বরগুনার পাথরঘাটায় পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেন ফুয়াদ (৪৫) নামের এক বিএনপি নেতাকে কোপানের অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার কাকচিড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত আবুল হোসেন ফুয়াদ কাকচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকেলে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদে আসরের নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হন ফুয়াদ। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মাওলাসহ ৮ থেকে ১০ জন তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবুল হোসেন ফুয়াদ বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার রাতে কাকচিড়ার বিভিন্ন স্থানে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা, বিজয় আসবেই’ এমন শ্লোগানের পোস্টার লাগালে পরের দিন আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলি। এর জেরে আমার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মাওলাসহ আরো কয়েকজন।’’

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে আসতে না পেরে আওয়ামী লীগ ও এর সাঙ্গপাঙ্গরা গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে। আমরা আর বসে থাকব না। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আমরা আন্দোলন শুরু করব‌।’’

পাথরঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, ‘‘এ ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো বিষয় প্রাথমিক তদন্তে পায়নি পুলিশ। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান শুরু করেছে।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’

নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।

একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’

অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।

‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।

আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ