ময়মনসিংহ মেডিকেলে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের হাতাহাতি
Published: 2nd, February 2025 GMT
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ঘটনাটি ঘটে। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি শফিকুল ইসলাম খান বলেন, “আজ সকাল থেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম চলছিল। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির কর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বহিরাগতরাও কলেজ ক্যাম্পাসে ছুটে আসেন। পরে পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধার ২ আ.
টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের সঙ্গে আ.লীগের সংঘর্ষ, আহত ৮
ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শরিফুল ইসলাম খালিদ বলেন, “ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী জড়িত না। ছাত্রদলের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের হাতাহাতি হয়েছে।”
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান খান বলেন, “এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীদের ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল হ ম ড ক ল কল জ পর স থ ত ছ ত রদল র ঘটন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কমছে না অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, বাড়ছে দুর্ঘটনা
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। রাজধানী থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও হালুয়াঘাট স্থলবন্দরে যাতায়াতকারীদের একমাত্র ভরসা সড়কটি। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক আসা-যাওয়া করে এই পথে। ঈদ উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের শৃঙ্খলা এক রকম ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনের শিথিলতায় দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে এ সড়কের পরিস্থিতি। বিশেষ করে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য চরম আকার ধারণ করেছে। অদক্ষ চালকরা কয়েকটি জায়গা থেকে যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করছে। ফলে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। এবার ঈদুল ফিতরের সময় মহাসড়কটিতে ঘটা বেশির ভাগ দুর্ঘটনাই ছিল অটোরিকশার সঙ্গে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষ।
ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ থেকে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কটি পুরোপুরি অটোরিকশার দখলে চলে গেছে। সরেজমিন গতকাল রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দাসহ কয়েকটি পয়েন্টে গিয়ে অটোরিকশার জট দেখা যায়। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্রা নামে পরিচিত অটোরিকশার সারি।
ঢাকাগামী কয়েক বাসযাত্রী ও পথচারী জানান, পুলিশ এসব যানবাহন আটকে মাঝেমধ্যে অভিযান চালায়। আবার তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে চলে আসে। এরা বেশির ভাগই রেজিস্ট্রেশনবিহীন। এদের নেই কোনো ফিটনেস। এরা বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালায়। ফলে প্রতি মাসে এসব যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন অনেক মানুষ।
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে বিভাগের অন্যান্য জেলায় যেতে হলে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স পরিদর্শক ইফতেখারুল ইসলাম মুরাদের তথ্যমতে, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে লাইসেন্সধারী অটোরিকশা চলে প্রায় ১২ হাজার। কিন্তু বাস্তবে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ অটোরিকশা চলে আরও ২০ থেকে ৩০ হাজার।
সূত্র বলছে, এসব অটোরিকশা নগরীর ভেতর জায়গা না পেয়ে মহাসড়কে চলে যাচ্ছে। থ্রিহুইলারগুলো নগরীর চরপাড়া থেকে ঢাকা বাইপাস হয়ে ত্রিশাল পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে। আর এ পথেই ঢাকাগামী বাস-ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশির ভাগ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। বাস্তবে সিটি করপোরেশন এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব ও বর্তমানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমনা আল মজিদ সমকালকে বলেন, লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। লাইসেন্স নিয়ে যদি অটোরিকশাগুলো মহাসড়কে চলে যায়, সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দীঘারকান্দা এলাকায় কথা হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক কামাল মিয়ার সঙ্গে। তাঁর গাড়িটি নিবন্ধিত কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, অটোরিকশা নিবন্ধন করা এত সহজ না। আমরা সবাইকে ম্যানেজ করে গাড়ি চালাই। বর্তমানে যাত্রীরা বাসের চেয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক হান্নান বলেন, শহরের ভেতরে গাড়ি চালিয়ে শান্তি নেই। যানজটের কারণে চালানো যায় না। এ জন্য আমরা মহাসড়কে গাড়ি চালাই।
এদিকে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পুলিশের সামনে দিয়েই চলাচল করছে অবৈধ অটোরিকশা। কিন্তু তাদের কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বাসচালকদের অভিযোগ, সিএনজির দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়ে গেছে, এর যন্ত্রণায় সড়কে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। একে তো দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে, অন্যদিকে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলার প্রতিটি মিটিংয়ে অটোরিকশা বন্ধের দাবি জানাই। এরা সিন্ডিকেট করে আমাদের যাত্রী নিয়ে যায়।
মহাসড়কে অটোরিকশা বন্ধ করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) এম এম মোহাইমেনুর রশিদ। তিনি বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে পুলিশ একাই লড়ে যাচ্ছে। অথচ প্রশাসনে আরও অনেক বিভাগ আছে। বিআরটিএ ও সিটি করপোরেশন চাইলে অনেক কিছু করতে পারে।
জেলা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মোহাম্মদ আবু নাঈম জানান, অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত মার্চ মাসে তাদের বিরুদ্ধে ১৭৫টি মামলা দিয়ে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মহাসড়কে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে প্রতিদিন আট থেকে ১০টি মামলা দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানান, ঈদের মধ্যে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি ছিল। এ জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অভিযান জোরদার করা হবে। মহাসড়কের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।