উদিতের একাধিক চুমুকাণ্ড, বাদ যাননি অলকা-শ্রেয়াও
Published: 2nd, February 2025 GMT
ভারতের জনপ্রিয় গায়ক উদিত নারায়ণের চুমুর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। যদিও এ বিষয়ে উদিত নারায়ণের জানান, তার উদ্দেশ্য অসৎ ছিল না। তবে উদিতের নতুন ভিডিও ভাইরাল হতেই উঠে এসেছে গায়কের একাধিক চুমুকাণ্ড। কখনও অলকা ইয়াগনিক, কখনও আবার শ্রেয়া ঘোষালকেও প্রকাশ্যে চুমু দিতে দেখা যায়।
ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে গান গাইছিলেন অলকা ইয়াগনিক। হঠাৎই এসে উদিত নারায়ণ তার গালে চুমু দেন। ঘটনায় অপ্রস্তুত অলকাকে তাড়াতাড়ি সরে যেতে দেখা যায়। ভিন্ন আরও একটি ভিডিওতে অলকাকেই আচমকা চুমু দেন উদিত। গায়িকা যে এমনটি আশা করেননি তা তার অভিব্যক্তিতেই ছিল স্পষ্ট।
আবার বেশ কয়েক বছর আগে ‘জব তক হ্যায় জান’ ছবিতে গান গাওয়ার জন্য সেরা গায়িকার পুরস্কার জিতেছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল। সেসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উদিত নারায়ণ। শ্রেয়া মঞ্চে আসতেই উদিত তাকে আচমকাই জড়িয়ে ধরে গালে চুমু দেন। এমন ঘটনায় অপ্রস্তুত হয়েছিলেন শ্রেয়াও। পরে যদিও তিনি হেসে ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এদিকে চুমু নিয়ে এ ধরেন ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে উদিত নারায়ণ এইচটি সিটিকে বলেন, ‘ভক্তরাই আসলে পাগল হয়ে যান। আমরা এমন নই, আমরা ভদ্র মানুষ। কিছু লোকের এতে উৎসাহ থাকে। তারা এটার মাধ্যমে ভালবাসা প্রকাশ করেন। ভিড়ের মধ্যে এত মানুষ, আমাদের দেহরক্ষীও উপস্থিত। তবে ভক্তরা মনে করেন তারা দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন, তাই কেউ হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করছেন। কেউ চুমু দিচ্ছেন।’ সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে বাঁধ নিয়ে শঙ্কিত মানুষ
‘সামনোত তো বষ্যা আসি গেইল। সবায় খালি কতায় কয়, এলাও বান্দের কোনো কাম (বাঁধের কাজ) হইল না। কায় জানে বাহে, এইবার বান্দ ভাঙলে হামারও বুজি এটেকোনা থাকা হবার নয়।’
আসন্ন বর্ষায় পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় এমন অভিব্যক্তি রংপুরের গঙ্গাচড়ার ধামুর এলাকায় তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধের বাসিন্দা শহর বানুর। কয়েক বছর ধরে তিস্তার পানি কখনও কমে, আবার কখনও বেড়ে যায়। পানিপ্রবাহের এ অস্বাভাবিকতায় প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ওপর রয়েছে দখল-দূষণ। এসব কারণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আগামী বর্ষা ঘিরে নাজুক এ বাঁধ নিয়ে প্রচণ্ড উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তিস্তাপারের মানুষ। তারা দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে নীলফামারীর জলঢাকা থেকে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতু পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা প্রতিরক্ষা ডানতীর বাঁধ নির্মাণ করা হয়। তিস্তা রেল সেতু থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত আরও ২১ কিলোমিটার রয়েছে এই বাঁধের অংশ। ২০১৯ সালে সর্বশেষ ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। বামতীর বাঁধ রয়েছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর পর্যন্ত মোট ১২০ কিলোমিটার। ডানতীর বাঁধের নীলফামারীর জলঢাকার শৌলমারী এলাকায় দুই কিলোমিটার, আলসিয়াপাড়ায় এক কিলোমিটার ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
সরেজমিন দেখা যায়, রংপুরের গঙ্গাচড়ার মর্নেয়া থেকে নোহালী পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার তিস্তা প্রতিরক্ষা ডানতীর বাঁধের ওপর বসতি গেড়েছে নদীভাঙনের শিকার ১০ হাজার পরিবার। বসতির ভারে তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকিতে পড়েছে। বাঁধের বেশির ভাগ স্থান কেটে সমতল করে স্থানীয় দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকায় জলঢাকার শৌলমারী ও গঙ্গাচড়ার নোহালী সীমান্ত থেকে রংপুরের কাউনিয়ার নিচপাড়া পর্যন্ত দখলদারদের কবলে চলে যায়। হুমকির মুখে পড়ে ডানতীরের বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড বহুবার উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েও দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারেনি। বাঁধটি অবৈধ দখলদারদের পাশাপাশি ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধের প্রস্থ ১৪ ফুট থাকার কথা থাকলেও এখন অনেক স্থানেই তা নেই।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা এলাকার নওশের আলী বলেন, গত দুই বছরের বন্যায় বিভিন্ন উপবাঁধসহ বিনবিনা এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধের বিশাল এলাকা বিলীন হয়ে গেলেও তা সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো পদক্ষেপ নেই। এসব কারণে তিস্তা প্রতিরক্ষা ডানতীর বাঁধের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
গঙ্গাচড়া সদরের গান্নারপার এলাকার গোলাম মওলা বলেন, পানি বাড়া-কমার কারণে বাঁধে পানির ধাক্কা লেগে বিভিন্ন স্থানে মাটি সরে গেছে। বর্ষা শুরুর আগে বাঁধ মেরামত করা না গেলে বিশাল এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
একই এলাকার মনছুর আলী বলেন, প্রতিবছরই এখানকার ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায় তিস্তা। গোটা মৌসুমজুড়ে উৎকণ্ঠায় থাকতে হয়। ঠিকানাহীন পরিবারগুলো প্রতিবছর বাঁধ কেটে বস্তি গড়ে তুলছে। এতে বাঁধ নাজুক হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘খুব দ্রুত তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধ সংস্কার করা প্রয়োজন। না হলে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করলে গোটা রংপুর শহর তলিয়ে যাবে।’
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালের পর বাঁধের সংস্কার কাজ করা হয়নি। ওই সময় বাঁধে বসবাসকারীদের উচ্ছেদও করা হয়েছিল। মাঝখানে আবারও বাঁধে বসতি গড়ে উঠেছে। এতে বাঁধের বেশকিছু এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।