শেখ হাসিনা এদেশে গণতন্ত্রকে আবারও হত্যা করতে চায় : টিপু
Published: 3rd, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগে আর রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে চায় না। কারণ তারা মানবাধিকার হত্যাকারী, মৌলিক অধিকার হত্যাকারী। তারা রাজনীতিকে বিশ্বাস করে না গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা এদেশে গণতন্ত্রকে আবারও হত্যা করতে চায়।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য প্রতিরোধ করতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিল শেষে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা সবাই থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লায় পাহারায় দিবেন। যাতে করে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ শ্রমিক লীগ কোন ধরনের অরাজগতা সৃষ্টি না করতে পারে। আর আপনারা তাদের নামের তালিকা আমাদের কাছে দিবেন আমরা প্রশাসনের কাছে দিব। কোনভাবেই দেশের মানুষের শান্তিকে বিনষ্ট করা যাবে না।
আর বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছে মানুষের পাশে থাকার জন্য আমরা এদেশের মানুষের পাশে থাকলে এবং দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করব।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ন র য়ণগঞ জ গণতন ত র ন র য়ণগঞ জ সদস য স রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা-ভাঙচুরে ১০ মামলা, গ্রেপ্তার ৭২
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে গত সোমবার বিক্ষোভ চলাকালে কয়েকটি শহরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাটের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ১০টি মামলা করা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে। এসব নিন্দনীয় কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরও মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৮টা নাগাদ এই ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৩ জন, সিলেটে ১৯, চট্টগ্রামে ৫, গাজীপুরে ৪, নারায়ণগঞ্জে ৪, কুমিল্লায় ৩ ও কক্সবাজারে ৪ জনকে।
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে কিছু দুর্বৃত্ত হামলা, লুট ও বিশৃঙ্খলা ঘটাতে পারে– এমন আগাম তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে ছিল না। ফলে প্রস্তুতি না থাকায় অনেক স্থানে কেএফসি, ডোমিনোজ, বাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নির্বিচারে হামলা হয়েছে। ‘মব’ সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা যাচ্ছে। হামলার শিকার অনেক প্রতিষ্ঠান গতকাল মঙ্গলবার বন্ধ করে রাখে কর্তৃপক্ষ। কোনো প্রতিষ্ঠানের সামনে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা।
এদিকে গেল সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ দপ্তর। মামলা হয়েছে একাধিক। গতকালও নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে কোকা-কোলার গুদামে হামলার চেষ্টাকালে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার জুতাসহ অন্য মালপত্র লুটপাটের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে নিন্দা জানান। গতকাল বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে। পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পুলিশের টহল বাড়ানোর কথা বলেছেন তারা।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা সমকালকে বলেন, পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না, এটি স্পষ্ট। দৃশ্যমান ছিল না প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এক ধরনের নির্লিপ্ততা দেখা গেছে। যখন বিনিয়োগ সম্মেলন চলছে, সে সময়ে এমন ঘটনা ভুল বার্তা যাবে। যে কেউ প্রতিবাদ জানাতে পারেন, তবে সেখানে সহিংসতা কেন হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক সমকালকে বলেন, মব তৈরি করে এ ধরনের হামলা ন্যক্কারজনক। সমাজ, সভ্যতা ও মানবিকতার নিরিখে আমরা যে প্রতিবাদ করতে পারি, এ ঘটনা তা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বড় জনসমাগমের ক্ষেত্রে আগামীতে পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। আয়োজকদের সঙ্গে আগে থেকে বৈঠক হওয়া উচিত। তাতে এক ধরনের প্রস্তুতি থাকে। আবার যারা এরই মধ্যে মব তৈরি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে এক ধরনের দোদুল্যমানতা দেখা যায়। তাই অনেকে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়ানোর সাহস দেখাচ্ছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েকটি স্থানে মব থেকে দোকান ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেককে ধরা হয়েছে। ভিডিও এবং ছবি দেখে অন্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। কেন এই নৈরাজ্য ঠেকানো গেল না– এমন প্রশ্নে পুলিশের মুখপাত্র বলেন, বিক্ষোভ থেকে তাৎক্ষণিক এটি হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের কর্মসূচিতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সতর্ক রয়েছি। তবে যারা আয়োজক, তাদের কর্মসূচি থেকে কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড হলে দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না তারা।
এদিকে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা এখানে লক্ষণীয়। উচিত ছিল আগে থেকেই এখানে সতর্কতা নিশ্চিত করা।
গতকাল এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বলেছে, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে যেসব উচ্ছৃঙ্খল যুবক বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে, তারা আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টদের দোসর।
এদিকে পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তার ও এ ধরনের লুটপাটের পুনরাবৃত্তি রোধে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। সাইবার ইউনিটসহ একাধিক টিম ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা থেকে ৩১, সিলেট ১৬, নারায়ণগঞ্জ ৪, গাজীপুর ৪, কুমিল্লা ৩, চট্টগ্রাম ১ ও কক্সবাজার থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, লুট করে নেওয়া জুতা বিক্রি করতে অনেকে ফেসবুকে ‘বিজ্ঞাপন’ দেন। সেই সূত্র ধরেই গতকাল কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর গতকাল যারা গ্রেপ্তার হন, তাদের অনেকে বয়সে তরুণ। স্বেচ্ছায় নাকি কারও ইন্ধনে তারা লুটপাটে অংশ নিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।