‘পত্রিকা প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ বাধা কর্পোরেট মালিকানা ও রাজনীতি’
Published: 3rd, February 2025 GMT
পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কর্পোরেট মালিকানা, ব্যবসা, বিজ্ঞাপন ও রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ বাধা বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কর্পোরেট মালিকানা, ব্যবসা, বিজ্ঞাপন এবং রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। এই চার বাধা অতিক্রম করতে পারলে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করা সম্ভব হবে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৬ সেশনের নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমি তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা বিপ্লব করেছে, তাই আমরা কথা বলতে পারছি। বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, দৈনিক আমার দেশ প্রকাশিত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে লিখছি, কারণ আপনারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছে, আর আপনারা বসে বসে দেখছেন। তার বিরুদ্ধে একমাত্র লিখেছে ‘আমার দেশ’। সেই অবস্থান থেকে আমরা তখনো সরে যাইনি, আজও সরে যাইনি। যতদিন এই পত্রিকা থাকবে ততদিন লিখব, ইনশাআল্লাহ।”
এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাহাঙ্গীরনগরসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরচিত ভূমিকা দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় তুলে ধরা হবে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হবে এ সিরিজের সূচনা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য দেন, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর, ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চের নেতা শোয়াইব হাসান, গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু প্রমুখ।
গত ১৪ জানুয়াবি প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৬ কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি হন ওয়াজহাতুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর ইবনে মোবারক।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি পদে মাহমুদুল হাসান, যুগ্ম- সম্পাদক রাহাত চৌধুরি, কোষাধ্যক্ষ ওসমান সরদান, দফতর সম্পাদক এস এম তাওহীদ, গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার ইমন। এছাড়া কার্যকরী সদস্য পদে আহসান হাবিব ও রবিউল ইসলাম নির্বাচিত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সেমিনার রুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি ওয়াজহাতুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর ইবনে মোবারকের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করেন সদ্যবিদায়ী সভাপতি মোসাদ্দেকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নোমান বিন হারুন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৩.৯% থাকবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে, যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় আনুমানিক প্রবৃদ্ধির তুলনায় কম। এর আগে এডিবির পূর্বাভাস ছিল ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ কমে যাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শ্রম অসন্তোষ ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রভাব রাখতে পারে।
গতকাল বুধবার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন ঢাকায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিংগ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এডিবির বাংলাদেশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংস্থার কান্ট্রি ইকোনমিস্ট চন্দন সাপকতা।
প্রতিবেদনে এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতির চলতি প্রবণতা এবং আগামীর ঝুঁকি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর আলাদা উপস্থাপনা ছিল। এতে বলা হয়, সরকারের প্রাক্কলন হলো, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এদিকে আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করেছে এডিবি।
প্রসঙ্গত, এশিয়ার প্রবৃদ্ধি নিয়ে এডিবির পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক শুল্ক বৃদ্ধিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি এশিয়ার ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তার ওপর আলাদা পর্যালোচনা রয়েছে প্রতিবেদনে। সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণার আগে। যদিও গতকাল রাতে পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আগামী দুই অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি কত হতে পারে সে ব্যাপারে হো ইউন জিংগ বলেন, এখনই তা বলা ‘অতি আগাম’ হয়ে যাবে। এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, আগামী প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন তারা। শুল্কহার শেষ পর্যন্ত কেমন থাকে এবং কীভাবে তা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে– এমন বিষয়ের প্রতি নজর রাখছেন তারা।
এডিবির প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার ২০২৫ সালে গড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। সংস্থাটির মতে, ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। অন্যদিকে মালদ্বীপে ৬ শতাংশ, ভুটানে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
মূল্যস্ফীতি কেমন থাকবে
এডিবি বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছতে পারে। যদিও সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমান বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এডিবি বলেছে, নিয়ন্ত্রণ কাঠামোয় ঘাটতি, পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতা কম থাকা, বাজারের বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। অর্থবছরের বাকি কয়েক মাসে হয়তো কিছুটা কমতে পারে, তবে মূল্যস্ফীতির গড় হার দুই অঙ্কে থাকবে। অবশ্য আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি কমে ৮ শতাংশে নামতে পারে।
ঝুঁকি কোথায়
বাংলাদেশ নিয়ে এডিবির প্রাক্কলনের সঙ্গে কিছু নিম্নমুখী ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে। এসব ঝুঁকি যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক উচ্চ ব্যয় এবং সরকারের ভর্তুকি মূল্যস্ফীতি এবং বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে দিতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি, দীর্ঘ সময়ের জন্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং টাকার মান পতন হলে তা অর্থনীতিকে আঘাত করবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক এবং অন্যান্য রপ্তানি গন্তব্যে অর্থনৈতিক ধীরগতি অর্থনীতির জন্য অন্যতম ঝুঁকি।