ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি, ঠেকিয়ে দিল সেনাবাহিনী-পুলিশ
Published: 2nd, February 2025 GMT
খেলাধুলার সময় ছবি তোলা নিয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার দুই ইউনিয়নের মানুষ ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া বাজারে ও যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া এলাকায় হাজারো মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। তবে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ চেষ্টায় দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা সংঘর্ষে জড়ানো থেকে বিরত থাকেন।
এলাকাবাসী জানান, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা নিয়ে যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া ও বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। মারামারির বিষয়টি দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা মেনে নিতে পারেননি। তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। রাতেই উভয় ইউনিয়নের মানুষ ঘোষণা দেন সংঘর্ষের।
ঘোষনা অনুযায়ী বল্লভদী ইউনিয়নের পক্ষে ফুলবাড়িয়া বাজারে অন্তত ৬-৭ হাজার লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। অপরদিকে যদুনন্দী ইউনিয়নের পক্ষে খারদিয়া এলাকায় ২-৩ হাজার লোক জড়ো হন। খবর পেয়ে প্রথমে সালথা থানা পুলিশ ও পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে যৌথ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২২
নঙ্গলকোটে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.
যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিক মোল্যা বলেন, “ঘটনাটি মীমাংসার কথা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত।”
কি কারণে সংঘর্ষের এমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, “শনিবার বিকেলে ফুলবাড়িয়া স্কুলে খেলার সময় ছবি তোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ সময় খারদিয়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থীদের মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে উভয় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় ঘটনাটি ইউনিয়ন পর্যায় চলে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা গত রাতভর উভয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। তারপরও আজ সকালে দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার লোক সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী মিলে পরিস্থিতি শান্ত করে। এখন উভয় ইউনিয়নের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।”
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, “আমি খবর পেয়ে উভয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছি। চেয়ারম্যানরা আমাকে বলেছেন, কোনোভাবেই কেউ যাতে সংঘর্ষে না জড়ান, সেজন্য তারাও চেষ্টা করছেন।”
ঢাকা/তামিম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ পর স থ ত স ঘর ষ র শ ন ত কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ডা. বাসেত বাদ, জামায়াতের নতুন প্রার্থী নিজামীপুত্র ব্যারিস্টার মোমেন
পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দলটির সাবেক আমির ও সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে দলটির বিশেষ সভায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। এর আগে ওই আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. আব্দুল বাতেন খানকে।
রফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর শাহাদাতের পর এখানে আমাদের দলের প্রার্থী নাজিবুর রহমান মোমেনই ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের জুলুম নির্যাতনের কারণে মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কোনো সদস্য দেশে থাকতে পারেননি। তাই মাঝখানে নির্বাচনের জন্য আমরা প্রার্থী করেছিলাম আব্দুল বাসেত খান ভাইকে। আবারও আমরা বিজয়ের সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করতেই ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনকে প্রার্থী করলাম। আমাদের দলের প্রার্থী হওয়া বা প্রার্থী করা কোনোটাই প্রার্থীর সাথে সম্পর্কিত নয়, সবকিছুই দলের সঙ্গে সিদ্ধান্ত।
সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর আগাম প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও দলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে দলের প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। এই আসনে এতদিন প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বেড়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল বাসেত খান।
মতিউর রহমান নিজামীর দ্বিতীয় পুত্র মোমেন লন্ডন থেকে বার-অ্যাট-’ল ডিগ্রি নিয়ে ২০১০ সালে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরে ২০১৬ সালের ১০ মে মধ্যরাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার বাবা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর সরকারের নানা চাপে দেশত্যাগ করে লন্ডনে চলে যান। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
মতিউর রহমান নিজামীর ৬ সন্তানের মধ্যে নাজিবুর রহমান মোমেন দ্বিতীয়। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। দ্বিতীয় আরেক সন্তান মোমেনের জমজ ভাই ডা. নাঈম খালেদ যুক্তরাজ্যে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। ছোট ছেলে নাদিম তালহা তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বড় মেয়ে ড. মহসিনা ফাতেমা মালেয়েশিয়া ও ছোট মেয়ে খাদিজা তাহেরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।