আলু উৎপাদনকারী শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। উন্নত চাষপদ্ধতির ফলে দিন দিন আলুর উৎপাদন বাড়লেও দেশ এখনও পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি। আবার আলু উৎপাদনে প্রচলিত চাষ পদ্ধতি এবং প্রয়োজনের অধিক রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে মাটির স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। তবে এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক। সম্প্রতি তারা ফলন বৃদ্ধিতে সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি (কনজারভেশন এগ্রিকালচার) বা বিনা চাষে (জিরো টিলেজ) আলু উৎপাদন প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে সাফল্য পেয়েছেন। দুই মৌসুম ধরে আলুর বিনা চাষ পদ্ধতি ও সমন্বিত পুষ্টি ব্যবস্থাপনা বা ইন্টিগ্রেটেড নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজমেন্টের (আইএনএম) ওপর গবেষণা করে প্রাথমিকভাবে সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। 
২ ফেব্রুয়ারি বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব খামার গবেষণাগারে আয়োজিত মাঠ গবেষণা কার্যক্রম পরিদর্শন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান গবেষক দলের প্রধান কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড.

আহমদ খায়রুল হাসান ও সহযোগী গবেষক এফ এম রুহুল কুদ্দুস। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাকৃবি (রিসার্চ সিস্টেম) পরিচালক অধ্যাপক ড. হাম্মাদুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রমিজ উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আবদুল কাদের, অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. পারভেজ আনোয়ার প্রমুখ।

গবেষক দলের দাবি, বিনা চাষে আলুর ফলন প্রচলিত চাষ পদ্ধতির চেয়ে তুলনামূলক বেশি। পাশাপাশি এ পদ্ধতিতে চাষের ফলে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ অনেকাংশে কমে যায়। প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান গবেষণার কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, বারি-৭ (ডায়মন্ড) জাতের আলু নিয়ে গবেষণাটি শুরু করা হয়। এতে দুই ধরনের চাষ পদ্ধতি নিয়ে কাজ করা হয়েছে। একটি প্রচলিত চাষ পদ্ধতি আর অন্যটি সংরক্ষণশীল চাষ বা বিনা চাষ পদ্ধতি। পাশাপাশি আইএনএম পদ্ধতি নিয়েও কাজ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইএনএম পদ্ধতিতে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে পাঁচ ধরনের সারের মাত্রা। প্রথম মৌসুমে আলুর চাষ পদ্ধতি ও সমন্বিত পুষ্টি ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে একই জমিতে তিন উপায়ে চাষাবাদ করে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। প্রথমটিতে বিনা চাষ ও শতভাগ রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে, দ্বিতীয়টিতে প্রচলিত চাষ ও শতভাগ রাসায়নিক সার পদ্ধতি প্রয়োগ করে এবং তৃতীয়টিতে বিনা চাষ ও শতভাগ জৈব সার প্রয়োগ করে চাষাবাদ করা হয়। তিন পদ্ধতির মধ্যে বিনা চাষ পদ্ধতি ও শতভাগ রাসায়নিক স্যার প্রয়োগকৃত অংশের ফলন বাকি দুই পদ্ধতির তুলনায় হেক্টরপ্রতি প্রায় দুই টন বেশি পাওয়া গেছে। গবেষণার দ্বিতীয় মৌসুমের ফসল এখন মাঠে রয়েছে। তবে মাঠ পরিদর্শন করে প্রথম মৌসুমের মতো প্রচলিত চাষ পদ্ধতির চেয়ে বিনা চাষের পদ্ধতিতে অধিক ফলন আশা করছেন তারা। 
সহযোগী গবেষক এফ এম রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতিতে সংস্কার এনে সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি বলতে, প্রায় বিনা চাষে ফসল উৎপাদন বোঝায়। এ পদ্ধতিতে আলুর ক্ষেতে ট্রাক্টর বা হাল দিয়ে মাটি চাষ করার প্রয়োজন হয় না। হালকা টাইন দিয়ে মাটি খুঁড়ে আলু লাগানো হয় এবং জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী জৈব সার দেওয়া হয়। মাটির ওপর খড় দিয়ে মালচিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়, যা মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল ও শতভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক মন্ত্রী ইমরানের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

সিলেটে হত্যা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও সাবের এ মন্ত্রীকে আরো ৩ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাকে সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে পুলিশ গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে। 

সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অ্যাসিস্টান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আলী হায়দার ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে, গত বছরের ২০ অক্টোবর রাজধানীর বনানী থেকে পল্টন থানার একটি মামলায় ইমরান আহমদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আদালত সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলনে সিলেট মহানগরের কিনব্রিজ এলাকায় ছাত্র জনতার ওপর হামলা করা হয়। এতে পঙ্কজ নামের এক ছাত্র মারা যান। ৫ আগস্টের পর এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৭ নম্বর আসামি করা হয় সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে। 

বুধবার সকালে তাকে আদালতে তুলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। পাশাপাশি আদালতে তার পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদনও করেন। তবে বিজ্ঞ বিচারক সেটি নামঞ্জুর করেন। এছাড়া গোয়াইনঘাটের আরো দুইটি মামলায় আজ পৃথক দুটি আদালতে সাবেক এই মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি ট্রিপল হত্যা মামলা রয়েছে। 

আইনজীবীরা জানান, দুটি গুরুতর হত্যা মামলার জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় ইমরান আহমদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিলেট-৪ আসনের পাঁচবার সংসদ সদস্য ছিলেন ইমরান আহমদ। ২০১৮ সালে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরের বছর তাকে এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করেছিলেন শেখ হাসিনা। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত শেখ হাসিনার সরকারেও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী হয়েছিলেন ইমরান আহমদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক মন্ত্রী ইমরানের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
  • পদায়নপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রত্যাহার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • চবির দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে কোরআন দিল ‘মিনার’
  • ঢাবিতে এডুকেশন ইউএসএ স্প্রিং ফেয়ার অনুষ্ঠিত
  • নবীগঞ্জে বালু উত্তোলন ঘিরে সংঘর্ষ, মামলার এজাহার নিয়ে বিভ্রান্তি 
  • সাতকানিয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চার বাড়িতে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট
  • শহীদ আবু সাঈদ ও ওয়াসিমের ব্যবহৃত জিনিসপত্র জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালায়
  • শহীদ নজিরের কবর জিয়ারত বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের