নোয়াখালীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় নারীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। 

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জেলা বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা জজ) মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের বাহার (৪৬), তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৩৭), মো.

শাহজাহানের ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৮) ও শহিদ উল্যাহ (৩৪)। 

নোয়াখালী জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট তাফাক্কার হোসেন মো. খায়রুল বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, “রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

আদালত সূত্র জানায়, গত ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে কবিরহাট উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামে অভিযান চালায় কবিরহাট থানা পুলিশ। অভিযানকালে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় বাহারের ঘর থেকে তার স্ত্রী নার্গিসকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বসত ঘর থেকে সাড়ে চার হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। 

মাদকগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে বাহার, আনোয়ার ও শহিদ ঘরে রেখেছিলো বলে আটককৃত নার্গিস জানালে পুলিশ পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদেরও আটক করে। মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, বিশেষ দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট তাফাক্কার হোসেন মো. খায়রুল ওয়ালা। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, অ্যাড্যভোকেট আবদুল হক।

ঢাকা/সুজন/ইমন 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নলকূপে পানি উঠছে না, দুর্ভোগে মানুষ

প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুম এলেই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের হাওর-বাঁওড়, খালবিল, নদীনালার পানি শুকিয়ে যায়। এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করতে হয় এ এলাকার মানুষের। কিন্তু চলতি বছর বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এতে নলকূপ থেকেও উঠছে না পানি। এতে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসীকে বাজার থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। 

জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার নছরতপুর, বরগাছ, আলেপুর, পতনঊষার, শমশেরনগর, সদর ইউনিয়ন, মুন্সীবাজার, আলীনগর, রহিমপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অধিকাংশ নলকূপেই পানি উঠছে না। নলকূপ থেকে পানি না পাওয়ার কারণে এলাকাবাসী বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেককে দূরবর্তী জায়গা থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কেউ কেউ দোকান থেকে নিয়মিত পানি কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমের দুই থেকে তিন মাস এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যাপকভাবে পানির অপচয়, বোরো ধান আবাদ বেড়ে যাওয়া, খালবিল, পুকুর শুকিয়ে ফেলা, অপরিকল্পিতভাবে নলকূপ স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া  হাওর-বাঁওড়, খালবিল, নদীনালার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বোরো আবাদে সেচ সংকট দেখা দেয়। কৃষকরা বাধ্য হয়ে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে সেচ কাজ চালান। এতে উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে নলকূপে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। 

কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় নলকূপে একদম পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির জন্য হাহাকার হচ্ছে। বাজার থেকে পানি কিনে খেতে হচ্ছে। দূরবর্তী এলাকা থেকে আমাদের পরিবারের সদস্যরা গোসল ও কাপড় ধুয়ে নিয়ে আসেন। এতে আমাদেরসহ অন্যান্য পরিবারে ভোগান্তির শেষ নেই।’ 
পতনঊষার ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রামের সায়েক আহমদ, রনি মিয়া, লক্ষ্মীপুর গ্রামে নিমাই মালাকার বলেন, তাদের এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবারের নলকূপে পানি উঠছে না। এসব পরিবারকে অনেক কষ্ট করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। 

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুজন আহমেদ বলেন, শুষ্ক মৌসুম এলেই এ সমস্যা হয়। কৃষকরা বোরো মৌসুমে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলার কারণে পানির স্তর নেমে যায়। 

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, পানি সংকটের কারণের কথা তুলে ধরে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তাঁর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।  তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ