সাতকানিয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চার বাড়িতে ডাকাতি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট
Published: 3rd, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চারটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতদের হামলায় দুই গৃহবধূ আহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হাতিয়ারকুল কুদ্দুস সওদাগর বাড়ি এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী ও হাফপ্যান্ট পরিহিত ২৫-৩০ জনের একদল ডাকাত প্রথমে আব্দুল জব্বারের বসতঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে তারা নগদ ৩০ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দেড় হাজার সৌদি রিয়াল, পাঁচটি মোবাইল ফোন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লুট করে।
এরপর ডাকাত দল একই কায়দায় পার্শ্ববর্তী মৃত খায়ের আহমদ, নুর আহমদ এবং মৃত আলী আহমদের ঘরে হানা দেয়। এসব বাড়ি থেকে তারা তিনটি মোবাইল ফোন, প্রায় তিন ভরি স্বর্ণালংকার, প্রায় এক লাখ টাকা এবং মূল্যবান সামগ্রীসহ ছয় লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
ডাকাত দলের হামলায় আহত হয়েছেন সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বেবী আক্তার এবং মৃত খায়ের আহমেদের স্ত্রী খতিজা আক্তার।
বেবী আক্তার জানান, ডাকাত দল দরজা ভেঙে ৭-৮ জন আমার ঘরে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে। তারা স্বর্ণালংকার ও টাকা দিতে বলে। আমি আপত্তি করলে লোহার খুন্তি দিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। তারা কানের দুল, শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার, আলমারিতে রাখা প্রায় ৫০ হাজার টাকা এবং ২৬ হাজার টাকা দিয়ে নতুন কেনা একটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা আমার কানের দুল খুলে নেওয়ার সময় ডান কানের লতি পুরোপুরি ছিঁড়ে যায় এবং বাম কানের লতির একটি অংশ ছিঁড়ে যায়।
এছাড়া, মৃত খায়ের আহমেদের স্ত্রী খতিজা আক্তারকেও লোহার খুন্তি দিয়ে মারধর করে আহত করা হয় বলে জানা গেছে।
নুর আহমদের ছেলে ও ঢাকায় কর্মরত মো.
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মুন্নাফ জানান, ‘‘ডাকাতির ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’’
এই ডাকাতির ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ইজতেমার জন্য কর্মসূচি শিথিল করলেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
বিশ্ব ইজতেমার কথা বিবেচনা করে ‘ব্লকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি শিথিল করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে থাকা ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আলি আহমদ।
তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ছিল। এতে সারা দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন। তাই তাদের কথা চিন্তা করে আমরা শুধু আজকের জন্য আমরা রেলপথ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ের ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু নর্থ সিটির ভেতরে অন্য সড়কগুলোতে ব্লকেড কর্মসূচি চলমান থাকবে।
আলি আহমদ বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি গত ২৮ বছরের। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে গঠিত সরকারের কাছে নতুন করে দাবি পূরণের আবদার করেছি। এজন্য যতগুলো মাধ্যম ছিল সবগুলো মাধ্যমেই আমরা দাবি জানিয়েছি। সেখান থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে সর্বশেষ আমরা অনশন কর্মসূচি দেই। আজ অনশনের পঞ্চম দিনে এসেই রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দেয়নি। এখন আমাদের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী দেখছে তাদের ভাইয়েরা এখানে অনশন করে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছে না। তাই তারা আল্টিমেটাম দিয়েছে ব্লকেড টু ঢাকা নর্থ সিটি।
তিতুমীর কলেজে কেন আন্দোলন-অনশন
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
যদিও পরদিন বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় আইন এবং জার্নালিজম বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।