লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। সোমবার সকালে জেলা শহরের পৃথক স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা পাটওয়ারী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন বাবরসহ রামগতি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেজ মোল্লা, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাছ উদ্দিন, সাবেক যুবলীগ নেতা পরান চৌধুরী ও মোহাম্মদ রবি ইসলাম। গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা ও রামগতি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর আদালত পাড়ায় লিফলেট বিতরণের সময় জনতার হাতে আটক পরান চৌধুরীকে সাদ আল আফরান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়া অপর আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হুদা পাটওয়ারী, জহির উদ্দিন বাবর, ওয়ারেছ মোল্লা ও আব্বাছ উদ্দিনকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সাদ আল আফরান হত্যা ও মোহাম্মদ রবি ইসলামকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আবদুল মোন্নাফ বলেন, চার আগস্ট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, সাদ আল আফরান হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৬ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকালে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, ৪ আগস্ট দুপুরে শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় কলেজ শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান গুলিতে মারা যায়। এ সময় দুই শতাধিক ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ৩০০ জন। এসব ঘটনায় দুইটি হত্যাসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। আর এসব মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত শ ক ষ র থ দ র ওপর গ র প ত র কর স দ আল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মুখ ও চোয়ালের ব্যথা

মুখ ও চোয়ালের (ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল) ব্যথা নানা কারণে হতে পারে। এই ব্যথা অনেক সময় সাধারণ অসুবিধা থেকে শুরু করে গুরুতর শারীরিক সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তবে মুখ ও এর আশপাশে ব্যথা খুবই অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক। অনেক সময় এতে খাবার গ্রহণ ও পুষ্টিতে সমস্যা হয়।

দাঁতের ব্যথা: দাঁতের ব্যথা সাধারণত ক্যাভিটি, মাড়ি সংক্রমণ বা দাঁতের ক্ষয় থেকে সৃষ্টি হয়। দাঁতের সঠিক যত্ন না নিলে এটি ক্রমে বাড়তে পারে এবং সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। দাঁতের কারণে সৃষ্ট ব্যথা গাল, চোয়াল, গলা এমনকি মাথা পর্যন্ত ছড়াতে পারে। তাই মুখ ও এর আশপাশে ব্যথা হলে দাঁতে কোনো সমস্যা আছে কি না, তা প্রথমে পরীক্ষা করা জরুরি।

চোয়ালের বা গালের ওপর দিকে আছে প্যারেটিড গ্রন্থি। এই গ্রন্থিতে অনেক সময় প্রদাহ ও সংক্রমণ হতে পারে। তখন মুখ-চোয়ালজুড়ে ব্যথা হয়।

চোয়ালের ব্যথা: চোয়ালের সন্ধির নাম টেমপোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট। চোয়ালের ব্যথা তাই সাধারণত এই টেমপোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টের (টিএমজে) সমস্যার কারণে হয়। অতিরিক্ত চাপ, দাঁত ঘষা বা চোয়ালের মাংসপেশির সমস্যার কারণে এটি দেখা দিতে পারে। আবার কিছু বাতরোগের কারণেও এই সন্ধিতে প্রদাহ হতে পারে।

মুখের ভেতরে ঘা: মুখের ভেতরে ঘা, ক্ষত বা আলসার এবং সংক্রমণ থেকে মুখগহ্বরে জ্বালা ও ব্যথা হতে পারে। এটি তীব্র অ্যাসিডিক বা গরম খাবারের কারণে হতে পারে। আবার নানা রকম জটিল রোগেও মুখে ঘা হয়।

ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া: এতে মারাত্মক ব্যথা হয়, যা মুখ ও চোয়ালের স্নায়ু ট্রাইজেমিনাল নার্ভের প্রদাহ বা চাপের কারণে হয়। এটি তীক্ষ্ণ, তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। মুখ নাড়লে যেমন টুথব্রাশ করতে গেলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।

মাড়ির সমস্যা: মাড়ির রোগ যেমন জিঞ্জিভাইটিস বা পেরিওডন্টাইটিস, মাড়িতে ব্যথা ও রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে।

গ্ল্যান্ডের ব্যথা: চোয়ালের বা গালের ওপর দিকে আছে প্যারেটিড গ্রন্থি। এই গ্রন্থিতে অনেক সময় প্রদাহ ও সংক্রমণ হতে পারে। তখন মুখ-চোয়ালজুড়ে ব্যথা হয়। এর একটি পরিচিত উদাহরণ মাম্পস। এই ভাইরাসের সংক্রমণে প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে যায় ও তীব্র ব্যথা হয়। মুখ হাঁ করতেও কষ্ট হয়।

প্রতিকার ও পরামর্শ

মুখ, মাড়ি, দাঁত বা হাড়ের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। দাঁতের সঠিক যত্ন, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত মুখ পরিষ্কার রাখা এবং স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। জটিল ক্ষেত্রে ডেন্টিস্ট বা ওরাল ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মুখ ও চোয়াল এবং আশপাশের ব্যথা অবহেলা করলে এটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় রূপ নিতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ডা. জেবিন জান্নাত জুঁই: ডেন্টাল ইউনিট, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ