মৃত্যুর ৪ মাস পর দাফন করা হচ্ছে হিজবুল্লাহ নেতা নাসরাল্লাহকে
Published: 3rd, February 2025 GMT
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহর জানাজা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বর্তমান প্রধান নাইম কাসেম।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নাসরাল্লাহ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বরে বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন।
রবিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিতে এক ভাষণে তার উত্তরসূরী নাঈম কাসেম বলেন, “নাসরাল্লাহ এমন এক সময় নিহত হন যখন পরিস্থিতি কঠিন ছিল। যার ফলে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাকে অস্থায়ীভাবে দাফন করা হয়।”
কাসেম জানান, তারা এখন নাসরাল্লাহ এবং নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর ইসরায়েলি হামলায় নিহত হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ নেতা হাসেম সাফিয়েদ্দিনের জন্য ‘বৃহৎ জনসমাগমের মাধ্যমে’ বড় আকারে জানাজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং মর্যাদার সঙ্গে পুনরায় দাফন সম্পন্ন হবে।
কাসেম প্রথমবারের নিশ্চিত করেন, নাসরাল্লাহর উত্তরসূরি হিসেবে সাফিয়েদ্দিন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই তিনি নিহত হন। তাই সাফিয়েদ্দিনকেও হিজবুল্লাহর মহাসচিব উপাধি দিয়ে দাফন করা হবে।
তিনি বলেন, “নাসরাল্লাহকে রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে পুরোনো ও নতুন বিমানবন্দরের মধ্যবর্তী এলাকায় দাফন করা হবে। আর সাফিয়েদ্দিনকে সমাহিত করা হবে তার নিজ শহর দেইর কানুনে।”
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। ওই হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। এরপর অক্টোবর শেষ দিকে উপ-প্রধান নাঈম কাসেমকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করে হিজবুল্লাহ।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দুই পানি শোধনাগার প্রকল্প ১০ বছর ধরে আটকা, প্রধান উপদেষ্টার বিস্ময়
‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের ফেজ-৩’ ও ‘মেঘনা নদী রক্ষায় মহাপরিকল্পনা’ প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে রবিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রকল্প দুটির কাজ ১০ বছর ধরে আটকে থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘‘এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প প্রায় ১০ বছর ধরে আটকে আছে! অথচ ঢাকা শহরের মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। ভূ–গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে দিন দিন আমরা পরিবেশকে বিরাট হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছি। সংকট থেকে উত্তরণের রাস্তা থাকা সত্ত্বেও সে কাজটা এত বছর ধরে করা হয়নি।’’
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ঢাকা ওয়াসা, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
এ সময় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের কাছে এই প্রকল্প দুটি শুরু করতে কোথায় বাধা রয়েছে তা জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর পাশাপাশি খরচ কমানোর বিষয়েও আলোচনা করেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা শহরে মোট পানি সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে আসে। দীর্ঘদিন ধরে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর প্রতি বছর ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে; যা টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং ভবিষ্যতে বড় রকমের বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করছে।
এ সংকট মোকাবিলায় মেঘনা নদী থেকে সরবরাহকৃত পানি ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-৩) ’–এ পরিশোধন করে ঢাকা শহরে বসবাসকারীদের জন্য টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ‘মেঘনা নদী রক্ষা মহাপরিকল্পনা’ নেওয়া হয়।
জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ প্রকল্পে সহায়তা করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থা ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যহত রাখবে এবং প্রয়োজনে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মেঘনা নদী রক্ষায় মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১০ বছর আগে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। পরিকল্পনার কাজটি সম্পন্ন হলেও বাস্তবায়নের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
ঢাকার পাশে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী দূষণের কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, বাংলাদেশের অন্য নদীগুলোও বিভিন্ন রকমের সংকটে রয়েছে। এ অবস্থায় মেঘনা নদীকে রক্ষা করা সরকারের অগ্রাধিকার বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘‘মেঘনা নদী নিয়ে অনেক উৎকণ্ঠা। এটাকে বাঁচানোর জন্য আমাদের দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। বাংলাদেশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করার সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। তা না হলে এ এলাকার জনজীবন বাঁচানো যাবে না।’’
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অতি দ্রুত দাপ্তরিক কাজ শেষ করে চলতি অর্থবছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এর পাশাপাশি, নদী রক্ষা কমিশনকে কীভাবে আরো সক্রিয় করা যেতে পারে এবং পরিবেশ অধিদপ্তর ও নদী রক্ষা কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করেন তিনি।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ