যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন নেতানিয়াহু
Published: 3rd, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন নেতানিয়াহুইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু বৈঠক করবেন। এ ছাড়া এই সফরে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গেও নেতানিয়াহুর বৈঠক করার কথা রয়েছে।
নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণের পর দেশটিতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে লেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার গভীর সম্পর্ককে আরও জোরালো করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে যাচ্ছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।
ইতিমধ্যে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়োজাহাজে ওঠার আগে নেতানিয়াহু বেশ কয়েকবার ‘শান্তির’ প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, যুদ্ধে তারা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা ইতিমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, তারা নিরাপত্তা জোরদার করতে পারবেন। শান্তির পরিসর আরও বিস্তৃত করতে পারবেন। শক্তির মাধ্যমে শান্তির একটি অসামান্য যুগ অর্জন করতে পারবেন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নেতানিয়াহু প্রথম কোনো বিদেশি নেতা হিসেবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির আলোচনা আজ সোমবার শুরু হওয়ার কথা। গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুমের ঢেউ, বেড়েছে রহস্যজনক মৃত্যু
শওকত আহমেদের মৃতদেহ যখন পাওয়া গেল, তখন তাঁর চোখ দুটি ছিল রক্তাক্ত। তাঁর চুল খসে পড়ছে। ১৮ বছর বয়সী এ যুবকের হাত-পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছিল। তাঁর বাবা মোহাম্মদ সাদিক এসব তথ্য জানান। ঘটনাটি গত ১৬ মার্চের। এর তিন দিন পরই সাদিক জানতে পারেন তাঁর বড় ছেলে রিয়াজও (২৫) মারা গেছেন। তারা দু’জনই এক মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ভারত শাসিত কাশ্মীরের গুজ্জার সম্প্রদায়ের মানুষ তারা। স্থানীয় আইন প্রয়োগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, শওকত ও রিয়াজ কাশ্মীরের কুলগাম অঞ্চলের একটি নালায় ডুবে গিয়েছিলেন, যা তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। তাদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ‘সম্ভাব্য আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু সাদিক ও গুজ্জার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ বয়ান মানতে নারাজ। সাদিক জানেন না তাঁর দুই ছেলের গুম হওয়া ও পরে মারা যাওয়ার আসল কারণ কী; এটি নিরাপত্তা বাহিনী করেছে, নাকি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, তাদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
সরকারি বাহিনী এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বয়ানের ওপর গভীর অবিশ্বাস রয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের, যেখানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে বেড়েছে গুম। এসব গুমের কিছুদিন পরই মিলছে মৃতদেহ। মুখতার আহমদ আওয়ান নামে ২৪ বছরের আরেক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন, যার খোঁজ এখনও মেলেনি। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বের হয়ে আর ফেরেননি।
সরকারের ওপর অনাস্থা কাশ্মীরের ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। অ্যাসোসিয়েশন অব প্যারেন্টস অব ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসন্সের (এপিডিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে ভারত শাসিত এলাকাটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার কাশ্মীরি নিখোঁজ হয়েছেন।
কেবল এ তিনজনই নয়, কাশ্মীরে যেন গুমের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। গত ৫ মার্চ কুলগামের পাশের কাঠুয়া জেলা থেকে যুগেশ সিং (৩২), দর্শন সিং (৪০) ও ১৫ বছরের বরুণ সিং নিখোঁজ হন। তারা বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কয়েকদিন পর কাঠুয়া থেকেই মোহাম্মদ দিন ও রহমান আলি নামে আরও দুই কিশোর গুম হয়। এক মাস পার হলেও এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।
২০২০ সালে ভারতের এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজৌরি জেলায় গুজ্জার সম্প্রদায়ের তিন তরুণকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে। এতে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজানোর অভিযোগ আনা হয়। কোর্ট মার্শালে ওই কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত হন। তবে পরে তিনি জামিন পেয়ে যান।