পাবনা সদরের মালিগাছায় এনামুল হক নামের এক বাস মালিকের কাছে মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে একটি পরিবহন পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাসকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা ও সদস্য সচিব মনির আহম্মেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল শনিবার দিনগত সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিয়নের শংকরপুর এলাকায় বাস পুড়ানোর ঘটনা ঘটে। বাসটি পাবনা-ঈশ্বরদী রুটে চলাচল করত।
বহিষ্কৃত রানু বিশ্বাস মালিগাছা ইউনিয়নের রুপুপর গ্রামের রশিদ বিশ্বাসের ছেলে। তিনি মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পাবনা সদর উপজেলা যুবদলের অধীনে মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে যুবদলের কোনো পদে নাই) রানু বিশ্বাস সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় যুবদলের সব পর্যায়ের কর্মসূচিতে যোগদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হলো। সাবেক নেতার এহেন কর্মকাণ্ডের দায় দল বহন করবে না। যুবদলের সব পর্যায়ে নেতাকর্মীদের অভিযুক্তের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা যাবে, তাদের সংগঠনে স্থান দেওয়া হবে না। যুবদলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করার কোনো সুযোগ নেই।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, এ ঘটনায় রানু বিশ্বাসের নামে গাড়ি পুড়ানো মামলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তামিম ট্রাভেলসের মালিক এনামুল হকের কাছে মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাস মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অস্বীকৃতি জানালে বাস চলাচল বন্ধ ও পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর গত শনিবার রাত ৩টার পর তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে শংকরপুর গ্রামে দাঁড়িয়ে রাখা বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। এ ঘটনায় আনুমানিক ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন য বদল য বদল ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট
সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।
রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক।
জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।
পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে।