বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৪৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের বছরের একই মাসের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাস অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে মোট ২ হাজার ৮৯৭ কোটি ডলারের পণ্য।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল সোমবার হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানিতে বেশ গতি রয়েছে। গত সাত মাসে পণ্যটি থেকে ২ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১২ শতাংশ বেশি। শুধু জানুয়ারিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৬৬ কোটি ডলারের, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি।
তৈরি পোশাকের রপ্তানির ধারা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে মনে করেন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। সমকালকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর শুল্ক লড়াই বাংলাদেশকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়ানোর আরও সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাংক ঋণে সুদের হার সহনীয় রাখার পাশাপাশি প্রয়োজন আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা উন্নয়ন।
রপ্তানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ খাত হিসেবে উঠে এসেছে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৬৭ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। জানুয়ারিতে ৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে ৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া শুধু জানুয়ারিতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ডলারের, যা গত বছরের একই মাসের চেয়ে পৌনে ৫ শতাংশ কম।
ইপিবির প্রতিবেদন বলছে, জানুয়ারি নিয়ে টানা চার মাস ধরে রপ্তানি ৪০০ কোটি ডলারের ওপরে। এর মধ্যে অক্টোবর ও নভেম্বরে যথাক্রমে ৪১৩ ও ৪১১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। আর ডিসেম্বরে ৪১১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এল ২১৮ কোটি ডলার
দেশে সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ ২৬ হাজার ৮৭৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স ডিসেম্বর মাসের চেয়ে কমলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা বেড়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬৪ কোটি ডলার।
আরো পড়ুন:
ঋণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি
সেতু নির্মাণে ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ছাড়বে সরকার
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, এর মধ্যে রাষ্টায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫১ কোটি ১১ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৬০ লাখ, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৫৫ কোটি ১৫ লাখ, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে দেশে এক হাজার ৫৯৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৯১ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বর ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
ঢাকা/এনএফ/এসবি