পেছনে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। ঘরের জানালা দিয়ে ভয়ার্ত চোখে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে এক কিশোর। এলাকাবাসী ভারী হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের পর আঘাত করে চলেছেন জানালার পাশের দেয়ালে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেয়ালের একটি অংশ ভেঙে উদ্ধার করা হয় ছেলেটিকে। ২৭ জানুয়ারি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভায় ঘটে এ দুর্ঘটনা। দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা নিতুন সরকারকে (১৫) বাঁচানোর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ওই কিশোর।
নিতুন সরকার ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার এনজিওকর্মী নিমাই সরকারের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে সে থাকত গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাসেম ব্যাপারীর বাসায়। গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র নিতুন সেখানেই আটকা পড়ে যায়। উদ্ধারের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয় নিতুনকে।
দেয়াল ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় নিতুনকে উদ্ধার করেন স্থানীয় এক দল সাহসী মানুষ। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ দৃশ্য হাজারো মানুষের আবেগকে ছুঁয়ে যায়। ৩০ জানুয়ারি দৈনিক সমকালে ‘পেছনে আগুন, বাঁচার আর্তনাদ কিশোরের’ শিরোনামে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
গোয়ালন্দ লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, নিতুন ছিল সদা হাসিমুখ এক মেধাবী শিক্ষার্থী। তার মৃত্যু সংবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিতুনের গ্রামের বাড়িতে আছেন। সেখানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চলছে।