খুলনার ডুমুরিয়ায় গত বছরের মতো এবারও শজিনার ভালো ফলন হয়েছে। পতিত এবং লবণাক্ত এলাকায় বিনা খরচে শজিনা আবাদ করে ভালো মুনাফা করছেন কৃষক। এতে শজিনা চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক আকারে শজিনা আবাদ হচ্ছে। এতে ‘শজনের উপজেলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ডুমুরিয়া। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর শজিনা বিক্রি করে চাষিরা ১১ কোটি টাকা আয় করেছে।  ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক-কৃষানিরা। এ কারণে এবার আরও বেশি জমিতে শজিনা আবাদ করেছেন তারা। চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে শজিনা চাষ হয়েছে। ব্যাপক ফলনও হয়েছে। এতে এবার শজনে উৎপাদন এক হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। বর্তমানে উপজেলার ১২৬টি গ্রামে ব্যাপক আকারে শজিনা আবাদ করা হচ্ছে।
শজিনা চাষিদের ভাষ্য, শজিনা আবাদে সার, কীটনাশক ও সেচ খরচ নেই। অনাবাদি জমি এবং লবণাক্ত জমিতেও শজিনা চাষ করা যায়।  শজিনা গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলেই হয়ে যায় গাছ। ডাল রোপণের ১১ মাস পর শজিনা পাওয়া যায়। শীতের মাঝামাঝি গাছে ফুল আসে, শীত শেষ না হতেই শজিনা খাওয়ার উপযোগী হয়। প্রথম দিকে শজিনার কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। গাছে এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত শজিনার ফলন পাওয়া যায়। 

কৃষিতে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চাষি উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের নবদ্বীপ মণ্ডল বলেন, তাদের গ্রামের পুরুষরা মাঠে কাজ করেন। আর নারীরা সংসারের কাজ সেরে বাড়ির আঙিনায় বা ফাঁকা অনাবাদি জায়গায় শজিনার ডাল রোপণ করে যত্ন করেন। এ ছাড়া লবণাক্ত মাটিতেও শজিনা চাষে কোনো প্রভাব পড়ে না। শজিনার ভালো ফলন ও দামে খুশি কৃষক-কৃষানিরা। 
কুলবাড়িয়া গ্রামের নুর মুহাম্মদ মোড়লের ভাষ্য, গত বছর তিনি ১০টি গাছ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকার শজিনা বিক্রি করেছিলেন। এ বছর ১৫ হাজার টাকার শজিনা বিক্রির আশা করছেন তিনি। 
রানাই গ্রামের কৃষক মো.

সেলিম আবেদ বলেন, অন্যান্য সবজির চাষে সার, কীটনাশক ও সেচের খরচ সামলে লাভের মুখ দেখা কঠিন। কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় বেড়ে ওঠা শজিনা বিক্রি করে ভালো মুনাফা করছেন কৃষক। গত বছর তিনি  ৯টি শজিনা গাছ থেকে ৭ হাজার টাকার সজনে বিক্রি করেছিলেন। এবার একই গাছ থেকে ১১ হাজার টাকার শজিনা বিক্রির আশা করছেন। 
শরাফপুর গ্রামের গৃহবধূ কাজলী মণ্ডল বলেন, শজিনা চাষে কোনো খরচ হয় না। আর কৃষকের বাড়ি থেকে ফড়িয়ারা নগদ টাকা দিয়ে শজিনা কিনে নিয়ে যায়। কোনো পরিবহন খরচ লাগে না। শজিনা বিক্রি করে প্রায় পুরোটাই লাভ পাওয়া যায়।    

খর্নিয়া গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মনিমহন মল্লিক শ্রমিকের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শজিনা ডাটা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, নিরাপদ সবজি হিসেবে স্থানীয় বাজার ও শহরে শজিনার কদর অনেক। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মুনাফাও ভালো হয়। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ব্যাপক পরিসরে শজিনা আবাদের কারণে এখন ‘শজিনা উপজেলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ডুমুরিয়া। আগের বাড়ির উঠান ও অনাবাদি জমিতে শজিনার আবাদ হতো। দাম ভালো পাওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবেও উৎপাদন হচ্ছে। শজিনা চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে প্রতি বছর বিনামূল্যে চারা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র গত বছর করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

কানাডার নতুন প্রধামন্ত্রী মার্ক কার্নি

কানাডার নতুন প্রধামন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হলেন। স্থানীয় সময় রোববার প্রধামন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা।

মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

রোববার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট।

টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। এরপর তাঁর উত্তরাধিকার বাছাইয়ের জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল।

আরও পড়ুনকানাডায় কে হচ্ছেন জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি০৭ জানুয়ারি ২০২৫

কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। এ হিসেবে মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ