: ভারতের রেকর্ড ::

আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০:
পারফরম্যান্স: রানার্স-আপ। ভারত ফাইনালে পৌঁছালেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়।

আরো পড়ুন:

ভারতীয় ড্রেসিংরুমে রোহিতের অবসর নিয়ে ‘আলোচনা নেই’

নিউ জিল্যান্ডের প্রেরণা নাইরোবির স্মৃতি

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০২:
পারফরম্যান্স: যৌথ চ্যাম্পিয়ন (শ্রীলঙ্কার সঙ্গে)। ফাইনাল ম্যাচ বৃষ্টির কারণে বাতিল হয় এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৪:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৬:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৩:
পারফরম্যান্স: চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ভারত। সেমিফাইনালে ভারত শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে আসে।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৭:
পারফরম্যান্স: রানার-আপ। ভারত ফাইনালে পৌঁছালেও পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়।

:: নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড ::

আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০:
পারফরম্যান্স: ফাইনাল এবং চ্যাম্পিয়ন। ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জিতে নেয় নিউ জিল্যান্ড।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০২:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৪:
পারফরম্যান্স: সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে ফাইনালে যেতে ব্যর্থ হয় নিউ জিল্যান্ড।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৬:
পারফরম্যান্স: রানার-আপ। নিউ জিল্যান্ড ফাইনালে পৌঁছালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৩:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৭:
পারফরম্যান্স: সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে ফাইনালে যেতে ব্যর্থ হয়।

সারসংক্ষেপ:
ভারত একাধিকবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নকআউট পর্বে পৌঁছেছে এবং ২০১৩ সালে একবার শিরোপা জিতেছে।

নিউ জিল্যান্ডও একাধিকবার নকআউট পর্বে খেলেছে, তবে তারা কখনও ট্রফি জিততে পারেনি। তাদের সেরা ফলাফল ছিল ২০০৬ সালে রানার-আপ হওয়া এবং বিভিন্ন আসরে সেমিফাইনাল খেলা। উল্লেখ্য, ২০০০ সালে তারা ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। তবে তখন এটার নাম ছিল আইসিসি নকআউট ট্রফি।

ঢাকা/আমিনুল/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবার এসেই মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন শেল্‌টেক্‌
  • ফাইনালের কি বৃষ্টি বাগড়া দিবে?
  • চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সামগ্রিক পারফরম্যান্
  • টি২০তে অধিনায়ক লিটন!
  • হামজার জন্যই কি ছেত্রির ফেরা?
  • বাগেরহাটে রায়েন্দা-মতিঝিল বিআরটিসি বাস সর্ভিস চালু
  • হামাসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কী চায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি