সিলেটে মাজার জিয়ারতে যাওয়ার পথে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে এক পরিবারের তিনজনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই ভাইয়ের প্রাণ গেছে। এ ছাড়া রাজধানীর টিকাটুলী, সাতক্ষীরার দেবহাটা ও জয়পুরহাটের কালাইয়ে একজন করে নিহত হয়েছেন।  

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে মাইক্রোবাসে সিলেটে যাওয়ার পথে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে নারী, শিশুসহ চারজন নিহত ও আহত হয়েছেন পাঁচজন। গতকাল রোববার সকালে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ১৯ মাইল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন আশুলিয়ার আমইল্লা গ্রামের জাহিদ আলীর স্ত্রী সায়মা আক্তার ইতি (৩৫), তাঁর ছেলে আয়ান (৬), ইতির বোন শামীমা ইয়াসমিন (৩৮) ও চালক মোগড়াপাড়ার মিলন ভূঁইয়ার ছেলে সোহেল ভূঁইয়া (৩৮)। তাদের মধ্যে ঘটনাস্থলে দু’জন এবং হাসপাতালে নিলে দু’জনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় পড়া দুটি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ।
শামীমার বোন জামাই আলম ও ওসমানীনগর থানার ওসি মুনায়েম মিয়া জানান, সিলেটে মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে একই পরিবারের ৯ জন প্রাইভেটকারে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওসমানীনগরে মহাসড়কসংলগ্ন হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দখল করে অবৈধ গাড়িস্ট্যান্ড স্থাপন ও ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর ওয়ারীর টিকাটুলীতে গতকাল দুপুরে মাইক্রোবাসচাপায় মরিয়ম আক্তার (৩১) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায়। তিনি টিকাটুলী এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মোটরসাইকেল গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রাণ গেছে স্বেচ্ছাসেবী কর্মী শিহাব উদ্দিনের (২৫) ও তাঁর চাচাতো ভাই ফরিদ মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিনের (২৪)। তাদের বাড়ি পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামে। শিহাবের বাবা রফিক মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‘এখন আমারে কেডা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাইবো। রক্ত দিতে গিয়া আমার পোলা শেষ হয়ে গেল।’ বোরহানের বাবা ফরিদ মিয়া বিলাপ করেন, আমার বংশে দুই ভালো ছেলে আমাদের রেখে চলে গেল।

সাতক্ষীরার দেবহাটায় গতকাল রোববার দেবীশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ট্রলিচাপায় মিম আক্তার (৭) নামে এক স্কুলছাত্রী নিহত হয়েছে। সে ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও দেবহাটা উপজেলার কালবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে।
জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের ঠুশিগাড়ীতে গতকাল সকালে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে এনামুল হক নামে এক চালক নিহত হয়েছেন।  
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকাল প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন দ র ঘটন গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

সম্পর্কিত নিবন্ধ