সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে খোলা চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান চিঠিটি দেন।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর মাধ্যমে এই খোলা চিঠি প্রেরণ করেন তিনি। 

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান নিজেই এতথ্য নিশ্চিত করেছেন এবং ফেসবুক পেইজে চিঠিটি পোস্ট করেছেন।

আরো পড়ুন:

নাটোরে বিএনপির ৩ নেতাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির নতুন কমিটি: আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমরা জেলা বিএনপির কাউন্সিলরগণসহ গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আপনার (তারেক রহমান) সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর জেলা বিএনপির পদ প্রত্যাশী এবং জেলা, পৌর-থানা-উপজেলার নেতাকর্মীদের মনে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। একই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের আটটি জেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলেও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি বহাল রেখেই সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে দলের মধ্যে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নেতাকর্মীদের প্রশ্ন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি হওয়ার পর বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা বিএনপির কমিটি বহাল আছে! নাকি গঠনতন্ত্রের কোনো ধারা অনুযায়ী কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে? না হয়ে থাকলে, জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে অল্প সময়ের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা উচিত বলে মনে করছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অনুমোদিত সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির ১৮টি সাংগঠনিক ইউনিটের প্রায় সব ইউনিটেই সিলেকশনের মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোন ইউনিট কমিটিই সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয়নি, যে সব পৌর-থানা-উপজেলার আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে সেগুলোও সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত নয়। এই সব আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ অন্তত পাঁচ বছর অতিক্রম করেছে, সব আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫-৭ জন যা বিগত পাঁচ বছরে বর্ধিত করা হয় নাই। 

এহন পরিস্থিতিতে আগামী সম্মেলনের ভোটার হবে কারা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিও সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক পদপ্রত্যাশীদের কাছে স্পষ্ট নয়। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- জেলা বিএনপির সম্মেলনের আওতাধীন কোনো পৌরসভা/থানা/উপজেলা কমিটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়নি, সব কমিটি বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি/সধারণ সম্পাদক মনোনীত পকেট কমিটি। বর্তমান কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আগামী সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। এমত অবস্থায় অন্যান্য কাউন্সিলরদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য কতটুকু অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ রয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। 

অবিলম্বে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ দীর্ঘ ৭ বছরের বর্তমান কমিটিসহ সব পৌর-থানা-উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ দীর্ঘ ৫ বছরের কমিটি বিলুপ্ত করে গঠনতন্ত্র মোতাবেক সম্মেলনের ব্যবস্থা করে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ডেলিগেটরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে ১৮টি ইউনিটের ১৮১৮জন তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।”

জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জন বলেন, “সারা দেশে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে ব্যতিক্রম। আমি অতিদ্রুত জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি।” 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক বলেন, “হাসিনার অধীনে যেমন সুষ্ঠুু নির্বাচন হয়নি, তেমনি বর্তমান জেলা বিএনপির কমিটি রেখে সুষ্ঠু সম্মেলন সম্ভব না। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে অনেক নেতাই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ নেতাদের নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি।” 

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ স র জগঞ জ জ ল ব ল প ত কর ব এনপ র স ব এনপ র ক ন ত কর ম ন কম ট ক কম ট ইউন ট গঠন ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি নেতা রফিকুল হত্যাকাণ্ডে দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (মল্লিক) খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলীর যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বহিষ্কৃত তিন নেতা হলেন তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন (টোটন) ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক।

দর্শনা থানা বিএনপির প্যাডে লেখা বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ‘আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা গেছে, আপনি দলীয় গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে এবং দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনতন্ত্রের আলোকে এবং দলের স্বার্থ রক্ষার্থে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে দলীয় পদ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হলো এবং দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।’

আরও পড়ুনচুয়াডাঙ্গায় টিসিবির পণ্য নিয়ে বিরোধে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১০৮ মার্চ ২০২৫

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, তিতুদহে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খুনের পরিপ্রেক্ষিতে এই তিন নেতার নাম প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তৃণমূলের নেতাদের সম্মতিক্রমে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও যাঁদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাঁদের বিষয়েও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

রফিকুল ইসলাম মল্লিককে ৮ মার্চ বেলা ১১টায় প্রকাশ্য কুপিয়ে খুন করা হয়। টিসিবি ও ভিজিএফের কার্ড নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধে এ খুনের ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুনচুয়াডাঙ্গায় রফিকুলকে হত্যা করতে গোপন বৈঠক করেন বিএনপির দুই নেতা১৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি নেতা রফিকুল হত্যাকাণ্ডে দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার