Samakal:
2025-02-05@09:52:21 GMT

এবার ইউরোপে শুল্ক আরোপের হুমকি

Published: 3rd, February 2025 GMT

এবার ইউরোপে শুল্ক আরোপের হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ওপর ‘নিশ্চিতভাবে’ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন। তাঁর মতে, ইউরোপীয়রা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বেশি সুবিধা নিচ্ছেন। ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বৈষম্য ৩০০ বিলিয়নের বেশি। প্রতিবেশী মেক্সিকো, কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প এ হুমকি দিলেন। সেসঙ্গে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সহায়তা তহবিল বন্ধেরও হুঁশিয়ারি দেন। 

ইউরোপের দেশগুলো সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (ইউরোপের দেশ) আমাদের গাড়ি কিনে না; আমাদের কৃষিপণ্য নেয় না। বলতে গেলে তারা কিছুই নেয় না। আমরা লাখ লাখ গাড়ি, বিপুল পরিমাণ খাদ্যপণ্য তাদের কাছ থেকে নিই।’ তবে কবে থেকে এ শুল্ক আরোপ করা হবে, তা নির্দিষ্ট করেননি ট্রাম্প। 

তিনি বলেন, শিগগিরই এটা করা হতে পারে। সোমবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপের প্রতি এমন দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কোনো ধরনের বাগড়ায় যাবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁর মতে, যুক্তরাজ্য এ তালিকায় নেই।

এ প্রেক্ষাপটে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে জড়ো হয়েছেন ইউরোপের নেতারা। তারা মহাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার করতে চান। সম্প্রতি ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড দখলের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ বাস্তবতায় বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। 

ট্রাম্পের হুমকি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎস বলেছেন, এর চেয়ে ভালো হয় ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যদি একটি চুক্তি করে নেয়। ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলছেন, এটা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার জন্ম দেবে। একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে স্পেনও।

শুল্কের জেরে মার্কিন ভোক্তারা দুর্ভোগে পড়তে পারেন। কারণ, বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি সাধারণত মেক্সিকো থেকে আসে। শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় এগুলোর মূল্য বাড়বে। 

এদিকে রোববার অটোয়ায় কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হকি ম্যাচ চলাকালে বিরল এক ঘটনা ঘটে। ওই ম্যাচে গ্যালারিতে থাকা কানাডার দর্শকরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘বো’ ‘বো’ বলে বিদ্রুপাত্মক স্লোগান দিতে থাকেন। ধারণা করা হয়, শুল্ক আরোপের জেরে কানাডার নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ২৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। কানাডাজুড়ে ‘দেশি পণ্য ব্যবহার করুন’ স্লোগান জোরালো হয়েছে।

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রভাব পড়েছে এশিয়ার পুঁজিবাজারে। হংকং, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাজারে সূচক ২ শতাংশ কমেছে। চীনের মুদ্রার মূল্য ডলারের তুলনায় দশমিক ৪ শতাংশ পড়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে ট্রাম্পের শুল্ক। 

বার্তা সংস্থা এপি জানায়, দক্ষিণ আফ্রিকায় সব ধরনের সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প, যদি না দেশটি তাদের নীতি পুনর্বিবেচনা করে। ট্রাম্প দাবি করেন, নতুন ভূমি অধিগ্রহণ আইনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা নিজ দেশের কিছু সংখ্যক মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউর প শ ল ক আর প র ইউর প র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিচ্ছেন ট্রাম্প, স্থগিত থাকছে ফিলিস্তিনি ত্রাণও

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে তাঁর দেশকে বের করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ–এর জন্য ত্রাণ বরাদ্দও চালু হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী সরকার গত বছর জাতিসংঘের জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার পরিষদ থেকে সরে গিয়েছিল। এ ছাড়া ইসরায়েলের অভিযোগের পর ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় কাজ করা সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর জন্য তহবিল পাঠানোও বন্ধ করে দেয় দেশটি।

ইউএনআরডব্লিউএর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযোগ ছিল, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে যে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল, তাতে অংশ নেওয়া কয়েকজন যোদ্ধাকে সংস্থাটি আশ্রয় দিয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন। নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতের পরই ট্রাম্প জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিলেন।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ও ইউএনআরডব্লিউএর বিরুদ্ধে ইসরায়েল এবং ইহুদিবিদ্বেষী আচরণ করার অভিযোগ করে আসছিল।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জাতিসংঘের নিয়মিত পরিচালনা বাজেটের ২২ শতাংশ দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের পরই দ্বিতীয় স্থানে চীন।

আরও পড়ুনগাজাকে দখলে নেওয়ার ট্রাম্পের পরিকল্পনায় কী আছে১ ঘণ্টা আগে

গতকাল মঙ্গলবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সব সময়ই মনে হয়েছে, জাতিসংঘের অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি সেই সম্ভাবনার জায়গায় নেই...তাদের অবশ্যই ঠিকমতো কাজ করতে হবে। যেসব দেশ ন্যায্যতা দাবি করে, তাদের প্রতি জাতিসংঘের ন্যায়সংগত আচরণ করা উচিত।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কোনো কোনো দেশ “বহিরাগত”, খুব খারাপ এবং প্রায় সময় তারাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে।’ তবে তিনি কোনো দেশের নাম বলেননি।

ট্রাম্প এর আগে ২০১৮ সালের জুনে মানবাধিকার পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। সে সময়ে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত ছিলেন নিকি হ্যালি। হ্যালি অভিযোগ করেছিলেন, পরিষদ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে পক্ষপাতিত্ব করছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণায় কোন দেশগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পরে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি মানবাধিকার পরিষদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ফিরিয়ে আনেন। ২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র ৪৭ সদস্যের পরিষদে একটি আসন জেতে। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনই গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র টানা দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য মানবাধিকার পরিষদের সদস্য হতে চায় না।

আরও পড়ুনগাজার দখল নিতে চান ট্রাম্প৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ