ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছ। এতে কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়েছে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খাইরদিয়া গ্রামে সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত ১৪ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঘারুয়া ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লার মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত ২৫ জানুয়ারি ঘারুয়া ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল। সমাবেশে খারদিয়া গ্রাম থেকে কৃষক দলের মিছিল বের করলে প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা আনোয়ারের লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে।

আরো পড়ুন:

নঙ্গলকোটে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত

মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ

শনিবার আনোয়ার হোসেন, ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নয়ন খা, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইয়াদ আলী মীর, মন্নু ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক চান মিয়া খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করেন। 

পূর্বের জের ধরে আজ সকালে আনোয়ারের গ্রুপের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে প্রথমে শরিফাবাদ বাজারে মহড়া দেয়। তখন করিম মোল্লার লোকজন ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে চলে যায়। পরে তারা কৃষক দলের করিম মোল্লার বাড়ির দিকে হামলা করতে এগিয়ে যায়। তখন করিম মোল্লা গ্রুপের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয় দলের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে এবং ঢাল, সড়কি, টেঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পরে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ওপর অত্যাচার করে। গত ২৫ জানুয়ারি আমাদের কৃষকদলের মিছিল বের করতে বাধা দেয়। গতকাল শনিবার তিনি ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতিয়ার, বর্তমান সভাপতি নয়ন খাকে নিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করেন। আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে দলভারি করে আমার বাড়িতে ঘেরাও করে রাখেন। তখন ইজ্জত বাঁচাতে তাদের ধাওয়া করা হয়।’’

বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আওযামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর এক নম্বর সমর্থক নিরু খলিফার লোকজন আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীর ওপরে হামলা চালিয়ে আহত করেছেন।’’

এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঢাকা/তামিম/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত কর ম ম ল ল ইউন য ন র র ল কজন ব এনপ র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণে বড় পরিবর্তন

সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণ নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা ২০২৫’ এবং ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাতে এসব পরিবর্তনের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। 

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, লেখক ও চিত্রনাট্যকারদের সম্মানি বেড়েছে। গল্প লেখককে ২ লাখ এবং চিত্রনাট্যকারকে ৩ লাখ টাকা উৎসাহ পুরস্কার দেওয়া হবে। আগে গল্প লেখক ও চিত্রনাট্যকারকে দেওয়া হতো ৫০ হাজার টাকা করে।

এ ছাড়া পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য— দুই বিভাগেই নির্মাতা/ পরিচালকের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবকারী পরিচালককে পূর্বনির্মিত কমপক্ষে একটি চলচ্চিত্র অথবা নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক চলচ্চিত্রে তার ভূমিকা থাকতে হবে।

আরো পড়ুন:

আমাকে নিয়ে বলিউডে ষড়যন্ত্র হয়েছে: গোবিন্দ

রুনা খানের বাবা মারা গেছেন

অন্যদিকে, আগের নীতিমালায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হতো ৯ মাস। কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতারা বহুবার অভিযোগ করেছেন যে, সেই নির্ধারিত সময় পর্যাপ্ত নয়, যার ফলে নির্মাণে দেরি হয়।

এখন অনুদানের প্রথম চেক পাওয়ার পর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ মাস। সময় বেড়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও। স্বল্পদৈর্ঘ্য নির্মাণে ১২ মাস এবং প্রামাণ্যচিত্রের জন্য ২৪ মাস সময় পাবেন নির্মাতারা। তবে যৌক্তিক বিবেচনায় পূর্ণদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে ছয় মাস ও স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে তিন মাস করে সর্বোচ্চ দুবার সময় বাড়ানো যাবে।

নতুন নীতিমালায় অর্থ প্রদানের নিয়মেও পরিবর্তন এসেছে। এখন প্রথম কিস্তি হিসেবে দেওয়া হবে অনুদানের ২০ শতাংশ। এই অর্থ প্রাপ্তির দুই মাসের মধ্যে শুটিং শিডিউল, প্রোডাকশন প্ল্যান, লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি, শিল্পীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদনাসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিতে হবে। চলচ্চিত্র বাছাই ও তত্ত্বাবধান কমিটি সন্তুষ্ট হলে অনুদানের ৫০ শতাংশ অর্থ দেওয়া হবে। অনুদানের সিনেমার পারিশ্রমিক নিয়ে অনেক শিল্পী অভিযোগ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রায়িত অংশের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ রাফকাট, শিল্পীদের সম্মানি প্রাপ্তির প্রমাণপত্র দেখানোর পর মিলবে আরো ২০ শতাংশ অর্থ। সিনেমা মুক্তির পর মিলবে বাকি ১০ শতাংশ অর্থ।

এরই মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য চলচ্চিত্রে অনুদানের জন্য চিত্রনাট্য আহ্বান করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। অনুদান পেতে আগ্রহীদের চলচ্চিত্রের গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনয়শিল্পীদের নামসহ পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ আগামী ৭ এপ্রিল বিকেল ৪টার মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।

এদিকে, প্রতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগের নীতিমালায় এই সংখ্যা ছিল ১০। এ ছাড়া স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে এখন থেকে প্রতিবছর ১০টির পরিবর্তে অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে ২০টি চলচ্চিত্র।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণে বড় পরিবর্তন
  • বেসরকারি ব্যাংকে অফিসার পদে নিয়োগ, স্নাতকে আবেদন
  • ঈদের আগে ডিপিএলে খেলতে পারবেন না মুশফিক