Samakal:
2025-04-10@12:13:21 GMT

সেই নিতুনকে বাঁচানো গেল না

Published: 3rd, February 2025 GMT

সেই নিতুনকে বাঁচানো গেল না

পেছনে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। ঘরের জানালা দিয়ে ভয়ার্ত চোখে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে এক কিশোর। এলাকাবাসী ভারী হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করে চলেছেন জানালার পাশের দেয়ালে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেয়ালের একটি অংশ ভেঙে উদ্ধার করা হয় ছেলেটিকে। ২৭ জানুয়ারি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভায় ঘটে এ দুর্ঘটনা। দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা নিতুন সরকারকে (১৫) বাঁচানোর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ওই কিশোর। 
নিতুন সরকার ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার এনজিওকর্মী নিমাই সরকারের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে সে থাকত গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাসেম ব্যাপারীর বাসায়। গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র নিতুন সেখানেই আটকা পড়ে যায়। উদ্ধারের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয় নিতুনকে।
দেয়াল ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় নিতুনকে উদ্ধার করেন স্থানীয় এক দল সাহসী মানুষ। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ দৃশ্য হাজারো মানুষের আবেগকে ছুঁয়ে যায়। ৩০ জানুয়ারি দৈনিক সমকালে ‘পেছনে আগুন, বাঁচার আর্তনাদ কিশোরের’ শিরোনামে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, নিতুন ছিল সদা হাসিমুখ এক মেধাবী শিক্ষার্থী। তার মৃত্যু সংবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিতুনের গ্রামের বাড়িতে আছেন। সেখানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ‘নামধারী সন্ত্রাসীদের’ হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বিএনপি নেতা

রাজশাহীর রাজপাড়া থানা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর যুবদলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন ও তাঁর পরিবার বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরের লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রুহুল আমিন এ অভিযোগ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিএনপির আদর্শ ছাড়া অন্য কোনো আদর্শে কখনোই জড়িত ছিলেন না। এ কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ৯টির বেশি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১০ বারের বেশি কারাবরণ করেছেন। এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। দল করতে গিয়ে পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হলেও দমে যাননি।

তিনি বলেন, এত কিছুর পরও দলের বিপথগামী কিছু সদস্য, আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও পতিত সরকারের সুবিধাভোগী অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি রাতে তাঁর বাসভবনে হামলার শিকার হয়েছেন।

রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজপাড়া বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ তৎকালীন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন আহমেদ ও তাঁর ভাই তুহিন, কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপির সদস্য মুরাদ পারভেজ, আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার খিচ্চু, নাইম, সবুজ ও হৃদয়সহ তাঁদের সহযোগীরা। তাঁরা তাঁর বাসভবনে ভাঙচুর করে পরিবারসহ তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেন। এলোপাতাড়ি গুলি করে লুটতরাজ করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার আলামত হিসেবে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছে। কোনোমতে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বর্তমানে আতঙ্কিত ও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন।

যুবদলের এই নেতা বলেন, মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি, মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা কমিটিসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও সুবিধাভোগীদের সরাসরি সদস্য করা হয়েছে। এরপরও বিগত রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে একই ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ অভিযুক্ত সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কাউন্সিল ও মতামত ছাড়াই কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা প্রহসনের নামান্তর মাত্র বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এত অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের আবার নতুন করে পদায়ন করা আর অপরাধীদের পুরস্কৃত করা একই কথা। এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অপরাধীদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়ন করে পুনর্বাসন করার কারণে স্থানীয়ভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দল থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রুহুল আমিন বলেন, শুধু দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই পরিবারসহ তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছে দলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা। তিনি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও দৃশ্যমান কোনো ফলাফল এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। প্রতিনিয়ত বিতর্কিত ব্যক্তি ও বিএনপির কথিত নেতাদের থেকে পরোক্ষভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি পাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। আমি তাঁর হেফাজতকারী। তাঁকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে হয়তো আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলেছেন। তাঁর যে ক্ষতি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমি নিজেই তদন্তের দাবি করেছি।’ আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে রাখার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ রকম যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্র তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ