মহার্ঘ ভাতা প্রদানসহ ৭ দফা দাবিতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ফেডারেশনের চেয়ারম্যান মো.

সেলিম মিয়া।

সাত দাবি হলো- পে-কমিশন গঠন করে বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল ঘোষণার মাধ্যমে বেতনবৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নূন্যতম ৬ হাজার টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে; যেসব কর্মচারী নিজ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে, তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে; বৈষম্যহীন এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি এবং আপগ্রেডেশন বা পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। আপগ্রেডেশন বা পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদিত আপগ্রেডেশন বা পদোন্নতি নীতিমালা পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্লক পোস্ট নিয়মিতকরণসহ শতভাগ আপগ্রেডেশন বা পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।

এছাড়া সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো সর্বোচ্চ বয়স ৬৫ বছর করতে হবে ও সব পাবলিক, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ এবং কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব-স্ব বেসিক সংগঠনের প্রতিনিধিদেরকে কমিটিতে রাখতে হবে; বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সব ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকুরিজীবীদের রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্যমূল্যে সরকারিভাবে পণ্য সরবরাহ করতে হবে; সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের গ্রাচ্যুয়িটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি বা আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের জায়গায় ১০০ শতাংশ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে এবং সরকারের অনুমোদন সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশন এবং গ্রাচ্যুইটির উপর ভিত্তি করে ৪ শতাংশ গৃহনির্মাণ ঋণ গ্রহণের সুবিধা রয়েছে। সরকার ঘোষিত নীতিমালার শর্ত অনুযায়ী, লোন সুবিধা সাধারণ কর্মচারীরা ভোগ করতে পারে না, অতএব নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সেলিম মিয়া বলেন, মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম হুহু করে বেড়ে গেছে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়ে যে ধরনের বক্তব্য মিডিয়ার সম্মুখে উপস্থাপন করেছেন তাতে সর্বস্তরের সরকারি, স্বায়ত্বশাষিত ও আধা স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কিছু কুচক্রী মহল সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আসছে। তাই, বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশন সরকারি কর্মচারীদের আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত মহাসমাবেশে যোগদানের জন্য একাত্ততা প্রকাশ করেন। ওইদিন মহাসমাবেশে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের (বাআবিকফ) সেলিম মিঞা, মহিউদ্দীন খন্দকার, শাহাজাহান, জামাল উদ্দীন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

কারাবন্দি সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন চমেকে ভর্তি

কারাবন্দি সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে তাঁকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রবীণ এ রাজনীতিবিদকে চিকিৎসকরা ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পরিবারও। 

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাসুদ হাসান বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের অনেক বয়স হয়েছে। তাই তিনি ডিমেনশিয়াসহ নানা রোগে ভুগছেন। নিয়মিত পরীক্ষার জন্য তাকে বুধবার সকালে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এটি নিয়মিত চেকআপের অংশ। 

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ডিমেনশিয়াসহ নানা শারীরিক সমস্যা রয়েছে। আমাদের চিকিৎসকরা তাঁকে দেখার পর ঢাকার পিজিতে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা কারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। 

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গ্রেপ্তারের পর থেকে তাঁর স্বাস্থ্য অবনতির কথা শোনা যাচ্ছিল। এতে তাঁর পরিবার একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করে। সুচিকিৎসা এবং জামিনের আবেদন জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ একাধিক দপ্তরে চিঠিও দেওয়া হয়। 

তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনি কিছুই মনে রাখতে পারেন না। দিনের পর দিন একাকিত্বের কারণে এই রোগ তাঁকে বেশ কাবু করে ফেলছে। তাই কিছুদিন আগেও এসকল শারীরিক জটিলতা বিবেচনায় রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে জামিন এবং সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছিল মোশাররফের পরিবার। 

পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় গত বছরের ২৭ অক্টোবর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মোশাররফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭২ সালে তিনি সংবিধান প্রণেতাদের একজন ছিলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বিভিন্ন সময়ে সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ