রাষ্ট্র সংস্কারের পর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন
Published: 3rd, February 2025 GMT
রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি ও অনিয়ম ছেয়ে গেছে। সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিটি সেক্টরকে ঢেলে সাজানোর পর গ্রহণযোগ্য একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব। রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে এসময়টা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া প্রয়োজন। গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি আর যেন কোনোভাবেই রাষ্ট্রের ঘাড়ে ফ্যাসিবাদ চেপে বসতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
রোববার রাতে কক্সবাজার শহরের পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ সুভাষ হলে ‘বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে নাগরিক সমাজের ঐক্যের সম্মিলন-সংস্কার, জাতীয় ঐক্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন। বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া এই সংলাপ চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।
সংলাপে কক্সবাজার জেলার স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা-সংকট তুলে ধরেন বক্তারা। প্রবীণ শিক্ষক নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংলাপ সঞ্চালনা করেন কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা।
সংলাপে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কাশেম, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি জি এম আশেক উল্লাহ, শহর জামায়াতের আমির আবদুল্লাহ আল ফারুক, কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার, আইনজীবী রমিজ আহমেদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম সুজা উদ্দিন, পর্যটন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মঈনুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি শাহেদুল ওয়াহিদ, সাগর-উল ইসলাম, জিনিয়া শারমিন, তাশদিদ রেজা ও রিয়াদ মনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী আন্দোলনের কক্সবাজারের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, নারীনেত্রী ও মানবাধিকারকর্মী আইনজীবী সাকি এ কাউসার, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক তামান্না নওরিন, ছাত্রদল নেতা মিজানুল আলম প্রমুখ।
প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি আর যেন কোনোভাবেই রাষ্ট্রের ঘাড়ে ফ্যাসিবাদ চেপে বসতে না পারে, এ জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তা ছাড়া চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, নতুন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে প্রতিনিধিত্বকারী নাগরিক প্রতিনিধিদের ভাবনাকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। প্যানেল আলোচকদের উত্থাপিত প্রস্তাবনা ও ভাবনাগুলো লিখিত আকারে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছানো হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মানহানির মামলায় সেই ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির বিচার শুরু
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় তার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি একই আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ছিল। ওইদিন তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। একই সঙ্গে তার আইনজীবী শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেন। একইসঙ্গে তাপসী তাবাসসুমের জামিন মঞ্জুর করেন।
তার আগে গত বছরের ৮ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। ওইদিন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত আসামিকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর আসামি ঊর্মি শুধু শহীদ আবু সাঈদ নয়, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লিখেন। যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত একটি সরকার প্রধান সম্পর্কে বিষোদগার করা হয়েছে এবং সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে।