বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কীসের ভিত্তিতে ঋণ দিয়েছে, তার ফরেনসিক অডিট (নিরীক্ষা) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কী কী ডকুমেন্টের বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে  হওয়া অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে এ নিরীক্ষা চলতি মাসের মধ্যে শেষ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

গত ২৮ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, শিল্প ও পূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান খান, শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওই দিন বৈঠক শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলস (বস্ত্র ও পোশাক) সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর মাধ্যমেই গ্রুপটি ঋণ নিয়েছে ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। বেক্সিমকো শিল্প পার্কের আওতাধীন যে ৩২ কোম্পানির কথা বলা হয়, এর মধ্যে ১৬টিই অস্তিত্বহীন। এসব অস্তিত্বহীন কোম্পানির বিপরীতে আছে ১২ হাজার কোটি টাকার ঋণ।
ফরেনসিক নিরীক্ষা হলো– কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত খতিয়ে দেখা, যার মাধ্যমে যে কোনো জালিয়াতি ও অনিয়ম খুঁজে বের করা সম্ভব। এ নিরীক্ষার পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপের রিসিভার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির এর আগের সভায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে-অফকৃত ১৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্তের ঘোষণা টিভি স্ক্রলে প্রচারের ব্যবস্থা না করায় অর্থাৎ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করায় রিসিভারের ভূমিকা নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে রিসিভারকে সাময়িক বরখাস্তসহ তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। 
হাইকোর্টের নির্দেশনায় সমস্যায় জর্জরিত বেক্সিমকো গ্রুপের পতন ঠেকাতে এবং বিনিয়োগকারী, কর্মী ও ব্যাংকগুলোর স্বার্থ রক্ষায় গত ১০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. রুহুল আমিনকে প্রতিষ্ঠানটির ‘তত্ত্বাবধায়ক’ (রিসিভার) নিয়োগ দেওয়া হয়। 
বৈঠকে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের লে-অফকৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃপক্ষ বন্ধ করবে বলে ফের সিদ্ধান্ত হয়। এতে শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী পাওনাদি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই পরিশোধ করতে বলা হয়। এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শাইনপুকুর সিরামিকসের মর্টগেজকৃত শেয়ার, সম্পদ ইত্যাদি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র স দ ধ ন ত হয় উপদ ষ ট আর থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টিনা থেকে এল ৫০ হাজার ২০০ টন গম

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার ২০০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৩০ হাজার ১২০ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং ২০ হাজার ৮০ টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

এর মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরে গম খালাসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ