রাজধানীর মহাখালী রেলক্রসিংয়ে রেললাইন অবরোধ করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রেলক্রসিংয়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন করছেন।

এর আগে দুপুর ৩টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তিতুমীর কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে মহাখালীর আমতলী মোড়ের দিকে অগ্রসর হন। এ সময় তিনজন অনশনকারী শিক্ষার্থীকেও হুইলচেয়ারে করে নেওয়া হয়। মিছিলে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল।

অবরোধের পর শিক্ষার্থী আলী আহাম্মেদ মাইকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বা শিক্ষা উপদেষ্টাকে এখানে এসে তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিতে হবে। না হলে আমরা রেললাইন ছাড়ব না। আমাদের এইটাই দাবি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। রাষ্ট্র আমাদের এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে।

মিছিলটি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে। মিছিলকারীদের সঙ্গে থাকা অনশনকারী শিক্ষার্থীরা প্রথমে রেললাইনে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলনকারীরা রেলপথ অবরোধ করেন। এ সময় কমলাপুরের দিক থেকে একটি ট্রেন আসতে দেখলে শিক্ষার্থীরা ট্রেনটি লাল নিশানা দেখিয়ে থামান।

এর আগে বেলা ১১টার পর টানা পঞ্চম দিনের মতো কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সড়কের উভয় পাশে বাঁশ দিয়ে অবরোধ তৈরি করে অবস্থান নেন। মহাখালী রেলক্রসিংয়ে ডিএমপি পুলিশের পাশাপাশি রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরাও রয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র লপথ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধীদের আমৃত্যু গণঅনশন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন অনশনকারীরা। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৫টা) তাদের অনশনরত অবস্থায় দেখা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অনশনকারীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জাবির আটজন শিক্ষার্থী গণঅনশন পালন করছেন।

অনশনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের নাজমুল ইসলাম  লিমন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের নাহিদ হোসেন ইমন, মার্কেটিং বিভাগের ৫০তম ব্যাচের মোহাম্মদ রায়হান, গণিত বিভাগের ৫০তম ব্যাচের গালিব হোসেন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫১তম ব্যাচের নাদিয়া রহমান অন্বেষা, ইংরেজি বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের মোহাম্মদ আলী চিশতি, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৫১তম ব্যাচের মেহরাব তূর্য, আইন ও বিচার বিভাগের ৫১তম ব্যাচের জাইবা জাফরিন এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুয়িদ মুহম্মদ ফাহিম।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কার করা। সেজন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে, যা হতাশা ও লজ্জার বিষয়।

তারা আরো বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরীব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তান। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের আমৃত্যু অনশনে বসা।

অনশনরত ইংরেজি বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, “দেশের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু এ বৈষম্যমূলক পোষ্য কোটার কারণে অনেকে নামমাত্র নাম্বার পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ফলে মেধাবীরা তাদের যোগ্য স্থান হারায়।”

তিনি বলেন, “এর জন্য আমরা জাতি হিসেবেও পিছিয়ে পড়ছি। আমরা চাই, এ ধরনের অযৌক্তিক কোটা নিপাত যাক। মেধাবীরা তাদের মেধার ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ পাক এবং তাদের মেধা দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করুক।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদ হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি রয়েছে, তা গোড়া থেকে উপড়ে দিতে আমরা অনশনে বসেছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল— মেধা দিয়েই আমাদের মূল্য যাচাই হবে, কোনো কোটা দিয়ে নয়।”

তিনি বলেন, “কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এমন অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি জাবিতে বিদ্যমান থাকা আমাদের জন্য লজ্জার। এমনকি আমাদের ভাইবোনদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনের জন্যও লজ্জার। অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সংগঠক মোহাম্মদ রায়হান বলেন, “জুলাইয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অসংখ্য ভাইবোন শহীদ হয়েছেন। এত রক্ত কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য দেওয়া হলো। এরপরও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা রয়ে গেছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার  ও হতাশার বিষয়।”

তিনি বলেন, “অযৌক্তিক এ কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরীব কৃষক, শ্রমিকের সন্তান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমরা আমৃত্যু গণঅনশনে বসেছি।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধীদের আমৃত্যু গণঅনশন
  • পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে জাবিতে আমরণ অনশন