ঝিকরগাছায় মাথার চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৪
Published: 3rd, February 2025 GMT
যশোরের ঝিকরগাছায় মাথার চুল কেটে ও মুখে কালি মাখিয়ে এক নারীকে নির্যাতন করা হয়েছে। রবিবার (২ জানুয়ারি) রাতের ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেছেন। পরে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ বলে জানান ঝিকরগাছা থানার ওসি মো. বাবলুর রহমান খান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঝিকরগাছার বনেয়ালি কলাবাগানপাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা।
আরো পড়ুন:
অনলাইনে মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
নারায়ণগঞ্জে ২১ মামলার আসামি সাদ্দাম গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তার ছেলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একটি মেয়ের দুই বছর আগে বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর মেয়েটি একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলকে বিয়ে করেন। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছেলের সাবেক স্ত্রীকে দেখতে যান তিনি। এ সময় সাবেক পুত্রবধূর স্বামী শিমুল হোসেন, চাচি শারমিন আক্তার রুমি, চাচি শাশুড়ি রনি বেগম, মা রহিমা বেগমসহ ওই বাড়ির লোকজন মিলে ভুক্তভোগীর মাথার চুল কেটে দিয়ে মুখে কালি মাখিয়ে দেন। এ সময় তারা বাঁশের লাঠি দিয়েও তাকে মারধর করেন।
তিনি আরো জানান, শুধু মারধর করেই তারা থেমে থাকেননি। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে শিমুলের বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। কোথাও অভিযোগ করলে বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখান অভিযুক্তরা। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দেন। পরে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
গদখালি ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, “শুনেছি, তাবিজ-কবজ (যাদু টোনা) সন্দেহে এক নারীকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। এভাবে একজন মানুষকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে।”
ঝিকরগাছা থানার ওসি মো.
ঢাকা/রিটন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সরাইলে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে বসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরকান্দা গ্রামের আমীর আলীর বংশ এবং চান্দের বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে চান্দের বংশের শাহনেওয়াজ নামের এক তরুণের সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা চুরি হয়। এ জন্য চান্দের বংশের লোকজন আমীর আলীকে দায়ী করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে যান ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, থানার ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনও, ওসি এবং সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন, সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান চৌধুরী, এএসআই আলা উদ্দীন, পুলিশ সদস্য আবদুল কুদ্দুস ও মশিউর রহমান ইটের আঘাতে আহত হন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ রাতে চারজনকে আটক করে।
ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আমীর আলীর পক্ষের লোকজন চান্দের বংশের অন্তত ১০টি বতসবাড়ি ও একটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এ ছাড়া শাহজাহান মিয়ার বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি ঘর।
সরাইল থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত আলী মিয়া (৪০) ও কানু মিয়াকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি চান্দের বংশের পক্ষের। আহত অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতের ঘটনায় আমরা ইটের আঘাতে ব্যথা পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রামের অবস্থা শান্ত রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ইউএনও মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। রাতের অন্ধকারে ইটের আঘাত পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটি হতেই পারে। তবে সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। কথায় কথায় সংঘর্ষে জড়ানো যাবে না। আমি চাই এখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করুক।’