জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এল ২১৮ কোটি ডলার
Published: 2nd, February 2025 GMT
দেশে সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার, দেশীয় মুদ্রার যার পরিমাণ ২৬ হাজার ৮৭৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স ডিসেম্বর মাসের চেয়ে কমলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা বেড়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬৪ কোটি ডলার।
আরো পড়ুন:
ঋণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি
সেতু নির্মাণে ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ছাড়বে সরকার
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, এর মধ্যে রাষ্টায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫১ কোটি ১১ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৬০ লাখ, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৫৫ কোটি ১৫ লাখ, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে দেশে এক হাজার ৫৯৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৯১ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ, নভেম্বর ১৯৩ কোটি, ডিসেম্বরে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ, জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চ মাসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিলে এসেছে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম ট য ন স এস ছ
এছাড়াও পড়ুন:
আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি পেতে পারেন আপনিও
স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস’ বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ একটি একাডেমিক প্রতিযোগিতা। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও প্রবন্ধগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। প্রতিবছর ২৫টি একাডেমিক বিভাগে একজন বৈশ্বিক (গ্লোবাল) বিজয়ী এবং বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য আঞ্চলিক বিজয়ী নির্বাচন করা হয়। তবে সঠিক তথ্য ও নির্দেশনার অভাবেই সম্ভবত আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সাফল্যের হার তুলনামূলক কম। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য গবেষণা বা প্রবন্ধ নির্বাচনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। মানসম্পন্ন, মৌলিক ও বিশ্লেষণধর্মী গবেষণাই বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। বিষয় নির্বাচনের সময় তাই এমন কিছু বেছে নেওয়া উচিত, যা প্রাসঙ্গিক ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাফায়েত আলম ২০২৪ সালে স্থাপত্য ও নকশা বিভাগে রিজিওনাল অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছেন। কীভাবে বিষয় নির্বাচন করেছিলেন তিনি?
সাফায়েত বলেন, ‘আমি কলেজজীবন থেকেই পাখির ছবি তুলতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছি। প্রায় ৫০০ প্রজাতির পাখির ছবি তুলেছি। প্রকৃতির সঙ্গে এই দীর্ঘ সময় কাটানোর ফলে আমার মধ্যে প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ তৈরি হয়েছে। তাই স্থাপত্যের থিসিসের জন্য আমি এমন একটি বিষয় বেছে নিই, যা দেশের বন ও প্রাকৃতিক জীবনের সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে। হাতি বন রক্ষা ও পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু আমাদের দেশে হাতির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। তাই আমি এই সংকট নিয়ে গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে পরিকল্পনামাফিক এগোনোর পরামর্শ দেন সাফায়েত। তিনি বলেন, গবেষণার শুরুতে একটি সুস্পষ্ট কাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে পুরো গবেষণার প্রবাহ সুশৃঙ্খল থাকে। কাঠামো তৈরি করার পর প্রথম ধাপে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা গুরুত্বপূর্ণ। নির্ভরযোগ্য একাডেমিক উৎস, গবেষণা নিবন্ধ, জার্নাল, সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট এবং প্রাসঙ্গিক বইপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। তথ্য সংগ্রহের সময় সূত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা জরুরি, ভুল তথ্য গবেষণার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করে। তথ্য সংগ্রহের পর গবেষণার খসড়া লেখা শুরু করা উচিত। খসড়া লেখার সময় গবেষণার মূল যুক্তি বা থিসিস স্টেটমেন্ট স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে, যেন পুরো গবেষণাটি একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মধ্যে থাকে।
গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫-এর জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছে। চলবে ৬ জুন পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যে আবেদনকারীদের গবেষণা বা প্রবন্ধ নির্ধারিত ফরম্যাটে জমা দিতে হবে। ৭ জুন থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত একাডেমিক বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে গবেষণার মূল্যায়ন করা হবে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রকাশিত হবে প্রতিযোগিতার ফলাফল। বৈশ্বিক বিজয়ী পাবেন বিশেষ সম্মাননা। এ ছাড়া নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অনুষ্ঠিত হবে গ্লোবাল সামিট, যেখানে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বিশ্বের শীর্ষ মেধাবীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পাবেন।
গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-এ ভাষাতত্ত্ব বিভাগে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী হয়েছিলেন হাসান শেখ। বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা (ইএলটি) বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন। তিনি বলেন, আবেদনের প্রক্রিয়া সহজ হলেও সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। প্রথমে প্রতিযোগিতার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হয়। এরপর নির্ধারিত ফরম্যাটে গবেষণা বা প্রবন্ধ আপলোড করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে সাবমিশন নিশ্চিত করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সাবধানতার সঙ্গে সব জমা দেওয়া উচিত। নির্দিষ্ট গাইডলাইন ভালোভাবে বুঝে নেওয়া খুব জরুরি। প্রতিটি বিভাগের জন্য নির্ধারিত শব্দসীমা ও কাঠামো আলাদা, তাই আগে থেকেই নির্দেশিকা অনুসারে গবেষণা প্রস্তুত করা উচিত। গবেষণা অবশ্যই ‘anonymous submission’ হিসেবে জমা দিতে হবে, যেখানে লেখকের পরিচয় গোপন রাখা বাধ্যতামূলক। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার আগে গবেষণা কোথাও প্রকাশ করা যাবে না, অন্যথায় আবেদন বাতিল হতে পারে। জমা দেওয়ার আগে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ নির্দেশিকা দেখে নেওয়া উচিত, যেন কোনো নিয়ম ভঙ্গ না হয়।
এই বছর যাঁরা আবেদন করতে চান, তাঁদের জন্য সাফায়েত আলমের পরামর্শ, গ্লোবাল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডসের নিজস্ব আর্কাইভ রয়েছে, যেখানে তারা আগের বছরের পুরস্কৃত গবেষণাগুলো প্রকাশ করেছে। এসব গবেষণা পর্যালোচনা করলে প্রতিযোগিতার মান ও কাঠামো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়, যা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।