চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ করা অর্থের ১০ শতাংশও খরচ করতে পারেনি। এ সময়ে সার্বিক এডিপি বাস্তবায়ন পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাস্তবায়নের হার এডিপি বরাদ্দের মাত্র ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কেও খরচের পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা কম।
পরিকল্পনা বিভাগের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, এডিপি বাস্তবায়ন হার এত নিম্ন পর্যায়ে থাকলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্যগুলো অর্জন কঠিন হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এডিপি বাস্তবায়নে গতি আনার তাগিদ দিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন। এর আগেও সব উপদেষ্টার কাছে একই ধরনের চিঠি দেন পরিল্পনা উপদেষ্টা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে জাতীয় বাজেটে সরকারি বিনিয়োগের সিংহভাগ বাস্তবায়ন হয়। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সম্পদের প্রাপ্যতা, ব্যবহারের সক্ষমতা, জাতীয় অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ খাতের অগ্রাধিকার, সর্বোপরি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে চলতি অর্থবছরে এডিপির আকার ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, সংশোধিত বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রকৃত ব্যয় পর্যালোচনার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, এসডিজির লক্ষ্যগুলো অর্জন ও কার্যক্রম সচল রাখার মাধ্যমে উন্নয়নের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এডিপির সফল বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।
গত কয়েক বছরের এডিপি বাস্তবায়ন বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের অগ্রগতি তুলনামূলকভাবে নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে মূল বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এডিপি বাস্তবায়নের হার ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যা গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তবে কিছু মন্ত্রণালয় বা বিভাগের ব্যয়ের হার ৩০ শতাংশেরও বেশি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সম্পদের সর্বোত্তম ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এডিপি বাস্তবায়নের হার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছানো প্রয়োজন। বাজেট বাস্তবায়নের হার বাড়াতে এর আগে গত ২৮ নভেম্বর পরিকল্পনা উপদেষ্টা সব উপদেষ্টার কাছে একটি আধাসরকারি পত্র পাঠান। পরিকল্পনা বিভাগও গত ৮ ডিসেম্বর আরও একটি আধাসরকারি চিঠি দিয়েছে।
সার্বিকভাবে পরিকল্পনা বিভাগের ভাষ্য হচ্ছে, সম্পদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় রেখে নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্প সমাপ্তি এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের চেয়ে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করে সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি। উন্নয়ন পরিকল্পনার মূলমন্ত্র দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। এ বিবেচনায় মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বপ্রণোদিত উদ্যোগ এবং নিবিড় মনিটরিং অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। সচিবদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিজ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হবে।
বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টার আধাসরকারি পত্রের নির্দেশনা বিবেচনায় রেখে নিজ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে। বিশেষ করে বৈদেশিক অর্থায়নে এবং দারিদ্র্য বিমোচন, প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসৃজন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নেওয়া যেসব প্রকল্প প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে প্রত্যেক সচিবকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প উপদ ষ ট সরক র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যারামিট সিমেন্টের অর্ধবার্ষিকে লোকসান কমেছে
পুঁজিবাজারে সিমেন্ট খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যারামিট সিমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) ও অর্ধবার্ষিক (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচ্য প্রন্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হয়।
আরো পড়ুন:
কারণ ছাড়াই বাড়ছে শ্যামপুর সুগারের শেয়ার দর
ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের লোকসান বেড়েছে ৮২ শতাংশ
এদিকে আলোচ্য অর্থবছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে (১.৭৮) টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (৩.৮৬) টাকা। সে হিসেবে অলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়ে ২.০৮ টাকা বা ৫৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, ৬ মাস বা অর্ধবার্ষিক প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪.০১ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭.৮৮ টাকা। সে হিসেবে অলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে ৩.৮৭ টাকা বা ৪৯ শতাংশ।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২২.৮৭ টাকা।
ঢাকা/এনটি/এসবি