প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাচ্ছেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা
Published: 2nd, February 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে আহতরা রাজধানীর শ্যামলী সড়ক ছেড়ে দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করেছেন। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগারগাঁও ও শ্যামলী সড়ক ছেড়ে দেন তারা। এরপর ৭টার দিকে আগারগাঁও হাসপাতাল এলাকা থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে রওনা দেন তারা।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় আগারগাঁও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (নিটোর বা পঙ্গু হাসপাতাল) এবং জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন আহতরা। সেখানে সারা রাত থেকে পরে রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্যামলী মিরপুর রোড অবরোধ করে স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের দাবি জানান জুলাই আন্দোলনে আহতরা।
জুলাই আন্দোলনে আহতরা বলেন, আমাদের ন্যায্য দাবিতে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছি। আমরা অসুস্থ মানুষ, তবুও রাস্তায় নেমে নিজেদের অধিকারের জন্য সরকারের কাছে আকুতি-মিনতি করতে হচ্ছে। এরপরও সরকারের কাছ থেকে কোনও সাড়া পাচ্ছি না। সড়ক অবরোধ করায় অনেক সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এবং ক্ষতি হচ্ছে। এমনটা বিবেচনায় আমরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছি। এখন সরকার থেকে আমাদের যে ম্যাজেমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিস (এমআইএস) বা যাচাই-বাছাই সার্টিফিকেট কপি দেয়া হয়েছে, সেটা নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে যাচ্ছি। সেখানে আমরা একটা ফায়সালা চাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য আহত
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান বিশিষ্টজনদের
জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে খুনী ও তাদের দোসরদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং ভিক্টিমদের মানসিক ক্ষত থেকে সারিয়ে তুলতে ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) গঠনের আহ্বান জানিয়েছে বিশিষ্টজনরা।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল এন্ড ডিপ্লোম্যাসি (আইআইএলডি) এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ যৌথভাবে ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) বিরোধ-পরবর্তী বাংলাদেশ: একটি ভিকটিম-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই আহ্বান করেন।
রবিবার (৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অবস্থিত ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
ধর্ষক ও নারী নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে ঢাবিতে লাঠি মিছিল
সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরামের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা, ফটোগ্রাফার ও অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম, জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা। তিনি সুদীর্ঘ সময় নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানে কাজ করেছেন। তিনি ট্রুথ এবং হিলিং সংক্রান্ত ধারণাগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এ কমিশনের জন্য অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ প্রদান করেন।
এক্টিভিস্ট শহিদুল আলম বলেন, “ভিক্টিমরা ন্যায়বিচার চায়। যার জন্য প্রয়োজন জাতীয় ডায়ালগ এবং এদের গল্পগুলো তুলে আনার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা।”
জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান জুলাই অভ্যুত্থানে সরকারের একটা অংশেরই কেবল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “পুলিশ, বিচার বিভাগসহ অধিকাংশ জায়গায় পূর্ববর্তী লোকদের উপস্থিতিতে কিভাবে ভিক্টিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই অঞ্চলের নির্যাতনের ইতিহাস কেবল ১৬ বছরের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার সুদীর্ঘ সময়ের এমন নিভৃত অনেক রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক নির্যাতন রয়েছে।”
এ গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশিষ্ট নেতা, অ্যাক্টিভিস্ট আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে তার লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতাউর রহমান তালুকদার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র গবেষক খন্দকার রাকীব, সাংবাদিক সাকিব সরকার, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ওমর নাসিফ আব্দুল্লাহ ও জাহিদুল ইসলাম মিয়াজি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খন্দকার রাকিব, ওমর নাফিস আব্দুল্লাহ, জাহিদুল ইসলাম মিয়াজী, বিইউপির শিক্ষক আতাউর রহমান অপূর্ব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) এর উপর আইআইএলডি এর নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীনের প্রস্তাবনায় একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যগণ হলেন মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ, হুমা খান, সাইফুদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান তালুকদার, আলী আহসান জুনায়েদ, সাকীব সরকার, হারুন ওর রশীদ, তাজরিয়ান আকরাম, নওশিন শর্মিলা রিতু, শফিউল আলম শাহীন এবং রাজীব মন্ডল।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী