বর্তমান আইনশৃঙ্খলা প‌রি‌স্থি‌তি নি‌য়ে শতভাগ সন্তুষ্ট নয় ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) স‌চিবাল‌য়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সভা শেষে তি‌নি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা ব‌লেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমরা প্রথমে যেভাবে পেয়েছিলাম সেটা থেকে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। আরো উন্নতি হওয়ার অবকাশ রয়ে গেছে। এজন্য আমরা শতভাগ সন্তুষ্ট নই। এজন্য আমরা প্রতিনিয়তই চেষ্টা করছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো কীভাবে উন্নত করা যায়।”

সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে বলে মন্তব্য করে উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, “তারা (তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী) তো লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে। দিনের পর দিন কিন্তু তাদের এ দাবি-দাওয়া বেড়েই চলছে। এটার পেছনে কারা জড়িত সেটাও কিন্তু আপনারা জানেন, এটা কিন্তু আপনারা প্রচার করেন না।”

কারা জড়িত, আমরা তো জানি না আপনি বলেন-তখন উপদেষ্টা বলেন, “আমি কেন বলবো, আপনারা জানেন না? যেটা আপনারা জানেন, সেটা কেন আমি বলবো?”

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় কি জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা বলেন, এই অবস্থায় আমার কি করা উচিত? এটা শুধু আমার একার দায়িত্ব নয়, এটা দেশবাসী সবার দায়িত্ব। সচিব মহোদয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব) যা বলেছেন, সেটা আপনারা ভালোভাবে প্রকাশ করেন, জনগণই তাদের (তিতুমীরের শিক্ষার্থী) রেললাইন থেকে উঠিয়ে দেবে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আপনারা (সাংবাদিক) বলেন এই যে জনদুর্ভোগ হচ্ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের উপায় হচ্ছে তারা রেললাইন ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে তাদের কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-দাওয়া পেশ করুক। তারা যাতে জনগণকে দুর্ভোগ না দেয়। তারা যাতে প্রোপার কর্তৃপক্ষের কাছে যায়, রাস্তাটা যাতে ছেড়ে দেয়, জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি সৃষ্টি না হয়।”

একুশে ফেব্রুয়ারিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অন্যান্যবারের মতোই এবারও একুশে ফেব্রুয়ারির রাত ১২টার সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শহীদ মিনারে যাবেন। এরপর উপদেষ্টারা থাকবেন, অন্যান্য লোক যেন থাকবেন সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

এর আগে সোমবার বিকেল ৩টা ৪০মিনিটে রেললাইন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে মহাখালী থেকে উল্টোপথে ফিরে যায় ট্রেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

জাপার ইফতার মাহফিল পণ্ড, গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে গেলেন জি এম কাদের

রাজধানীর পল্লবীতে বাধার মুখে জাতীয় পার্টির (জাপা) ইফতার মাহফিল ভন্ডুল হয়ে গেছে। আজ শনিবার পল্লবী থানাসংলগ্ন দুই নম্বর কমিউনিটি সেন্টারে এই ইফতার মাহফিল হওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্লোগান দিয়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক ইফতার মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় পার্টি। ওই ইফতারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে পুলিশ এসে কমিউনিটি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ককে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর তত্ত্বাবধায়ক ফিরে আসেন। তখন পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর ২০-২৫ জন ছেলে এসে অশালীন স্লোগান দিয়ে ইফতার মাহফিলের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। উপস্থিত নেতা-কর্মীদের গালাগাল দিয়ে সেন্টার থেকে বের করে দেয়।’

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, যখন কমিউনিটি সেন্টারে গোলযোগ চলছিল, তখন জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের পথে ছিলেন। খবর শুনে তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে ফিরে যান।

অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষপাতদুষ্ট

এ ঘটনার তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জি এম কাদের। বিবৃতিতে তিনি বলেন,‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা মাঠে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে জাতীয় পার্টির দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। অনেকেই মামলা ও হামলার শিকার হয়ে কারাবাস করেছেন। এ ছাড়া বিগত সরকারের সব দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম। অথচ বর্তমান সরকার আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।’

জাতীয় পার্টিকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ক্ষেত্রেই পুলিশের সহযোগিতা চাওয়ার পরও পাওয়া যায়নি। এমনকি পরে থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে গেলেও দায়িত্বরত ব্যক্তিরা তা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আটক ব্যক্তিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।’

জাপার চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অনেক আগেই নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এই সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের আনুকূল্যে নতুন দলটি ক্ষমতার জন্য ভোটের মাঠে লড়াই করতে চাইবে। এমন বাস্তবতায় পক্ষপাতদুষ্ট অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই বোকামি। তা ছাড়া বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দৃষ্টে এ কথা বলা যায়, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যে শক্তি ও সামর্থ্য দরকার, তা এই সরকারের নেই।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, এভাবে বেশি দিন চলতে থাকলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্যাতন ও হেনস্তা করার যেন ছাড়পত্র পেয়ে গেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা: জি এম কাদের
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ঢাকায় ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ১৯৯
  • দেশে মবক্রেসি চলছে, জানমালের নিরাপত্তা নেই: জিএম কা‌দের
  • ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশ দিয়েছি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • বিশেষ অভিযানে এক মাসে সারাদেশে গ্রেপ্তার ৩৩,১৪১
  • জাপার ইফতার মাহফিল পণ্ড, গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে গেলেন জি এম কাদের
  • হিযবুত তাহরীরের মিছিল থেকে বেশ কয়েকজন আটক