শেখ হাসিনা তার বর্বর শাসন ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আন্দোলন দমানোর জন্য অথবা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বানচালের জন্য গুলির ব্যবহার চির দিনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাদের নিয়ে শহীদ জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা পুলিশ দিয়ে, পুলিশের শটগান দিয়ে গুলি করে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছেন, এদেশে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন ও আইনের শাসন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। শেখ হাসিনার মতো বর্বর শাসন আর এ দেশে আনা যাবে না। কিন্তু আবারও শেখ হাসিনা তার বর্বর শাসন ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের ভেতর নানা উস্কানি দিচ্ছেন ও নানা ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি জনগণের সাড়া না পেয়ে অনলাইনে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, কোথায় আপনার যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসীবাহিনী। যারা পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। শিশুদের হত্যা করেছে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। দেশের মানুষ আর আপনাদের মেনে নেবে না। তারা চায় সব অপকর্মে আপনাদের বিচার হোক। 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এমন সংস্কার করতে হবে, আর কোনদিন যেন কোনো রক্তচক্ষু মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে না নিতে পারে। 

তিনি বলেন, আমাদের কিছু কিছু উপদেষ্টা আছেন, সরকারের সমালোচনা করলে তারা বিরক্ত হন, বিভিন্ন মন্তব্য করেন। সমালোচনা সহ্য করতে না পারলে উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দিয়ে রাজনৈতিক দল করেন। আজকে যদি চালের দাম বাড়ে আমরা সমালোচনা করবো না। আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে কথা বলতে পারবো না, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলতে পারবো না?

রিজভী আরও বলেন, এখনও বাজার সিন্ডিকেট সক্রিয়, সিন্ডিকেট দমনে সরকারের আন্তরিকতা দেখছি না। আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে না, দেশে চুরি ডাকাতি ও হত্যা বেড়ে গেছে। দ্রুত এসব নিয়ে ব্যস্থা নিতে হবে। আমরা চাই, আগামী দিনের গণতন্ত্রের সত্যিকার মুক্ত পরিবেশ, যেখানে নির্ভয়ে কথা বলা যাবে এবং সভা ও সমাবেশ করা যাবে।

এ সময় মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সিনহা, সদস্যসচিব মহিউদ্দিন আহমেদসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার যে কোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এ বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল সোমবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

ড. ইউনূস আরও বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের অবশ্যই একটি কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদরদপ্তর স্থাপন করতে হবে, যা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।

তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে। দেশবাসীকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, সবাইকে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের মানবাধিকার সুরক্ষার নির্দেশ দেন এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যদি আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে না পারি, তাহলে বৈশ্বিক ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে আমাদের সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হতে হবে।
পুলিশকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এমনভাবে অভিযান পরিচালনা করতে হবে, যাতে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যায়।

পুলিশপ্রধান বাহারুল আলম জানান, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা পর্যবেক্ষণের জন্য ১০টি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে এই মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, বাংলাদেশ ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানিয়েছে। আশা করি, শিগগির সাড়া পাব।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, পুলিশের কড়া নিরাপত্তার কারণে রাজধানীতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

অনলাইনে মামলার ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ
সরাসরি থানায় না গিয়ে মানুষ যাতে অনলাইনে মামলা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
বর্তমানে নিকটস্থ কোনো থানায় গিয়ে এফআইআর (প্রাথমিক তথ্য বিবরণী) দাখিল করতে হয়। এই প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ এবং এর ফলে নানা হয়রানির সুযোগ থাকে।
ড. ইউনূস বলেন, পুলিশের একটি নম্বর নির্ধারণ করা উচিত, যেমন-৯৯৯। যার মাধ্যমে দেশের যে কোনো স্থান থেকে অভিযোগকারী এফআইআর করতে পারেন। এটি মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে ঝামেলা কমাবে।

সভায় পুলিশপ্রধানকে যত দ্রুত সম্ভব অনলাইনে এফআইআর  দায়েরের জন্য একটি নতুন ফোন নম্বর চালুর নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পুলিশের একটি বিশেষ কল সেন্টার এ জন্য স্থাপন করা উচিত, যারা অনলাইনে মামলা করতে সমস্যায় পড়বেন, তারা সহজে এই কল সেন্টার থেকে সহায়তা নিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিএমপি, কোস্টগার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ জগতে মেরূকরণ, হত্যা হামলা বেড়েছে খুলনায়
  • বিদেশে পালাতে চেয়েছিলেন শফিকুর!
  • যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না: প্রধান উপদেষ্টা
  • কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কমান্ড সেন্টার গঠনের নির্দেশ
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস রাজশাহীর কর্ণধারের
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রাজশাহীর কর্ণধার, বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস
  • তিতুমীর শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ: সতর্ক অবস্থানে পুলিশ