ফরিদপুরে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২২
Published: 2nd, February 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছ। এতে কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়েছে।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খাইরদিয়া গ্রামে সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত ১৪ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঘারুয়া ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লার মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত ২৫ জানুয়ারি ঘারুয়া ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল। সমাবেশে খারদিয়া গ্রাম থেকে কৃষক দলের মিছিল বের করলে প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা আনোয়ারের লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে।
আরো পড়ুন:
নঙ্গলকোটে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত
মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
শনিবার আনোয়ার হোসেন, ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নয়ন খা, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইয়াদ আলী মীর, মন্নু ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক চান মিয়া খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করেন।
পূর্বের জের ধরে আজ সকালে আনোয়ারের গ্রুপের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে প্রথমে শরিফাবাদ বাজারে মহড়া দেয়। তখন করিম মোল্লার লোকজন ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে চলে যায়। পরে তারা কৃষক দলের করিম মোল্লার বাড়ির দিকে হামলা করতে এগিয়ে যায়। তখন করিম মোল্লা গ্রুপের লোকজন সঙ্গবদ্ধ হয়ে পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় উভয় দলের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে এবং ঢাল, সড়কি, টেঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ২২ জন আহত হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পরে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের ওপর অত্যাচার করে। গত ২৫ জানুয়ারি আমাদের কৃষকদলের মিছিল বের করতে বাধা দেয়। গতকাল শনিবার তিনি ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতিয়ার, বর্তমান সভাপতি নয়ন খাকে নিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করেন। আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে দলভারি করে আমার বাড়িতে ঘেরাও করে রাখেন। তখন ইজ্জত বাঁচাতে তাদের ধাওয়া করা হয়।’’
বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আওযামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর এক নম্বর সমর্থক নিরু খলিফার লোকজন আমাদের বিএনপি নেতাকর্মীর ওপরে হামলা চালিয়ে আহত করেছেন।’’
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/তামিম/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত কর ম ম ল ল ইউন য ন র র ল কজন ব এনপ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৪ সালে ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর: অ্যামনেস্টি
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক দশকের মধ্যে গত বছর জ্ঞাত তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে ইরান, ইরাক এবং সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। আজ মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি মৃত্যুদণ্ডবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ১ হাজার ৫১৮ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি।
অ্যামনেস্টি বলেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ দেশ চীনে। দেশটির পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া এবং ভিয়েতনামে কার্যকর হওয়া হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড এ প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ড একটি জঘন্য অপরাধ। আজকের বিশ্বে এটির কোনো স্থান নেই।’
বেসরকারি সংস্থাটি বলেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়লেও কার্যকরকারী দেশের সংখ্যা টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায় ১৫টিতে নেমেছে।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে কার্যকর হওয়া মৃত্যুদণ্ডের ৯১ শতাংশের হয়েছে ইরান, ইরাক ও সৌদি আরব। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে এ তিন দেশ। অনেক দেশ হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য গোপন করলেও আমাদের বিশ্বাস, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা দেশের সংখ্যা অনেক কমেছে।
গত বছর কেবল ইরানেই ৬৪ শতাংশ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ওই বছর কমপক্ষে ৯৭২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটি, যা আগের বছরের তুলনায় ১০০ জনের বেশি।
অ্যামনেস্টির তথ্যমতে, সৌদি আরব শিরশ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। দেশটিতে বার্ষিক মোট মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ১৭২ থেকে দ্বিগুণ হয়ে কমপক্ষে ৩৪৫টিতে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ইরাকে মৃত্যুদণ্ড প্রায় চারগুণ বেড়েছে। সেখানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মানুষের সংখ্যা ১৬ থেকে বেড়ে ৬৩–তে উন্নীত হয়েছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীটি বলেছে, কিছু দেশ বিক্ষোভকারী এবং জাতিগত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
গোষ্ঠীটি আরও জানায়, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।