ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার ইচ্ছা ছিল সুশোভনের। সন্তানকে ভবিষ্যতে একজন ভালো মানুষ আর সৎ চিকিৎসক হিসেবে দেখার স্বপ্ন বুনতেন বাবা-মাও। স্বপ্নপূরণের প্রাথমিক ধাপ যে স্বপ্নের মতো হবে, তা কখনও কল্পনাতে ছিল না।
সহপাঠীদের তাক লাগিয়ে দিয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছেন খুলনার ছেলে সুশোভন বাছাড়। সবাইকে ছাড়িয়ে ৯০ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।
সুশোভনদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে। থাকেন খুলনা নগরীর বড় বয়রা এলাকায়। তাঁর বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। মা বন্দনা সেন একসময় শিক্ষক ছিলেন। ১৪ বছর আগে একমাত্র সন্তানের দেখভালের জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। সুভাস চন্দ্র ও বন্দনা সেন দম্পতির একমাত্র সন্তান সুশোভন।
সুশোভন বলেন, কখনও প্রাইভেট ব্যাচ বা বাইরের শিক্ষকদের কাছে পড়িনি। শিক্ষক বাবাই পড়াতেন, বাকিটা মা দেখিয়ে দিতেন। বাবা-মার চেষ্টাতেই স্কুলে-কলেজে প্রতিবছর ভালো ফল করেছেন। তিনি বলেন, আমি কখনও সময় ধরে বা রাত জেগে পড়াশোনা করিনি। পড়ার বাইরে খেলাধুলা করতাম। আমি বই পড়া খুব পছন্দ করি, প্রচুর বই পড়ি।
ভবিষ্যতে এমন একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন রয়েছে সুশোভনের সেখানে গরিব-অসহায় মানুষেরা বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাবে। নিজের সাফল্যে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশপাশি কৃতিত্ব দেন বাবা-মা, বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকে।
ছেলেকে নিয়ে স্বপ্নটা এখন আরও বড় বাবা-মায়ের। চিকিৎসক হয়ে দেশের গবিব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। তার এমন সাফল্যে বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ার বইছে এলাকাতে। মিষ্টিমুখের পাশাপাশি ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
সুশোভনের মা বলেন, শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে আনন্দে কেঁদে ফেলেছি। আমার সন্তান যেন মানুষের ডাক্তার হয়- সেই প্রার্থনা আমাদের। তিনি বলেন, জীবনে কখনও প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েনি সুশোভন। নিজে পড়া তৈরি করেছে, আমরা সহযোগিতা করেছি।
বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, আমি তাকে বই কিনে দিতে কখনও কার্পণ্য করিনি। তার মা তাকে সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই ছেলের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে, মানুষের সেবা করবে। বাবা-মা হিসেবে আমরা খুবই গর্বিত।
ভবিষ্যতে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের উদ্দেশে সুশোভন বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার পর সময় নষ্ট করা যাবে না। কোথায় নিজের দুর্বলতা রয়েছে খুঁজে বের করে সেখানে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, মূল বই ফোকাস দিতে হবে। মূল বই শেষ করে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করতে হবে। মূল বই শেষ করতে না পারলে যতই কোচিং বা সহায়ক বই পড়া হোক না কেন কোনো কাজে লাগবে না।
২০২২ সালে যশোর বোর্ডের টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০২৪ সালে সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুশোভন। দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ৫ পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছিলেন খুলনার মেয়ে সুমাইয়া মোসলেম মীম।
আগামী দিনের পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে সুশোভন বলেন, বুঝে পড়াশোনা করতে হবে। সবাই ভাবে মুখস্থ করতে হবে। কিন্তু না; যা পড়ছ সেই বিষয়টা পরিষ্কার বুঝতে হবে। মুখস্থ করলে পরদিন ভুলে যেতে পার। কিন্তু বুঝে পড়লে সেটা কাটিয়ে ওঠা যায়। কিছু বিশেষ টপিক, অধ্যায়, ছক থেকে প্রতিবার প্রশ্ন এসে থাকে। সেসব গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, কেউ মেধাবী হয়ে জন্মায় না। সবার ভেতরেই মেধা সুপ্ত ও ঘুমন্ত থাকে। জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নিজের সুপ্ত মেধাকে জাগানোর জন্য সাধনা করতে হবে। স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সময়ের কাজ সময়েই করতে হবে। আর পাঠ্যবইয়ের বাইরেও পৃথিবীকে জানতে হবে। তাহলেই সাফল্য মিলবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। তাই মূল বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে মডেল টেস্টের মাধ্যমে নিজেকে যাচাই করে নিতে হবে। প্রতিটি বই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। জীববিজ্ঞানে ভালো করার জন্য একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই ভালো করে পড়া উচিত। রসায়ন বিষয়ও যথেষ্ট আয়ত্তে রাখতে হবে। তাই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংকসহ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অধ্যায়ে দেওয়া প্রশ্নগুলো চর্চা করতে হবে । আগের বছরের প্রশ্নগুলোতে যা এসেছে, সেগুলো তো বারবার পড়বেই, অন্য বিষয়গুলোও পড়তে হবে। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক হ পর ক ষ র ম ল বই র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের দায় ও দায়িত্ব
আমাদের দেশের মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশি কথা বলে, চিন্তাভাবনা না করেই কথা বলে। যে কারও সম্পর্কে একটা মন্তব্য করতে বা উপসংহারে পৌঁছাতে আমাদের একটুও সময় লাগে না। আমার অনেক বন্ধু আছেন, হয়তো এখনও বিয়ে হয় নি, বিয়ে হলেও বাবা মা হন নি কিংবা একটু স্থূল বা একটু বেশি ক্ষীণকায়। তারা নানানরকম মন্তব্যমাখা প্রশ্নের ভয়ে সামাজিক অনুষ্ঠানে যান না। অনেকসময় অনুপস্থিত থাকলে তার অবর্তমানে যদি আরও কটু মন্তব্যের চর্চা হয়, সেই ভয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং অবধারিতভাবে মন খারাপ করে ফেরত আসেন। ব্যতিক্রম থাকলেও মোটা দাগে এই আমাদের সমাজ।
এখন অবশ্য আমরা আর আগের মতো সামাজিক নই। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হিসাবে, বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি। এর মধ্যে ফেসবুক ব্যবহার করে পাঁচ কোটির বেশি মানুষ যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ফেসবুক ব্যবহারে বিশ্বে তিন নম্বর অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। গড়ে আমরা এখন কতবার আমাদের মোবাইল ফোন স্পর্শ করি অনুমান করতে পারবেন? ২৬১৭ বার থেকে ৮ বিলিয়ন পর্যন্ত। এখন আর আমাদের পাড়া বেড়ানোর সময় কোথায়! বিয়ে জন্মদিনেও দেখা যায় একই টেবিলে বসে থেকেও কেউ কারো সাথে গল্প করছে না, সবার মুখের সামনে একটা মোবাইল। তারা শারীরিকভাবে সমাজে সময় কাটানোর চাইতে ভার্চুয়ালি সময় কাটাতে পছন্দ করে। পাশে আসল মানুষ রেখে আমরা নিরাকার মানুষের সঙ্গ এত পছন্দ করি কেন? কারণটা সম্ভবত স্বাধীনতা। ভার্চুয়াল জগতে অনেক স্বাধীনতা। নিজের পছন্দমতো সময়ে আবির্ভাব হওয়া যায়, ইচ্ছেমতো অদৃশ্য হওয়া যায়, প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়, এই ব্যাপক স্বাধীনতা আমাদের স্বেচ্ছাচারী হবার সুযোগ দেয় যা পাশের জলজ্যান্ত মানুষ আমাদের দিতে পারে না। তাই আমাদের স্ক্রিন টাইম দিন দিন বাড়ছে।
পৃথিবীর মানুষ গড়ে ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট মোবাইলে মগ্ন থাকে আর বাংলাদেশেও সেটা বাড়তে বাড়তে ৪ ঘণ্টায় এসে ঠেকেছে। যেখানে আমেরিকার জিডিপি বাংলাদেশের চাইতে ৩০ গুণ বেশি, মোবাইলের ব্যবহারে তারা ৩০ গুণ নয়, এমনকি দ্বিগুণ ও নয়, মাত্র তিন ঘণ্টা এগিয়ে আছে। আমরা এইদিক দিয়ে দ্রুত তাদের ছুঁয়ে ফেলছি। এই যে ২৪ ঘণ্টার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমরা মোবাইলে পড়ে থাকি, আমরা আসলে কি করি? আমরা অপ্রয়োজনীয় জিনিস দেখি, শুনি এবং আমাদের আদি অভ্যাসমতো না জেনে না বুঝে ইচ্ছামতো মন্তব্য করি। বিন্দুমাত্র দায়িত্বশীল আচরণ করি না। কিন্তু আমি নিজে যখন কটু, দায়িত্বহীন বিরূপ মন্তব্যের শিকার হই, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করি। এই বৈপরীত্য নিয়ে জীবনযাপন বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ‘নগরে আগুন লাগলে দেবালয় এড়ায় না।’ আমরা প্রত্যেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো, কেউ আগে কেউ পরে। এতোটা সময় যে জগতে কাটানো হয়, সেই জগতেরও কিছু আদপ কায়দা আছে, ব্যবহারবিধি আছে। একটা গাড়ি চালানোর আগে আমাদের ড্রাইভিং শিখতে হয়, লাইসেন্স নিতে হয়। কারণ, গাড়িটা আমার হলেও রাস্তাটা আমার নয়। সেখানে অনেক গাড়ি চলে। নিজের ইচ্ছেমতো গাড়ি চালালে নিজেও মরবো অন্যকেও মারবো। নিয়ম না মেনে গাড়ি চালালে জরিমানা থেকে শুরু করে প্রয়োজনে লাইসেন্স ও বাতিল করা হয়। একটা নতুন মোবাইলও যদি আমরা কিনি, প্রথমে তার ইউজার ম্যানুয়েল আমরা মন দিয়ে পড়ি। কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সময় আমরা তার ব্যবহারবিধি জানার প্রয়োজনও মনে করি না। অনেকটা নেশাগ্রস্থের মতো ব্যবহার করি বলেই অপতথ্য এবং গুজব ছড়ানোর রীতিমতো কারখানায় পরিনত হয়েছে এই মাধ্যমগুলো।
গত এক দশকে দেশে যত সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে তার নেপথ্যে ছিল গুজব এবং এই গুজব ছড়ানোতে মূল অবদান ছিল ফেসবুকের। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধপল্লীতে সহিংসতার ঘটনা কিংবা ২০২১ সালে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ে যে সাম্প্রদায়িক হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, তাতে ব্যাপক প্রাণহানি হয় যার উৎস ছিল ফেসবুক। এই অপপ্রচারকে দাবানলের মতো ছড়িয়ে দিতে ব্যবহার করা হয় ভূয়া ফটোকার্ড কিংবা এআই ভিডিও এবং ভয়েস। ভাইরাল করার এসব কৌশল ধরতে না পেরে আমরা পাগলের মতো হানাহানিতে জড়িয়ে পড়ি।
আগে ভাইরাল হতো জীবনঘাতী ভাইরাস, অথচ এখন আমরা খুব আগ্রহ করেই ভাইরাল হতে চাই। ভাইরাল হতে গিয়ে স্বাধীনতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করি। ইতিমধ্যে আমাদের মনোজগতে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। সুন্দর কথা এখন আর আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না, আমাদের আকৃষ্ট করে গুজব! হয়ত কোন অসামান্য অভিনয়শিল্পী , তার অভিনয় নিয়ে কথা না বলে আমরা তার বয়স নিয়ে কটূক্তি করি । কোন কথাশিল্পী কিংবা দামি লেখককে, তার লেখা না পড়েই মনের মাধুরী মিশিয়ে অপরাধী বানিয়ে গালাগালি করি। এমনকি আমরা যারা অতি সাধারণ মানুষ, আমরা যারা এই লেখাটি পড়ছি, আমরা কি কখনও সাইবার বুলিং এর শিকার হই নি? আমি নিশ্চিত, আমরা সবাই কখনও না কখনও হয়েছি। তবু আমরা কেন এই কাজ করি? কারণ আমরা নিজের অজান্তেই এর মধ্যে বিনোদন খুঁজে পাওয়া শুরু করেছি। ঘৃণা ছড়িয়ে বিনোদন, বড়ো আতঙ্কের ব্যাপার! এর প্রভাব এখন আর ব্যক্তি পর্যায়ে নেই, সামাজিক পর্যায়ে বহু দাঙ্গা হাঙ্গামা এমনকি রায়ট রক্তপাত প্রাণহানিতে গিয়ে এই বিনোদন থামে, তবু আমাদের চোখ খোলে না। আমরা সামাজিক মাধ্যমে না জেনে অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে উত্তপ্ত মন্তব্য করতেই থাকি, তর্ক বিতর্ক চলতেই থাকে। অথচ যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তর্ক করি, শেয়ার করি, সেগুলো আসলে কোনোভাবেই কাজের না, বরং আমাদের অন্য কাজকে ব্যাহত করে এবং অকারণ মানসিক চাপ তৈরি করে। এই চাপ নিয়ে চলতে গিয়ে আমরা নিজেরা অস্থির এবং অসুখী হই, আমাদের পাশের মানুষের জন্য বিরক্তিকর হই।
দিন দিন আমরা মানবিকতা হারাচ্ছি, পারিবারিক বন্ধন হালকা হয়ে যাচ্ছে, আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি, আমাদের সময় এবং শক্তি নষ্ট হচ্ছে, মনোযোগ কমে যাচ্ছে, মগজের মধ্যে আমরা শত্রু নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, এমনকি আমরা অনেকেই অনলাইনে প্রতারণারও শিকার হচ্ছি। সবকিছুর মূলে কোনোরকম মূল্যবোধ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা।
আমরা যে পরিমাণ সময় একনিষ্ঠভাবে স্মার্টফোনে কাটাই, সম্ভবত আর কোন কাজে আমরা এতোটা মনোযোগ দেই না। ১৮ বছরের অনেক আগেই আজকাল ছেলেমেয়েরা এটি ব্যবহার করছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট খুলছে। স্মার্টফোন এখন জীবনের অংশ, একে বাদ দিয়ে চলাও সম্ভব নয়। তাই এর দায়িত্বশীল ব্যবহার শেখানোর জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে। স্কুলের সিলেবাসেও এটি অন্তর্ভুক্ত করা এখন আবশ্যক হয়ে গেছে। দায়িত্বহীন ব্যবহারের দায় কেবল ব্যবহারকারীদের নয়, দায় নীতিনির্ধারকদের ও আছে।
ভারচুয়ালি যারা ঘৃণা ছড়ায় , তাদের উপস্থিতি আমরা মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে টের পেলেও তারাও আমাদের মতোই জলজ্যান্ত মানুষ। এখানে তারা বলে আসলে কিছু নাই। তারাই আমরা। আমরা বিনোদনের আশায় ঘৃণার বিষ খুব আগ্রহ করে গ্রহণ করি এবং আশা করি এই বিষে অন্য কেউ মারা যাবে। বাস্তবে তা হয় না। যে বিষ খায় সেই মারা যায়, অন্য কেউ না। জেনেবুঝে দায়িত্ব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করলে ভার্চুয়ালিও আমাদের মর্যাদা ঠিক থাকবে। আর মর্যাদা আমরা কে না পছন্দ করি!
ঘৃণা বয়কট করি। সংক্রামক হোক ভালোবাসা!
ঢাকা/লিপি