রাজশাহীর পবায় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। এসময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামে সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার পবা উপজেলা পরিষদে ঘটনাটি ঘটে বলে জানান পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ।

এদিকে, যুবদলের এক নেতা দরপত্র দাখিল করতে গিয়ে বাধা পান বলে অভিযোগ করেছেন। জেলা যুবদলের ওই নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলেও জানান।

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে বোমা বিস্ফোরণে আহত যুবকের মৃত্যু

ঝিনাইদহে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ২

আহত শাকিলুর রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তিনি জেলা যুবদলের একজন যুগ্ম-আহ্বায়কের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় জানিয়েছে, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আজ ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনও’র কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে একপক্ষ অপর পক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়। এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করার ঘটনাটি ঘটে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবদলের নেতা বলেন, “মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে গেলে প্রথমে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এরপরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।”

হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও ছাত্রশিবিরের সাবেক এক নেতার নাম জানান।

যোগাযোগ করা হলে সাবেক ওই শিবির নেতাও নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলে জানান। তবে তিনি বলেন, “আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম তা ঠিক। তবে এই দরপত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা যুবদল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।”

ঘটনার পর দুই পক্ষ চলে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। 

রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ওসি মাসুমা মোস্তারিন বলেন, “গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, “দরপত্র জমাদানের সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় বাক্স ভেঙে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে গেছে কে বা কারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

এখন দরপত্রের কী হবে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, “সাধারণত দরপত্র জমাদানের একাধিক সময় নির্ধারণ করা থাকে। আগামী তারিখ আছে ৬ ও ৭ এপ্রিল। ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল হবে না।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও দরপত র ল ট য বদল র ককট ল র ল ট কর র ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মন্ত্রণালয়ে আটকা চার লেনের উদ্যোগ, যানজটে ভোগান্তি

সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দুটি স্থানে চার লেন করার প্রকল্প প্রস্তাবনা এক বছর ধরে আটকে আছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। এতে একদিকে সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ, অন্যদিকে যানজট বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সুনামগঞ্জবাসী। এ ছাড়া মাত্র ২৪ ফুট প্রশস্ত এই সড়ক ঘেঁষে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় চলাচলে ভোগান্তির শিকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। 
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ শহর থেকে সড়কপথে ওয়েজখালী পর্যন্ত যেতে শান্তিগঞ্জ, পাগলা ও জাউয়াবাজার এলাকায় যানজটে মহাদুর্ভোগে পড়েন যাতায়াতকারীরা। ২৫ লাখ মানুষের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস, কার ও ট্রাক মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ গাড়ি প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানবাহনের সংখ্যাই ৫ হাজারের বেশি হবে। অথচ কেবল জেলা শহরের ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে গেল বছরের জুলাই মাসে দরপত্র আহ্বান করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে ওয়েজখালী পার হয়ে পৌর কলেজ পর্যন্ত এবং উজানীগাঁও থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর পার হয়ে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চার লেন সড়ক করার উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। দরপত্র গ্রহণের পর তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা এখনও হয়নি। 
পরিবহন মালিক-শ্রমিক সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় ৫০০ গাড়ি প্রতিদিন সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে চলাচল করছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করছে আন্তঃজেলা ৮০টি বাস। এসব বাস ছাতক ও দিরাই থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ পথ দিয়েই যাওয়া-আসা করে। সব মিলিয়ে আন্তঃজেলা বাসের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যাবে। এ ছাড়া পুরো জেলায় কার, মাইক্রোবাস, হাইয়েস আছে প্রায় ৫০০। একশোর মতো ট্রাক আছে, যেগুলোর যাতায়াত একই পথে। জেলাটিতে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। যার বেশির ভাগই চলছে এই সড়কে। জেলায় লেগুনা আছে প্রায় ২০০টির মতো। ফলে সড়কটি এত যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না। 
সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম বলেন, ৬৫ কিলোমিটার পথ আরও ২০ বছর আগে বাসে যাতায়াত করতে সময় লাগত সোয়া ঘণ্টা। যানজটের কারণে লাগে পৌঁনে দুই ঘণ্টা।  
জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়ার বক্তব্য, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ককে দ্রুত চার লেনে উন্নীত করতে হবে। সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়কেও চার লেন জরুরি। 
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বললেন, চার লেন করার দরপত্র হয়েছিল সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে। কিন্তু তা এখনও সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দরপত্র লুটের ঘটনায় মামলা, আসামি অজ্ঞাত
  • তৃতীয়বারের মতো গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ৭ ইটভাটা
  • গুলি-ককটেল ফাটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট
  • শাপলার মেডিকেল কলেজে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন ইউএনও
  • স্লোগান দিয়ে-গুলি ছুঁড়ে টেন্ডার বাক্স লুট
  • মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে যুবক আহত
  • ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিয়ে টেন্ডার বাক্স লুট
  • মন্ত্রণালয়ে আটকা চার লেনের উদ্যোগ, যানজটে ভোগান্তি
  • মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া রাকিবুলের পাশে এবার সাঁথিয়ার ইউএনও