যশোরের শার্শায় মিষ্টি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় বাকপ্রতিবন্ধী এক কিশোরী (১৪) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে ভয় দেখিয়ে গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে আবু তালেব (৬০) নামে ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে আজ সোমবার শার্শা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আবু তালেব উপজেলার বসতপুর কলোনি গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। তবে ভুক্তভোগী কিশোরীর গ্রামে ঘরজামাই থাকেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী। কিশোরী ঘরজামাই আবু তালেবের বাড়িতে প্রায় যাতায়াত করত। এই সুযোগে মিষ্টি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে ওই বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ডেকে ধর্ষণ করতেন আবু তালেব। একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার বাবা-মা বিষয়টি স্থানীয় ব্যক্তিদের জানান এবং বিচার চান। কিন্তু বিচার না করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই কিশোরীর বাবা-মাকে ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে। পরে গোগা বাজারের পল্লী চিকিৎসক রেজার স্ত্রীর সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে গর্ভপাত করানো হয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, ‘কিছুদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখা দেওয়ায় সন্দেহ হয়। পরে তাকে স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করে রিপোর্টে দেখা যায় সে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে বিষয়টি মেয়ের কাছে জানতে চাইলে সে ইশারায় আবু তালেবের নাম বলে কেঁদে ওঠে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

শার্শা থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে উদ্ধার করে সোমবার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য যশোর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তারেক রহমানের নির্দেশে ‘চালক দলের’ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর গুলশানের বাসায় তল্লাশির নামে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জাতীয়তাবাদী চালক দল কেন্দ্রীয় কমিটির স্বঘোষিত সভাপতি জুয়েল খন্দকারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হামলা-লুটপাটের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহর আদালতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইলতুৎমিস সওদাগর অ্যানি মামলার আবেদন করেন।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

জুয়েল খন্দকারের পাশাপাশি তার সহযোগী শাকিল খন্দকার ও জসিম উদ্দিনকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে। তারা তিনজনই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খোরশেদ আলম বলেন, কথিত জাতীয়তাবাদী চালক দলের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতি করার অভিযোগে মামলার আবেদন করি। আদালত মামলাটি গুলশান থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কথিত জাতীয়তাবাদী দলের নামে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে অবগত হওয়ার পর দলীয় সিদ্ধান্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী চালক দল নামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কোনো অঙ্গসংগঠন নেই। আসামিরা গত ৪ মার্চ তাদের মনগড়া কাহিনী তৈরি করে প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর বাসায় অনধিকার ও বেআইনি অনুপ্রবেশ করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। এ খবর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

আসামিরা একটি ভুয়া সংগঠন জাতীয়তাবাদী চালক দল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করে এই ব্যানারে তারা বিভিন্ন জায়গায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও লুটপাট চালাতে থাকে। প্রতারণামূলকভাবে ভুয়া দল সৃষ্টি করে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তৎপর এই স্বঘোষিত ভুয়া দল। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের পরামর্শে এই মামলা দায়ের করা হল।

এর আগে গত ৪ মার্চ রাতে এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর গুলশানের বাসায় ১৫ জন আকস্মিকভাবে বে-আইনি জনতাবদ্ধভাবে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করে। এ সময় আসামিরা আলমারি ভেঙে ২টি স্বর্ণের চেইন ও ১টি স্বর্ণের পায়েল, ১টি হাতের আংটিসহ মোট ২ ভরি আট আনা স্বর্ণ নেন। যার মূল্য ৩ লাখ টাকা। ওই ঘটনায় ওই বাসার কেয়ারটেকার আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ