এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মৌসুম। ফেসবুক গ্রুপগুলোয় হরহামেশাই তর্ক হয় ক্যাম্পাস কিংবা সাবজেক্ট রিভিউ নিয়ে। ক্যাম্পাস কেমন, সাবজেক্ট ভালো কী মন্দ, চাকরি-বেতন কিংবা উচ্চশিক্ষার সুযোগ কেমন– আরও যে কত প্রশ্নের আবির্ভাব! টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট রিভিউয়ের এক ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে একজন লিখলেন, ইঞ্জিনিয়ারিংই যেহেতু করবে কাপড় নিয়ে কেন। অন্য একটি কমেন্টে চোখ আটকে গেল। লিখেছেন, ‘গ্র্যাজুয়েট হয়েছি তিন দিন হলো আর চাকরির বয়স দুই মাস।’ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ কেবল আমাদের পরিহিত কাপড় নিয়ে নয়, এর বিস্তৃতি ব্যাপক। আজ তাহলে দেশে সবচেয়ে বেশি চাকরির সুযোগের বিষয়টি নিয়ে জানা যাক। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সবার আগে টেক্সটাইলের মৌলিক বিষয়গুলো শেখানো হয়। পলিমার সায়েন্স, ন্যাচারাল ফাইবার, ম্যান-মেইড ফাইবার ইত্যাদির মাধ্যমে টেক্সটাইলের ক্ষুদ্র অংশ ফাইবার নিয়ে জানা হয়। তারপর ইয়ার্ন, ফেব্রিক, অ্যাপারেল এবং ওয়েট প্রসেসিংয়ের বিভিন্ন কোর্সের বিষয়াবলি শেখানো হয়।
ইন্ডাস্ট্রিতে একটি পোশাক তৈরি করতে নানা প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হয়। শুরুতে আমদানিকৃত কটন বা তুলার আঁশ বা ফাইবারকে বিশুদ্ধকরণ করা হয়। তারপর তা স্পিনিং প্রক্রিয়ায় সুতা বানানো। সুতা থেকে ফেব্রিক আর ফেব্রিক থেকে অ্যাপারেল এবং তা থেকে ব্যবহার উপযোগী পোশাক বানানো হয়। কার্ডিং, লোমিং, ড্রায়িং, প্রিন্টিং, কাটিং, সুইং, ইন্সপেকশন, ফিনিশিংসহ বহু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাতে। পরে এসব শেখানো হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রকৌশলদের কাজ প্রোডাকশন, রিসার্চ, ফাইবারের গুণগত মানোন্নয়ন, মেশিনারি ডিজাইন করে কার্যকরী উপায়ে পোশাক উৎপাদন করা– যেন তা বেশিদিন টিকে, আরামদায়ক হয়, দেখতে আরও সুন্দর ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে।
আমরা মুখে মাস্ক ব্যবহার করি। বৃষ্টিতে ছাতা ব্যবহার কিংবা রেইনকোট গায়ে দিই। আবার অগ্নিনির্বাপকের কাজে দমকলকর্মীরা পরেন বিশেষ ধরনের পোশাক। নভোচারীরা মহাকাশে ভ্রমণ করে স্পেস স্যুট পরেন। সবকিছু টেক্সটাইল প্রকৌশলবিদ্যার অংশ। চার বছরের স্নাতক শেষ করে ইন্ডাস্ট্রিতে আছে প্রচুর চাকরি। আমাদের দেশ টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতে পৃথিবীতে দ্বিতীয়। বহু প্রতিষ্ঠানে উইভিং-নিটিং প্রোডাকশন, ডায়িং কিংবা মার্চেন্ডাইজিং ইত্যাদিতে চাকরির শেষ নেই। সিংহভাগ চাকরি বেসরকারি হলেও কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে চাকরির সুযোগ। আবার কেউ চাইলে উচ্চশিক্ষায় যেতে পারেন দেশের বাইরে। বহির্বিশ্বে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ ব্র্যান্ডিংয়ে কাজ করে যাচ্ছে টেক্সটাইল প্রকৌশলীরা। দেশে এতসব টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন হয় দক্ষ প্রকৌশলীর। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ল্যাবে হাতে-কলমে তা শেখানো হয়, পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিট ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকে অনেক বেশি। গ্র্যায়জুয়েশনের আগে চাকরিতে প্রবেশের রেওয়াজ আছে। অনেকে কপাল কুঁচকিয়ে এই চিন্তা করেন, পাস করার আগেই চাকরিতে ঢুকবেন কিনা।
যেখানে পড়ানো হয়
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়  বর্তমানে চারটি অনুষদের অধীনে আছে মোট ১১টি বিভাগ। শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক স্পেশালাইজড বিষয় পড়ানো হলেও সব বিভাগের ডিগ্রি এক; তা হলো বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। তাছাড়া সরকারি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় তা হলো খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া কলেজ ও ইনস্টিটিউট মিলে বুটেক্সের অধিভুক্ত রয়েছে মোট দশটি প্রতিষ্ঠান। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ কর র

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছর নিখোঁজ থাকা নায়িকা পপির খোঁজ মিলল যেভাবে

দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে আছেন এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। বিয়ে ও সন্তান জন্মের খবর নিয়েও মুখ খোলেননি তিনি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘সাহসী যোদ্ধা’। চলচ্চিত্রের মানুষজন আশা করছিলেন সিনেমার প্রচার উপলক্ষে হয়তো প্রকাশ্যে আসবেন তিনি। সিনেমা মুক্তির তারিখও বারবার পেছানো হয়। ফিরলেন না তিনি। পপি ফিরলেন, তবে সশরীরে নয়, এবার নেতিবাচক সংবাদ শিরোনামে এলেন এই নায়িকা। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় জিডি করেছেন নায়িকা পপির বোন ফিরোজা পারভীন।

সোনাডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জিডি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জিডি সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক জমি দখলে নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার ও শিপনসহ পপি ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিববাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে যান। এতে বাধা দিলে পপি ও তাঁর স্বামী ফিরোজা পারভীনকে হুমকি দেন। স্থানীয় লোকজন জানান, পপি ও তাঁর স্বামী বর্তমানে খুলনায় অবস্থান করছেন। পপির মেজ বোন ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আমরা চার বোন, দুই ভাই। পপি সবার বড়। সে আমাদের বাবার জমি দখলের চেষ্টা করছে অনেক বছর ধরেই। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছি তার মাধ্যমে। পপি ছাড়া আমরা সবাই এক আছি। আগেও আমাদের পেশিশক্তির ভয় দেখানো হয়েছে। বিষয়টি চলচ্চিত্রের দুয়েকজন জানেন। আলমগীর সাহেব (অভিনেতা আলমগীর) পপিকে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেছিলেন। কিন্তু পপি কোনো কিছুতেই থাকছে না। সবার জমি সে একাই ভোগদখল করতে চায়।’

প্রকাশ্যে স্বামী সন্তানের ছবি

পপি যখন আড়ালে ছিলেন, তখনই গুঞ্জন চলছিল বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন তিনি। রাজধানীর ধানমন্ডিতে বসবাস করছেন। গতকাল স্বামীর সঙ্গে সন্তানসহ একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিতে দেখা যায়, সন্তানের জন্মদিন পালন করছেন পপি ও তাঁর স্বামী। জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি।  নায়িকা তাঁর সন্তানের নাম রেখেছেন আয়াত। সন্তানের বয়স এখন প্রায় চার বছর। আর পপির স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল একজন ব্যবসায়ী। 

সাহসী যোদ্ধা সমাচার

পপি ২০১৯ সালে সর্বশেষ এফডিসিতে ‘সাহসী যোদ্ধা’ নামে সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত সিনেমাটি ২০২১ সালে ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ নামে সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র লাভ করে। বেশ কয়েকবার সিনেমাটির মুক্তির খবর পাওয়া গেলেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায়। ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ সিনেমাটি সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে। এতে পপিকে দেখা যাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আমিন খান। 

ফিরে দেখা 

২০১৯ সালে সর্বশেষ পপি অভিনীত সিনেমা ‘দি ডিরেক্টর’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। আড়ালে যাওয়ার আগে পপি ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর ‘ধোঁয়া’ নামে একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। মার্চে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। এরপর হঠাৎ সবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন পপি। এরপর বছর চারেক ধরে কোথাও দেখা যায়নি তাঁকে। কোথাও কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা মিলছিল না একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রীর। আড়ালে যাওয়ার কিছুদিন নানা গুঞ্জনের মাঝেও মুখ খোলেননি পপি। হঠাৎ ২০২২ সালে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে তিনি আড়াল ভেঙে প্রকাশ্যে এসেছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। কেন তিনি আড়ালে আছেন তার সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি এ অভিনেত্রী। ফেরার ব্যাপারে শুধু বলেছেন ‘হয়তো ভাগ্য থাকলে আবারও ফিরব।’

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ