ফারুক খানের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
Published: 4th, February 2025 GMT
কারাগারে বন্দি থাকা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডির একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় আপলোড করা ওই পোস্টে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কারাগারে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট কিভাবে পেলেন সাবেক মন্ত্রী? নাকি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি অন্য কারো নিয়ন্ত্রণে?
এ নিয়ে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ সোমবার রাতেই একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শকের (উন্নয়ন) সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার Faruk Khan নামের ফেসবুক আইডির একটি পোস্টের স্ক্রিনশর্ট শেয়ার করে তা কারাগারে আটক সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.
এত বলা হয়, তিনি বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে আটক আছেন। কারাগারে আটক কোনো বন্দির পক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ নেই। ওই আইডিটি সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের কারাগার থেকে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তবে অন্য কেউ বা তার আত্মীয়-স্বজন Faruk Khan নামের আইডিটি পরিচালনা করছে কিনা তা কারাদপ্তর জানে না। বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আনুরোধ জানানো হয়েছে।
ফারুক খানের ওই স্ট্যাটাস মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে তার স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়েছেন। ফারুক খানের ফেসবুক পোস্ট দেখে অনেকে প্রশ্ন করেছেন, কারাগারে থেকে তিনি কিভাবে ফেসবুক ব্যবহার করলেন, কীভাবে মোবাইল ব্যবহার করলেন? অনেকে এটা তার পোস্ট ও ব্যক্তিগত মতামত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ১৫ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর বর্তমানে তিনি কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জাহাঙ্গীর কবির সমকালকে বলেন, কারাগারে বন্দির ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং কারাগারে বসে তার ফেসবুক চালানোর প্রশ্নই আসে না। কারাগারে বসে ফেসবুক চালানো তথ্য সঠিক নয়।
সোমবার সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পর পর দুইটি পোস্ট দেন। প্রথম পোস্টে স্বশস্ত্র বাহিনীর এক প্রোগ্রামে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ খানের সাথে করমর্দন করছেন তিনি। পরের দেওয়া ওই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘অনেক চেষ্টা করে অনলাইনে এসেছি। জেলের চার দেয়াল আমাদের নিজ সত্তার সামনে দাঁড় করায়। অনেক কিছু বলতে চাই, কিন্তু এখন সবই বলতে পারছি না।’ তবে এই পোস্ট দেওয়ার আধাঘণ্টা পর থেকেই তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিটি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এতে আরও লেখা হয়েছে, এতটুকুই বলব, শেখ হাসিনাকে নেত্রী মেনেছিলাম কিন্তু আজকে তার হঠকারিতার জন্যই আমাদের দলের এই পরিণতি। দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন এবং সর্বস্তরে শুদ্ধি অভিযান ব্যতীত কোনো ধরনের রাজনীতিতে ফেরা উচিত হবে না। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ আর চাই না, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ফেরত চাই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক মন ত র র ফ সব ক ড ফ সব ক ব যবহ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, মেয়ে সুমাইয়া আলী ঈশিতা এবং দুই ছেলে আশিক আলী ও মাহতাব আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সিফাত উদ্দিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ আলী এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জন, খাস জমি দখল করে ৫ তলা বাণিজ্যিক হোটেল নির্মাণ এবং সন্দেহজনক লেনদেন বা মানিলন্ডারিংসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।
অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা সপরিবারে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ আলী ছাত্রজীবনে বামপন্থি রাজনীতি করতেন। পরে যোগ দেন যুবদলে। এর পর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও ঋণখেলাপি হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। আয়েশা ফেরদাউস ২০১৪ ও ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে সরকার পতন হলে তিনি পদ হারান।
ঢাকা/মামুন/রফিক