টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলেও খেলোয়াড়দের এখনো টাকা দেয়নি দুর্বার রাজশাহী। টাকার অপেক্ষায় তাদের কয়েকজন বিদেশি হোটেল ছাড়তে পারছিলেন না। একের পর এক বিতর্কিত কাণ্ডের পর এবার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দুর্বার রাজশাহী মালিক শফিকুর রহমানকে। তিন কিস্তিতে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দেবেন বলে জানিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির কর্ণধার শফিকুর।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৩,৭, ১০ ফেব্রুয়ারি—তিন কিস্তিতে দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটারদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে। বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সঙ্গে জড়িত সকলের পাওনা বুঝিয়ে দিতে আজ সকালে বিতর্কিত মালিক শফিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিজের দোষ স্বীকার করে ২৫ শতাংশ হারে তিন দফায় পাওনা টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন। যদি শফিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এর আগে পরশু রাতে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ (ফরচুন বরিশাল-চিটাগং কিংস) চলাকালে মিরপুরে আসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও। দুর্বার রাজশাহীর মালিক শফিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। গতকালের মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে মালিকপক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে সেটা দেখা যায়নি। 

এমনকি বিভিন্ন সূত্রে রাজশাহীর বিতর্কিত মালিকের পালিয়ে যাওয়ার কথা শোনা যায়। যার ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিপিএলের নানারকম অনিয়ম খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) একটি ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’ গঠন করেছে।

বিপিএলে এবার ব্যাংক গ্যারান্টি না নিয়েই দুর্বার রাজশাহীকে দল দেওয়া হয়। ফরচুন বরিশাল ছাড়া ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়নি আর কেউ। নতুন আসা রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু থেকেই জড়ায় বিতর্কে। খেলোয়াড়দের কোন টাকা না দেওয়ায় একবার তারা অনুশীলন বর্জন করেন। পরে চেক দেওয়া হলে সেই চেক একাধিকবার বাউন্স করে। বিদেশি খেলোয়াড়রা টাকা না পেয়ে মাঠে যাননি এক ম্যাচে। নিয়ম ভঙ্গ করে আয়োজিত হয় ম্যাচ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ

এছাড়াও পড়ুন:

চল্লিশেও টগবগে রোনালদো

বল পায়ে এখনও তাঁর গতি অন্য অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। এখনও যখন সবাইকে ছাপিয়ে ডি বক্সে লাফিয়ে উঠে গোল করেন, মুগ্ধ হয়ে থাকেন সবাই। বিজ্ঞাপনের মডেলিংয়ে এখনও তাঁর সিক্সপ্যাক বডির আকর্ষণ বাজার কাঁপিয়ে দেয়। সেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আজ জন্মদিন, পা রাখছেন চল্লিশে। এখনও তিনি স্বপ্ন দেখেন, নতুন নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার। ইচ্ছাপূরণের তাড়নায় এখনও টগবগে তরুণ তিনি। 

‘আমি যদি ৯২০-৯২৫টি গোল করে ক্যারিয়ার শেষ করি... সেটা আমার কোনো নতুন কিছু বয়ে আনবে না। আমি ইতিহাসের সেরা, সেখানে আমি যদি ১ হাজার গোল করতে পারি, তাহলে সেটা হবে মহান কিছু। যদি সেটা নাও হয়, তাহলেও ভালো। সংখ্যা নিশ্চয় মিথ্যা বলবে না। আমি ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে পরিপূর্ণ একজন। যদি কেউ বলে ক্রিশ্চিয়ানো পরিপূর্ণ খেলোয়াড় নন, তাহলে সেটা মিথ্যা বলা হবে। আপনি এ ব্যাপারে পেলে, মেসি, ম্যারাডোনার কথা বলতে পারেন। আমিও তাদের শ্রদ্ধা করি।’ স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল লা সেকসটার ক্রীড়া সাংবাদিক এদু আগিরের নেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই নিজেকে মূল্যায়ন করেন রোনালদো।

হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা থেকে এখনও ৭৭ গোল দূরে রোনালদো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (এসিএল) আরব আমিরাতের ক্লাব আল ওয়াসলকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে রোনালদোর সৌদি ক্লাব আল নাসর, যা ছিল রোনালদোর ক্লাব ক্যারিয়ারে ৭০০তম জয়। যার মধ্যে স্পোর্টিংয়ের হয়ে জয় ১৩টি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুই দফায় জয় মোট ২১৪টি, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩১৫টি, জুভেন্টাসের হয়ে ৯২টি এবং আল নাসরের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৬টি। যেখানে মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারে জয় ৬১৩টি। তবে মেসি যেখানে ম্যাচ খেলেছেন ৭৪৪, রোনালদোর সংখ্যা সেখানে হাজারের বেশি। তুলনাটা তাদের এসেই যায়। 

রোনালদোকে ওই স্প্যানিশ সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলেন, মেসির খেলা আমেরিকার মেজর লিগ সকারের মান কি সৌদি প্রো লিগের চেয়ে খারাপ? উত্তরে রোনালদো– ‘অ্যারাবিয়ান লিগের চেয়ে খারাপ এমএলএস, যদিও মানুষ এসব জানে না।’ 

লম্বা এই সাক্ষাৎকারের পুরোটা প্রকাশ হয়নি এখনও। তবে প্রোমোর কিছু অংশে মেসির সঙ্গে তাঁর পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কথা বলেছেন রোনালদো। জানিয়েছেন, তাদের দু’জনের সম্পর্কে মানুষ যা ভাবে, আসলে তা নয়। ‘মেসি? আমাদের মধ্যে সুস্থ একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। আমরা ১৫টি বছর ব্যালন ডি’অরের মঞ্চ একসঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলাম। আমার মনে আছে, ওই অনুষ্ঠানে সঞ্চালক যখন ইংরেজিতে কিছু বলত, আমি তা তাকে (মেসিকে) অনুবাদ করে শোনাতাম। সেটা মজার একটি ব্যাপার ছিল, সে আমাকে সব সময় ভালো চোখে দেখেছে। অবশ্যই সে তার ক্লাবের হয়ে লড়েছে, আমি আমার ক্লাবের হয়ে। সে তার দেশের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, আমিও তাই করেছি। আমার মনে হয়, দুইজনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা দুইজনের জন্য আরও ভালো খেলতে সাহায্য করেছে। আমার মনে হয়, সে সব বছর সবকিছু খেলতে চাইত, গোল করতে চাইত। আমিও ঠিক তাই চাইতাম। আমি যেমন ক্যাম্প ন্যুতে গিয়ে খেলতে ভীষণ পছন্দ করতাম, সেখানে আমাকে দুয়ো শুনতে হতো, দর্শকরা আমাকে অপমান করতে চাইত; তাও সেটা আমি ভালোবাসতাম। আসলে আমার হৃদয়ে এখনও মাদ্রিদ রয়ে গেছে। এটা এমন একটা দল, যেখানে আমি সবচেয়ে সুখি ছিলাম। সেখানে আমার সুন্দর সব স্মৃতি রয়েছে, কিছু মাইলফলক রয়েছে। সে কারণেই সেখানকার মানুষ আমাকে ভুলতে পারে না। কখনও ভুলতেও পারবে না।’ জন্মদিনের আগে পুরোনো সব স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে দিয়েছিলেন রোনালদো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ