তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি সরকার মানবে না- শিক্ষা উপদেষ্টার এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তারা। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিষয়টি নিয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের সহযোগী সদস্য অহিদুজ্জামান অভি বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত এলিটিস্ট শিক্ষা সিন্ডিকেট ভেঙে এক নতুন যুগের সূচনা হবে তিতুমীরিয়ানদের হাত ধরে। আমরা হাতে গোনা কিছু মোড়ল বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্থচোষা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কুক্ষিগত শিক্ষা সিন্ডিকেট ধ্বংস করে, শিক্ষাকে সর্বস্তরের জনতার দ্বারে পৌঁছে দেবো। এখনই সময়। এই মুহূর্তে শিক্ষার সংস্কার প্রয়োজন। 

অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাখালী রেল ক্রসিং হয়ে আমতলী মোড়ে এসে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুলশান ক্রাইম ডিভিশনের পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে।

এ বিষয়ে বনানী থানার ওসি রাসেল সারওয়ার সমকালকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, শিক্ষার্থী বলেছেন- রাত ৮টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে যাবেন। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। 

এর আগে, আজ একনেক মিটিং শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানী ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি অযৌক্তিক। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের এ দাবি সরকার মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই। দাবির মুখে সরকার আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করবে না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি এই মুহূর্তে রাজশাহী কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা উচিত। কারণ এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো কলেজ।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ত ম র কল জ শ ক ষ উপদ ষ ট ত ত ম র কল জ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কে এই আনিসুজ্জামান চৌধুরী

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে আজ সোমবার নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট গবেষক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টাকে সহায়তা করবেন তিনি। তবে কাজ করবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। বিশেষ সহকারী পদে থাকাকালে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অর্থ মন্ত্রণালয়ে কীভাবে যুক্ত থাকবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আনিসুজ্জামান চৌধুরী যোগ্য ব্যক্তি। পুঁজিবাজার, আর্থিক খাতের সংস্কার, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর ইত্যাদি বিষয় তিনি গুরুত্ব নিয়ে দেখবেন। কাল (মঙ্গলবার) তাঁর কার্যপরিধি (টিওআর) ঠিক করা হতে পারে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তিনি অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র। পরে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা থেকে পিএইচডি ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় আজ সোমবার অনুষ্ঠিত ‘বিদেশে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার: গৃহীত পদক্ষেপ, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ বিষয়ক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন এত দিন।

আনিসুজ্জামান চৌধুরী ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড সাইকোলজি এবং অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স একাডেমি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স্কুল অব বিজনেসে একযোগে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ও থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাতিসংঘের শীর্ষ পদে ২০০৮-১৬ সময়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১-১২ সময়ে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন অর্থনীতির শিক্ষক। সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইংল্যান্ড (অস্ট্রেলিয়া) এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় শিক্ষকতা করেন তিনি।

‘জার্নাল অব দ্য এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমি’র প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি ১৯৯৫-০৮ সময়ে এ দায়িত্বে ছিলেন। এর সম্পাদকীয় পরিষদের সহসম্পাদক হিসেবে এখনো যুক্ত তিনি। ইকোনমিক অ্যান্ড লেবার রিলেশনস রিভিউর সম্পাদকীয় পরিষদেও তিনি আছেন।

পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতি এবং ম্যাক্রো-ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা আছে আনিসুজ্জামান চৌধুরীর। তাঁর ৩০টির মতো বই রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মানের পত্রিকায় ১০০-এর বেশি জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে।

জানতে চাইলে আনিসুজ্জামান চৌধুরী আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের জন্য অনেক কাজ করার আছে। কাল অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি এবং তাঁর পরামর্শ নিয়েই কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ