মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া রাকিবুলের পাশে এবার সাঁথিয়ার ইউএনও
Published: 2nd, February 2025 GMT
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া রাকিবুল ইসলামের পাশে এবার দাঁড়িয়েছেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুল ইসলাম। আজ রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে রাকিবুলের হাতে সহায়তার পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি।
গত ২৯ জানুয়ারি দৈনিক সমকালে ‘মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় রাকিবুল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে ইউএনওর।
এর আগে রাকিবুলের ভর্তির খরচের দায়িত্ব নেন মোহাম্মাদ আলী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার এস এম মোস্তাক আহমেদ। পাশাপাশি সাঁথিয়ার জোড়গাছা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন উল্লাস রাকিবুলকে মেডিকেলে পড়ার সরঞ্জাম হিসেবে কঙ্কাল কিনে দেন। সমকালে সংবাদ দেখার পর তারাও এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ান।
রাকিবুল সাঁথিয়ার ধোপাদহ ইউনিয়নের নাড়িয়াগদাই উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তেন। নাড়িয়াগদাই গ্রামের তাঁত শ্রমিক রাজা মোল্লা ও আমেনা খাতুন দম্পতির সন্তান তিনি।
হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও দুশ্চিন্তায় ছিলেন রাকিবুল। ইউএনওর সহায়তা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন নাড়িয়াগদাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াহেদুল ইসলাম ও সমকালের সাঁথিয়া প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন।
সহায়তা পাওয়ার পর রাকিবুল সমকালকে বলেন, এই অর্থ আমার পড়ালেখার ব্যাপারে অনেক সহায়ক হবে। যারা সহযোগিতা করেছেন,তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
ইউএনওর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন রাকিবুলের বাবা রাজা মোল্লা ও মা আমেনা খাতুন।
ইউএনও জাহিদুল ইসলাম বলেন, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে উপজেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে গুলি ছুড়ে, ককটেল ফাটিয়ে টেন্ডার বাক্স লুট
রাজশাহীর পবায় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। এসময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামে সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার পবা উপজেলা পরিষদে ঘটনাটি ঘটে বলে জানান পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ।
এদিকে, যুবদলের এক নেতা দরপত্র দাখিল করতে গিয়ে বাধা পান বলে অভিযোগ করেছেন। জেলা যুবদলের ওই নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলেও জানান।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে বোমা বিস্ফোরণে আহত যুবকের মৃত্যু
ঝিনাইদহে বয়লার বিস্ফোরণে নিহত ২
আহত শাকিলুর রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তিনি জেলা যুবদলের একজন যুগ্ম-আহ্বায়কের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় জানিয়েছে, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আজ ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনও’র কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে একপক্ষ অপর পক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়। এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করার ঘটনাটি ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবদলের নেতা বলেন, “মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে গেলে প্রথমে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এরপরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।”
হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও ছাত্রশিবিরের সাবেক এক নেতার নাম জানান।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক ওই শিবির নেতাও নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলে জানান। তবে তিনি বলেন, “আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম তা ঠিক। তবে এই দরপত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা যুবদল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।”
ঘটনার পর দুই পক্ষ চলে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।
রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ওসি মাসুমা মোস্তারিন বলেন, “গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, “দরপত্র জমাদানের সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় বাক্স ভেঙে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে গেছে কে বা কারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”
এখন দরপত্রের কী হবে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, “সাধারণত দরপত্র জমাদানের একাধিক সময় নির্ধারণ করা থাকে। আগামী তারিখ আছে ৬ ও ৭ এপ্রিল। ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল হবে না।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ