রাজশাহীতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে জেলার পবা উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। যারা এ ঘটনা ঘটায়, তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছিলেন বলে জানান স্থানীয় যুবদলের এক নেতা। ওই যুবদল নেতা তার লোকজন নিয়ে দরপত্র দাখিল করতে গিয়ে বাধা পান।

পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় জানিয়েছে, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য গত পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলায়।

সেখানে একপক্ষ আরেকপক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়। এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামে সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন। শাকিলুর রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শাকিলুর রহমান জেলা যুবদলের একজন যুগ্ম আহ্বায়কের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন। জেলা যুবদলের ওই নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে এলেই প্রথমে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এরপরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।
 
ওই যুবদল নেতা বলেন, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ এবং টেন্ডার বাক্স থেকে দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন।

ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান। পুলিশ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছিল।

রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিষয়টি নিয়ে পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, দরপত্র জমাদানের সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে বেশ কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুপক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় দরপত্র বাক্স ভেঙে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

এখন দরপত্রের কী হবে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, সাধারণত দরপত্র জমাদানের একাধিক সময় নির্ধারণ করা থাকে। আগামী তারিখ আছে ৬ ও ৭ এপ্রিল। ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল হবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দরপত র ল ট য বদল র ককট ল র ল ট কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনও’র কর্মচারীকে মারধর, যশোরে যুবদলের আহ্বায়ককে বহিষ্কার

ওএমএসের ডিলার নিয়োগকে কেন্দ্র করে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক শাহীন আলমকে মারধর করায় দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন অভিযুক্ত উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম। 

শুক্রবার (৭ মার্চ) কেন্দ্রীয় যুবদলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে এ বহিষ্কারাদেশ পাঠানো হয়েছে।

যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইঞা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “পেশীশক্তি প্রদর্শনপূর্বক প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর সাথে অসদাচারণের মাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলামকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, “বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের কোন অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। তার সাথে যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন ইতিমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।”

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করে ভুক্তভোগী শাহীন আলম জানান, বুধবার (৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউএনও কার্যালয়সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে তাকে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মানববন্ধনে ইউএনও নিশাত তামান্না, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুমসহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন।

মনিরাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘‘শাহীন আলমকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদে কর্মরত সবাই একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করেছি। আমরা সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য হয়রানিমুক্ত সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ দাবি করছি।”

এদিকে, শাহীন আলমকে মারধরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মণিরামপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রিপন সরদারকেও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মণিরামপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কামরুল গাজী ও সদস্যসচিব মাসুদ গাজী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে নিলামের টাকা আত্মসাত করল বিএনপি নেতা
  • রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদকে অব্যাহতি
  • ভারতীয় কারাগারে বন্দি বাংলাদেশির মৃত্যু
  • ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় ৩ দিনের ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’
  • ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের ঝোপ থেকে নবজাতক উদ্ধার, দত্তক নিতে চান ইউএনও
  • হালুয়াঘাটে ৬৫০ টাকায় মিলছে গরুর মাংস, খুশি ক্রেতারা
  • ইউএনও’র কর্মচারীকে মারধর, যশোরে যুবদলের আহ্বায়ককে বহিষ্কার
  • মসজিদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
  • মসজিদের চাল আত্মসাৎ, প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতার মারধরে আহত ৫