পুঁজিবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)। আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ হবে।

সারা দেশের সকল বিনিয়োকারীদের এ সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেবেন ও বক্তব্য রাখবেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপদি মো.

নুরুল হক নুর, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাসহ আরো বেশ কয়েকজন। 

সোমবার সকালে প্রতিবাদ সমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে  বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম মানিক রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমারা আশা করছি, বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে এ প্রতিবাদ সমাবেশ মহাসমাবেশে রূপ নেবে। এ জন্য সকল বিনিয়োগকারীদের এ সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৯৯ শতাংশ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত। এসব বিনিয়োগকারীর পুঁজি রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান নেতৃত্ব কোনো ভূমিকা রাখছে না। বরং তারা যেন শেয়ারবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে নেমেছে। বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিল এ সরকারের আমলে বিগত সময়ে যে লুটতারাজ হয়েছে, সবকিছু পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে। বিরাট পরিবর্তন হবে, এটাই আশা ছিল। সেটাই হচ্ছিল। তিন দিন বাজার ভালো ছিল। কিন্তু তারপর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন লোকদের দায়িত্ব দেওয়া হলো যারা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস থেকে আরও ধ্বংস করছেন। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা হয়েছে, গত ৫ মাসে তার থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ মাসে ৬৬ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।”

ঢাকা/এনটি/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৬ কোটির মার্কেটে টেকা যায় না মলমূত্রের গন্ধে

উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (সিটিইআইপি) নির্মিত হয়েছিল পিরোজপুর মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেট। ২০২১ সালে কাজ শেষ হওয়ার পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে বরাদ্দ হয় ১৪টি দোকান। চার বছরে এসেও এ মার্কেটটি কোনো কাজে আসছে না। দু-একটি দোকান নামমাত্র চালু দেখা যায়। বাকি কক্ষগুলো অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়। দোকান মালিকদের ভাষ্য, নকশাগত ত্রুটির কারণে মার্কেটটির সুফল পাচ্ছেন না পৌরবাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের পুরাতন পৌরসভা সড়কে ২০২১ সালে মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেটের কাজ শেষ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। এতে খরচ হয় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সিটিইআইপি প্রকল্পের আওতায় এতে অর্থসহায়তা দেয় দাতা সংস্থা এশীয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। এ মার্কেটের জমিতে আগে ছিল পুরাতন পৌর ভবন। সেটি ভেঙে মাল্টিপারপাস সুপারমার্কেট নির্মিত হয়। 

সরেজমিনে মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রস্রাব-পায়খানা ও ময়লার কারণে ভেতরের বেশির ভাগ কক্ষে টেকাই দায়। সাবেক এক যুবলীগ নেতার নামে বরাদ্দ দুটি কক্ষ দখল করে নিজ কার্যালয়ে রূপান্তরিত করেছেন এক বিএনপি কর্মী। 

হোমিও চিকিৎসক মো. শাহজাহান বসছেন নিজ ভাইয়ের নামে নেওয়া একটি দোকানে। তিনি বলেন, নিজের নামেও একটি দোকান বরাদ্দ নিয়েছিলেন। প্রতিবন্ধকতার কারণে সেটি বন্ধ অবস্থায় আছে। মার্কেটটির অবস্থা খুবই নাজুক জানিয়ে তিনি বলেন, আদতে এটি পুরোপুরিভাবে চালু হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এটি রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগের দাবি জানান তিনি।

মার্কেটের সামনের সড়কে স্থাপন করা হয়েছে ইজিবাইক স্ট্যান্ড। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এখানকার অধিকাংশ কক্ষ গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে কারণে মার্কেটের মূল চরিত্র ও অবয়ব দৃশ্যমান নয়। তাই এলাকাবাসীরও এ মার্কেট নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। 

পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুল হাই হাওলাদারের দাবি, একরকম বাধ্য হয়ে তারা এ মার্কেটটি নির্মাণে সম্মতি দিয়েছিলেন। যদিও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুস ছালাম বাতেনের ভাষ্য, বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষায় মার্কেটটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বিদেশি সংস্থার টাকার অপচয় হয়েছে। এটি এখন গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মার্কেটের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। মার্কেট নির্মাণের পরে দোকান বরাদ্দ নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, পিরোজপুরের একটি প্রভাবশালী মহল নিজস্ব লোকজনকে দোকান বরাদ্দ দিয়েছিলেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডি যখন উপকূলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বহুমুখী মার্কেটটি নির্মাণ শুরু করে, তখনই নকশাগত ত্রুটির বিষয়টি সামনে এসেছিল। তবে বিদেশি সহায়তায় নির্মাণের কারণে পৌরসভার তৎকালীন মেয়র, প্রকৌশল বিভাগ ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। 

পিরোজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকোশলী ধ্রুব লাল দত্ত বণিক বলেন, সুপারমার্কেটটি ছয়তলা ভিত্তির ওপর নির্মিত। একতলার ১৪টি দোকান নির্মাণের পর আগ্রহী ব্যক্তিরা দরপত্রের মাধ্যমে বন্দোবস্ত পান। এ জন্য তাদের জামানত দিতে হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত। মাসিক ভাড়া ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। ৬ মাস আগে দোকানগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ