Samakal:
2025-02-05@09:44:01 GMT

পুড়ে গেলে যা করবেন

Published: 3rd, February 2025 GMT

পুড়ে গেলে যা করবেন

আগুন দেখলে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে ধীরস্থির থাকুন। প্রথমে এর উৎপত্তি কোথায়, সত্যিই এটি লেগেছে কিনা, জানার চেষ্টা করুন। অযথা চিৎকার-চেঁচামেচি না করে প্রাথমিক অবস্থায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করুন। তেলজাতীয় আগুনে কম্বল, কাঁথা, ছালা বা মোটা কাপড় ভিজিয়ে চাপা দিন। বৈদ্যুতিক আগুনে দ্রুত প্রধান সুইচ বন্ধ করুন। পরনের কাপড়ে আগুন লাগলে মাটিতে গড়াগড়ি দিন। ভুলেও দৌড়াবেন না। তাতে আগুন বেড়ে যাবে। বহুতল ভবনে আগুন লাগলে, পর্যায়ক্রমে ধীরে-সুস্থে নেমে আসুন। হুড়াহুড়ি করে নামতে যাবেন না। আগুন ঊর্ধ্বমুখী, তাই ওপরতলায় আগুন লাগলে প্রথমে সেই তলার লোকজনকে বেরিয়ে আসার সুযোগ দিন। ওপরের তলার পর নিচের দিকের তলার লোকজনকে বেরিয়ে আসার সুযোগ দিন।
প্রাথমিক চিকিৎসা
ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন– শরীরের উপরিভাগের স্তর হচ্ছে ত্বক। আগুনে ত্বক পুড়ে গেলে চামড়া লাল হয়ে যায়, সামান্য ফুলে যায় এবং জ্বালা করে। এ অবস্থাকে বলে প্রথম বা ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন। এ ক্ষেত্রে পোড়ার স্থানে শুধু ১৫ থেকে ২০ মিনিট পানি ঢাললেই চলবে। খুব বেশি জ্বললে একটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেতে পারেন।
সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন– দুই বা সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন হলে ত্বকের উপরিভাগের প্রথম স্তর (এপিডার্মিস) সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরবর্তী স্তর (ডার্মিস) আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুড়ে যাওয়া স্থান লাল হয়ে যায়, ফুলে যায়, ফোসকা পড়ে এবং প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
সাধারণত গরম পানি বা গরম তরল কিছু পড়লে, কাপড়ে আগুন লেগে গেলে, মোমের গরম তরল অংশ সরাসরি চামড়ায় লাগলে, আগুনে উত্তপ্ত কড়াইজাতীয় কিছুর স্পর্শে এ ধরনের বার্ন হয়। এ ক্ষেত্রে অনেকক্ষণ ধরে পানি ঢালতে হবে– এক-দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। ফোসকা গলানোর চেষ্টা করবেন না।
থার্ড ডিগ্রি বার্ন
তিন বা থার্ড ডিগ্রি বার্ন হলে ত্বকের উপরিভাগের দুটি স্তরই (এপিডার্মিস ও ডার্মিস) সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চামড়ার নিচে থাকা মাংসপেশি, রক্তনালি, স্নায়ু ইত্যাদিও আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত স্থান কালো হয়ে যায়, চামড়া পুড়ে শক্ত হয়ে যায়, স্পর্শ করলেও ব্যথা অনুভূত হয় না। সরাসরি আগুনে পুড়লে, বিদ্যুতায়িত হলে, ফুটন্ত পানি বা তরল সরাসরি শরীরে পড়লে বা বিস্ফোরণে এ ধরনের বার্ন হয়। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব আগুন বা গরম জায়গা থেকে সরিয়ে নিন। পুড়ে যাওয়া কাপড় খুলে দিতে হবে। অযথা ডিম, টুথপেস্ট ইত্যাদি লাগাবেন না। এতে কোনো উপকার নেই। আক্রান্ত ব্যক্তিকে এমনভাবে শুইয়ে দিতে হবে, যাতে তার পুড়ে যাওয়া অংশ খোলা দিকে থাকে। তার পর জগ বা মগে ঠান্ডা পানি বা বরফপানি এনে পোড়া জায়গায় ঢালতে হবে, যতক্ষণ না তার জ্বালা-যন্ত্রণা কমে এবং ক্ষতস্থানের গরমভাবও কমে না যায়। আক্রান্ত স্থানটি ফুলে যাওয়ার আগে সেখান থেকে ঘড়ি, বেল্ট, আংটি, কাপড় ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলতে হবে। পুড়ে যাওয়া অংশে কাপড় লেগে থাকলে সেটি না টেনে বাকি পোশাক কেটে সরিয়ে ফেলুন। পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান হালকা করে বেঁধে দিতে পারেন। 
মুখের কোথাও পুড়ে গেলে পানি দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে, যতক্ষণ না ক্ষতস্থান ঠান্ডা হয় এবং ব্যথা কমে। মুখ ঢাকার প্রয়োজন নেই। পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে এমনভাবে মাস্ক তৈরি করতে হবে, যাতে নাক, মুখ ও চোখ বের করে ঢাকা যায়। সিলভার সালফাডায়জিন ক্রিম হাতের কাছে থাকলে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে লাগিয়ে দিতে পারেন। আক্রান্ত অংশ পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে একটু উঁচু করে ধরে রাখুন। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান থাকলে পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে স্যালাইন বা শরবত করে খেতে দিন অথবা ডাবের পানি বা খাওয়ার পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে দিন। প্রাথমিক চিকিৎসা চালানো অবস্থায় যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিন। v
[বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক]
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ষ ক র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘রেললাইন ছেড়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-দাওয়া পেশ করুক’

বর্তমান আইনশৃঙ্খলা প‌রি‌স্থি‌তি নি‌য়ে শতভাগ সন্তুষ্ট নয় ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) স‌চিবাল‌য়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সভা শেষে তি‌নি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা ব‌লেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমরা প্রথমে যেভাবে পেয়েছিলাম সেটা থেকে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। আরো উন্নতি হওয়ার অবকাশ রয়ে গেছে। এজন্য আমরা শতভাগ সন্তুষ্ট নই। এজন্য আমরা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো কীভাবে উন্নত করা যায়।”

সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে বলে মন্তব্য করে উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, “তারা (তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী) তো লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে। দিনের পর দিন কিন্তু তাদের এ দাবি-দাওয়া বেড়েই চলছে। এটার পেছনে কারা জড়িত সেটাও কিন্তু আপনারা জানেন, এটা কিন্তু আপনারা প্রচার করেন না।”

কারা জড়িত, আমরা তো জানি না আপনি বলেন-তখন উপদেষ্টা বলেন, “আমি কেন বলবো, আপনারা জানেন না? যেটা আপনারা জানেন, সেটা কেন আমি বলবো?”

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় কি জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা বলেন, এই অবস্থায় আমার কি করা উচিত? এটা শুধু আমার একার দায়িত্ব নয়, এটা দেশবাসী সবার দায়িত্ব। সচিব মহোদয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব) যা বলেছেন, সেটা আপনারা ভালোভাবে প্রকাশ করেন, জনগণই তাদের (তিতুমীরের শিক্ষার্থী) রেললাইন থেকে উঠিয়ে দেবে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আপনারা (সাংবাদিক) বলেন এই যে জনদুর্ভোগ হচ্ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের উপায় হচ্ছে তারা রেললাইন ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে তাদের কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-দাওয়া পেশ করুক। তারা যাতে জনগণকে দুর্ভোগ না দেয়। তারা যাতে প্রোপার কর্তৃপক্ষের কাছে যায়, রাস্তাটা যাতে ছেড়ে দেয়, জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি সৃষ্টি না হয়।”

একুশে ফেব্রুয়ারিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অন্যান্যবারের মতোই এবারও একুশে ফেব্রুয়ারির রাত ১২টার সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শহীদ মিনারে যাবেন। এরপর উপদেষ্টারা থাকবেন, অন্যান্য লোক যেন থাকবেন সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

এর আগে সোমবার বিকেল ৩টা ৪০মিনিটে রেললাইন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে মহাখালী থেকে উল্টোপথে ফিরে যায় ট্রেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার
  • ‘রেললাইন ছেড়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-দাওয়া পেশ করুক’