দ্বিতীয় মেয়াদে গত মাসের ২০ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রায় সব বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করার নির্দেশ দেন। আর তাতেই বেঁধেছে বিপত্তি। বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসহ আমেরিকান সহায়তার ওপর নির্ভরশীল নানা খাতে নেমে এসেছে বিপর্যয়।

প্রায় শত বছরের গবেষণার পর ২০২১ সালে শুরু হওয়া ম্যালেরিয়া টিকার উন্নয়ন গবেষণা কর্মসূচিতে দেওয়া হয়েছে স্থগিতাদেশ। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নবজাতকদের পুষ্টি ক্লিনিকসহ ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল এইডের (ইউএসএআইডি) পরিচালিত নানা ধরনের সহায়তা কার্যক্রম।

২০২৩ সালে বিশ্বের ১৮০টি দেশে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের সহায়তা বিতরণ করেছে ওয়াশিংটন। হঠাৎ করেই এই সহায়তা বন্ধের ঘোষণায় বাতিল হয়েছে প্রস্তাবিত সব নতুন প্রকল্প ও চুক্তি। চলমান বেশির ভাগ প্রকল্প বন্ধসহ ইউএসএআইডির শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৫৬ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ইউএসএআইডির সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলোর একটির প্রধান পরিচালক বলেছেন, এরই মধ্যে অত্যন্ত দরিদ্র দেশে তাদের পরিচালিত কয়েক ডজন শিশু পুষ্টি ক্লিনিক বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। কেননা, এ ক্লিনিক পরিচালনা যথেষ্ট ব্যয়বহুল।

এককভাবে বিশ্বের শীর্ষ দাতা দেশের পক্ষ থেকে এমন সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে। বিভিন্ন সহায়তা প্রতিষ্ঠান সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের এ উদ্যোগ বিশ্বে অনেকের জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে। আগামী তিন মাসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ কার্যক্রমের বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। এর মাঝেই গত শুক্রবার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উন্নয়ন, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য খাতে সহায়তা দেওয়া প্রকল্পগুলো বন্ধ করতে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোয় বার্তা পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরির একটি ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএসএআইডি ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এমভিডিপি) নামে পরিচালিত হচ্ছিল এই কার্যক্রম।

এদিকে শনিবার থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ইউএসএআইডির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চেষ্টা করেও ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করা যায়নি। এমনকি খুঁজে পাওয়া যায়নি ইউএসএআইডির এক্স অ্যাকাউন্টও। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান ও সিএনএনের

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএসএআইডি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন: ইলন মাস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউএসএআইডি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। 

সোমবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট বন্ধ দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সংস্থাটিরকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরপরেই মাস্ক এমন মন্তব্য করলেন।

ইলন মাস্ক বলেছেন, মার্কিন জনগণের করের অর্থ দিয়ে জৈব অস্ত্র গবেষণায় অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি। সেইসঙ্গে সংস্থাটি প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্য অর্থ ব্যয় করেছে। তাই সময় হয়েছে সংস্থাটির মরে যাওয়ার। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনটি পোস্ট শেয়ার করেছেন মাস্ক। সেখানে তিনি বলেছেন, আপনারা জানেন কী, ইউএসএআইডি আপনাদের করের অর্থে জৈব অস্ত্র গবেষণায় অর্থায়ন করেছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ এর মতো জীবাণুও অন্তর্ভুক্ত, যার কারণে কয়েক কোটি মানুষ মারা গেছেন। 

এ ছাড়া মাইক বেঞ্জের একটি টুইট শেয়ার করে ইলন মাস্ক বলেন, প্রোপাগান্ডা প্রচারের জন্য ইউএসএআইডি গণমাধ্যমগুলোকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছে। এরপর আরেকটি টুইটে তিনি ঘোষণা করেন, ইউএসএআইডির মৃত্যু হওয়াই উচিত।

এর আগে গত শনিবার ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে সেখানে ‘সার্ভার আইপি ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি’ বলে একটি বার্তা ভেসে উঠছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী কয়েক বিলিয়ন ডলারের এ ধরনের বৈদেশিক সহায়তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং করদাতাদের অর্থের অপচয় কি না, তা নিশ্চিত হতে পর্যালোচনা করে দেখা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের সরকারে ইলন মাস্কের এত ক্ষমতা কি বিপদের
  • ইউএসএআইডির অর্থায়ন পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি
  • স্বকল্প ও বিকল্প ভাবুন
  • ইউএসএআইডি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন: ইলন মাস্ক
  • ট্রাম্পের আদেশের বড় ধাক্কা বাংলাদেশে ঝুঁকিতে লাখো মানুষ
  • ট্রাম্পের বিদেশি সহায়তা বন্ধের পর ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট উধাও