মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠোর অভিবাসন নীতি গ্রহণের পর থেকে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে, গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯ দিনে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ৭ হাজার ৪১২ জন নথিবিহীন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।

আইসিই’র কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার জনকে বন্দীশালায় রাখা হয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, শিগগিরই তাদের নিজ নিজ দেশ কিংবা কিউবার গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হবে।

আরো পড়ুন:

এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে ফের বিমান দুর্ঘটনা

আইসিই’র তথ্য অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি, ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের শিকাগো এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের। গ্রেপ্তারদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি যৌন সহিংসতা, বন্দুক ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

আইসিই’র অনেক অভিযান অন্যান্য ফেডারেল সংস্থা যেমন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ); অ্যালকোহল, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যুরো (এটিএফ) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে।

ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ৭,৪১২ জনের মধ্যে বেশিরভাগেরই অপরাধমূলক কাজের বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটেছে, যখন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ নিশ্চিত করেছেন যে, ‘সবচেয়ে খারাপ’ অপরাধী অভিবাসীদের গুয়ানতানামো বে কারাগারে আটক রাখা হবে। গত শুক্রবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান। 

তার আগে, গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণা বলেন, তিনি ৩০ হাজার ‘অপরাধী অবৈধ অভিবাসী’ আটক রাখার জন্য গুয়ানতানামো বে কারাগার সম্প্রসারণের জন্য পেন্টাগনকে নির্দেশ দেবেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আজ আমি প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে ৩০ হাজার অভিবাসী আটক রাখার মতো নতুন স্থাপনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করছি। বেশিরভাগ মানুষই এটা সম্পর্কে জানেন না।”

পরে জানা যায়, ট্রাম্প এই বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ নয়, বরং প্রেসিডেন্টের একটি স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন। 

 

তবে তার আগে, ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামের একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এরপর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইস ই অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

চল্লিশেও টগবগে রোনালদো

বল পায়ে এখনও তাঁর গতি অন্য অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। এখনও যখন সবাইকে ছাপিয়ে ডি বক্সে লাফিয়ে উঠে গোল করেন, মুগ্ধ হয়ে থাকেন সবাই। বিজ্ঞাপনের মডেলিংয়ে এখনও তাঁর সিক্সপ্যাক বডির আকর্ষণ বাজার কাঁপিয়ে দেয়। সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আজ জন্মদিন, পা রাখছেন চল্লিশে। এখনও তিনি স্বপ্ন দেখেন, নতুন নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার। ইচ্ছাপূরণের তাড়নায় এখনও টগবগে তরুণ তিনি। 

‘আমি যদি ৯২০-৯২৫টি গোল করে ক্যারিয়ার শেষ করি... সেটা আমার কোনো নতুন কিছু বয়ে আনবে না। আমি ইতিহাসের সেরা, সেখানে আমি যদি ১ হাজার গোল করতে পারি, তাহলে সেটা হবে মহান কিছু। যদি সেটা নাও হয়, তাহলেও ভালো। সংখ্যা নিশ্চয় মিথ্যা বলবে না। আমি ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে পরিপূর্ণ একজন। যদি কেউ বলে ক্রিশ্চিয়ানো পরিপূর্ণ খেলোয়াড় নন, তাহলে সেটা মিথ্যা বলা হবে। আপনি এ ব্যাপারে পেলে, মেসি, ম্যারাডোনার কথা বলতে পারেন। আমিও তাদের শ্রদ্ধা করি।’ স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল লা সেকসটার ক্রীড়া সাংবাদিক এদু আগিরের নেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই নিজেকে মূল্যায়ন করেন রোনালদো।

হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা থেকে এখনও ৭৭ গোল দূরে রোনালদো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (এসিএল) আরব আমিরাতের ক্লাব আল ওয়াসলকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে রোনালদোর সৌদি ক্লাব আল নাসর, যা ছিল রোনালদোর ক্লাব ক্যারিয়ারে ৭০০তম জয়। যার মধ্যে স্পোর্টিংয়ের হয়ে জয় ১৩টি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুই দফায় জয় মোট ২১৪টি, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩১৫টি, জুভেন্টাসের হয়ে ৯২টি এবং আল নাসরের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৬টি। যেখানে মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারে জয় ৬১৩টি। তবে মেসি যেখানে ম্যাচ খেলেছেন ৭৪৪, রোনালদোর সংখ্যা সেখানে হাজারের বেশি। তুলনাটা তাদের এসেই যায়। 

রোনালদোকে ওই স্প্যানিশ সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলেন, মেসির খেলা আমেরিকার মেজর লিগ সকারের মান কি সৌদি প্রো লিগের চেয়ে খারাপ? উত্তরে রোনালদো– ‘অ্যারাবিয়ান লিগের চেয়ে খারাপ এমএলএস, যদিও মানুষ এসব জানে না।’ 

লম্বা এই সাক্ষাৎকারের পুরোটা প্রকাশ হয়নি এখনও। তবে প্রোমোর কিছু অংশে মেসির সঙ্গে তাঁর পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কথা বলেছেন রোনালদো। জানিয়েছেন, তাদের দু’জনের সম্পর্কে মানুষ যা ভাবে, আসলে তা নয়। ‘মেসি? আমাদের মধ্যে সুস্থ একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। আমরা ১৫টি বছর ব্যালন ডি’অরের মঞ্চ একসঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলাম। আমার মনে আছে, ওই অনুষ্ঠানে সঞ্চালক যখন ইংরেজিতে কিছু বলত, আমি তা তাকে (মেসিকে) অনুবাদ করে শোনাতাম। সেটা মজার একটি ব্যাপার ছিল, সে আমাকে সব সময় ভালো চোখে দেখেছে। অবশ্যই সে তার ক্লাবের হয়ে লড়েছে, আমি আমার ক্লাবের হয়ে। সে তার দেশের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, আমিও তাই করেছি। আমার মনে হয়, দুইজনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা দুইজনের জন্য আরও ভালো খেলতে সাহায্য করেছে। আমার মনে হয়, সে সব বছর সবকিছু খেলতে চাইত, গোল করতে চাইত। আমিও ঠিক তাই চাইতাম। আমি যেমন ক্যাম্প ন্যুতে গিয়ে খেলতে ভীষণ পছন্দ করতাম, সেখানে আমাকে দুয়ো শুনতে হতো, দর্শকরা আমাকে অপমান করতে চাইত; তাও সেটা আমি ভালোবাসতাম। আসলে আমার হৃদয়ে এখনও মাদ্রিদ রয়ে গেছে। এটা এমন একটা দল, যেখানে আমি সবচেয়ে সুখি ছিলাম। সেখানে আমার সুন্দর সব স্মৃতি রয়েছে, কিছু মাইলফলক রয়েছে। সে কারণেই সেখানকার মানুষ আমাকে ভুলতে পারে না। কখনও ভুলতেও পারবে না।’ জন্মদিনের আগে পুরোনো সব স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে দিয়েছিলেন রোনালদো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ