ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করে জড়িত পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাবির স্যার এএফ রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু বকর সিদ্দিক ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী প্রার্থী ও ওয়ান-ইলেভেনবিরোধী সংগঠন নির্যাতন প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলনের নেতা। তার এ প্রকৃত রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করে তাকে সাধারণ ছাত্র হিসেবে মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে শুধু ছাত্রলীগকে দোষ চাপিয়ে হাসিনা সরকার, পুলিশ ও তৎকালিন ঢাবি প্রশাসনের দায় ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে স্যার এএফ রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে পুলিশের গুলিতে আহত হন আবু বকর সিদ্দিক। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিউল আলম জানিয়েছিলেন, আবু বকর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

কিন্তু তৎকালীন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

হারুন-অর-রশিদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, “আবু বকর সিদ্দিক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মাথায় ‘শক্ত ধাতব পদার্থের আঘাতে’ নিহত হয়েছিলেন।” মূলত ওই তদন্ত প্রতিবেদনকে ব্যবহার করে আবু বকরকে পুলিশের গুলি করার তথ্য গায়েব করা হয়।

আবু বকর হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলন করবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের এক–চতুর্থাংশ দেশে নারী অধিকার দুর্বল হয়েছে: ইউএন উইমেনের প্রতিবেদন

গত বছর বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ দেশে নারীর অধিকার দুর্বল হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশন উইমেনের (ইউএন উইমেন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তাতে নারীর অধিকার দুর্বল হওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে গণতন্ত্র পিছিয়ে যাওয়ার মতো নানা কারণের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার সঙ্গে লিঙ্গসমতায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া অধিকারবিরোধীরা নারী অধিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে দীর্ঘদিনের ঐকমত্যকে সক্রিয়ভাবে ক্ষুণ্ন করছে।

১৯৯৫ সালের বিশ্ব নারী সম্মেলনের নথির উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় এক-চতুর্থাংশ দেশ জানিয়েছে, লিঙ্গসমতার ওপর প্রতিক্রিয়া বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ১৯৯৫ সালের পর থেকে নারী প্রতিনিধি দ্বিগুণ রয়েছে। তবে এখনো সংসদ সদস্যদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ।

২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। তবে ২০০ কোটি নারী ও মেয়েশিশু এখনো এমন জায়গায় বাস করে, যাদের এ ধরনের সুরক্ষা নেই।

লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থানের বৈষম্য কয়েক দশক ধরে স্থবির হয়ে আছে। ২৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী ৬৩ শতাংশ নারীর বেতনভুক্ত কর্মসংস্থান রয়েছে, যেখানে একই জনসংখ্যার ৯২ শতাংশ পুরুষের কর্মসংস্থান রয়েছে।

প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ মহামারি, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোকে লিঙ্গসমতার জন্য নতুন সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউএন উইমেন উপস্থাপিত তথ্যে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে সংঘাত-সম্পর্কিত যৌন সহিংসতা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ৯৫ শতাংশই শিশু বা তরুণী। ২০২৩ সালে ৬১ কোটি ২০ লাখ নারী সশস্ত্র সংঘাতের ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) মধ্যে বাস করতেন, যা ২০১০ সালের তুলনায় ৫৪ শতাংশ বেশি।

ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার ১২টি দেশে, কমপক্ষে ৫৩ শতাংশ নারী অনলাইনে এক বা একাধিক ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে অব্যাহত রয়েছে। জীবদ্দশায় প্রায় তিনজনের মধ্যে একজন নারী তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হন অথবা তাঁর সঙ্গীর বাইরের কারও দ্বারা যৌন সহিংসতার শিকার হন।

প্রতিবেদনে লিঙ্গবৈষম্য মোকাবিলায় একটি বহুমুখী রোডম্যাপ নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে; যাতে এআইয়ের মতো নতুন প্রযুক্তিতে ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য ব্যবস্থা, দারিদ্র্য মোকাবিলায় বিনিয়োগ এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বের এক–চতুর্থাংশ দেশে নারী অধিকার দুর্বল হয়েছে: ইউএন উইমেনের প্রতিবেদন