তৃতীয়বারের মতো গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৭ ইটভাটা
Published: 3rd, February 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সেই সাতটি ইটভাটা তৃতীয়বারের মতো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল সোমবার উপজেলার গোড়াই ও বহুরিয়া ইউনিয়নের মীর দেওহাটা, বহুরিয়া ও পাথালিয়াপাড়ায় এ অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ইউএনও এ বি এম আরিফুল ইসলাম।
দুই মাসের ব্যবধানে তৃতীয়বারের মতো ইটভাটাগুলোয় অভিযান চালালো পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। গত ১২ ডিসেম্বর প্রথম অভিযান চালায় পরিবেশ অধিদপ্তর। সে সময় ভাটাগুলোকে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা ও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত ৯ জানুয়ারি অভিযান পরিচালনা করে ভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর পরও ইটভাটার মালিকরা নির্দেশ অমান্য করে ফের চিমনি বসিয়ে ইট পোড়ানোর কার্যক্রম শুরু করেছিল। সর্বশেষ গতকাল সোমবার তৃতীয়বারের মতো ভাটাগুলো অভিযান চালানো হলো। পাশাপাশি দুই ভাটাকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযানের সময় জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিঞা মাহমুদুল হক, সহকারী পরিচালক সজীব কুমার ঘোষ, পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সূত্রধর, সেনাবাহিনীর ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানে বাটা ব্রিকস, নিউ সরকার, হক, নিউ রমিজ, বিঅ্যান্ডবি, সান ও রান ব্রিকস নামে
সাতটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় এইচএসবি ব্রিকসকে ২ লাখ এবং হাকিম ব্রিকসকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, নির্দেশ অমান্য করায় সাত ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় দুটি ভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে ৭ লাখ টাকা।
অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরাইলে ২ পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরকান্দা গ্রামের আমীর আলীর বংশ এবং চান্দের বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে চান্দের বংশের শাহনেওয়াজ নামের এক তরুণের সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ জন্য চান্দের বংশের লোকজন আমীর আলীকে দায়ী করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, থানার ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনও, ওসি এবং সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন, সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান চৌধুরী, এএসআই আলা উদ্দীন, পুলিশ সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও মশিউর রহমান ইটের আঘাতে আহত হন।
তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ রাতে চারজনকে আটক করে।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় আমীর আলীর পক্ষের লোকজন চান্দের বংশের অন্তত ১০টি বতসবাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এছাড়া শাহজাহান মিয়ার বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর। সরাইল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আলী মিয়া (৪০) ও কানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি চান্দের বংশের পক্ষের। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আমীর আলীর বংশের আমির আলি ও চাঁন্দের বংশের শাহনেওয়াজ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান বলেন, “গতকাল রাতের ঘটনায় আমরা ইটের আঘাতে ব্যথা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রামের অবস্থা শান্ত রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশাররফ হোসাইন বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। রাতের অন্ধকারে ইটের আঘাত পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটি হতেই পারে। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কথায় কথায় সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আমি চাই এখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করুক।”
ঢাকা/রুবেল/এস