পানামা খাল নিয়ে যুদ্ধের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
Published: 3rd, February 2025 GMT
বিশ্বের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথ পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের দৃঢ় অবস্থান ফের ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যদি খালের নিয়ন্ত্রণ না আসে, তাহলে সামনে ‘খুব শক্তিশালী কিছু একটা’ ঘটবে সেখানে।
রোববার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, চীন পানামা খাল পরিচালনা করছে। এই খাল আমরা চীনকে দিইনি, পানামাকে দিয়েছিলাম এবং সেটি ছিল একটি নির্বোধ সিদ্ধান্ত। আমরা সেই খাল ফের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনব এবং আনবই। যদি তা না ঘটে, তাহলে খুব শক্তিশালী কিছু একটা ঘটবে।
মধ্য আমেরিকার দেশ পানামা ভৌগোলিকভাবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত। ৭৫ হাজার ৪১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতেই রয়েছে পানামা খাল, যা মিসরের সুয়েজ খালের পর বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল উপযোগী বাণিজ্য পথ। প্রায় ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১১০ ফুট প্রশস্ত এই খালটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে।
পানামা খাল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূল অভিমুখে যাত্রাকারী যে কোনো জাহাজকে দক্ষিণ আমেরিকার কেইপ হর্ন হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার (৮ হাজার নটিক্যাল মাইল) পথ অতিক্রম করতে হতো। এ ছাড়া উত্তর আমেরিকার এক দিকের উপকূল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দিকের উপকূলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও পানামা খালের কারণে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার কম পথ পাড়ি দিতে হয়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রই পানামা খাল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে।
গত ২৩ ডিসেম্বর প্রথমবার পানামা খাল দখলের হুমকি দেন ট্রাম্প। সেদিন অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ওই খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ পানামা এবং তার জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল এবং সেটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বদান্যতা। কিছু শর্তে পানামার তৎকালীন সরকার রাজি হয়েছিল বলেই খালের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে পানামা যদি অবিলম্বে চীনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ওয়াশিংটন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোকে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পানামা খালে চীনের প্রভাবকে হুমকি হিসেবে দেখছেন।
পানামা সিটিতে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠকের পর মুলিনো জানিয়েছেন, তিনি চীন ও চীনা ব্যবসার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করবেন। তিনি পানামায় কিছু চীনা ব্যবসা, বিশেষ করে হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন হোল্ডিংসের ২৫ বছরের চুক্তি পর্যালোচনার ইঙ্গিত দেন। ২০২১ সালে নবায়ন হওয়া এই চুক্তির আওতায় কোম্পানিটি পানামা খালের উভয় প্রবেশদ্বারে বন্দর পরিচালনা করছে। এই চুক্তির ওপর একটি নিরীক্ষা চালানো হবে– বলেন তিনি। তিনি স্পষ্ট করেছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম জলপথের ওপর পানামার সার্বভৌমত্ব কোনো আলোচনার বিষয় নয়। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
মাসহ নিজের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিলেন জিকে শামীম
অবৈধ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় নিজের ও তার মা আয়েশা আক্তারের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম।
সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে তিনি এ সাক্ষ্য দেন । তবে এদিন সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়নি। আগামী ১৮ মার্চ অবশিষ্ট সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৫ মার্চ আত্মপক্ষ শুনানিতে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার চান।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য ছিলো। তবে জি কে শামীমের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করা হয়।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ