অর্ধ-নগ্ন ছবি নিয়ে মুখ খুললেন সন্ন্যাসিনী মমতা
Published: 2nd, February 2025 GMT
কয়েক দিন আগে আলো ঝলমলে দুনিয়াকে বিদায় জানিয়ে সন্ন্যাসিনী হয়েছেন নব্বই দশকের লাস্যময়ী ও সাহসী অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি। সন্ন্যাসিনী হওয়ার পরও আখড়ার নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ফলে, তাকে নিয়ে জোর চর্চা চলছে ভারতীয় মিডিয়ায়।
এ পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়া টিভিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মমতা কুলকার্নি। এ আলাপচারিতায় বেশ কিছু প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। ৩৫ বছর আগে একটি ম্যাগাজিনের কভারের জন্য অর্ধ-নগ্ন হয়ে ফটোশুট করেছিলেন মমতা। এ সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গ তোলা হয়।
স্মৃতিচারণ করে মমতা কুলকার্নি বলেন, “আমি তখন নবম শ্রেণিতে পড়ি। স্টারডাস্টের লোকজন আমাকে ডেমি মুরের একটি ছবি দেখিয়েছিলেন; যা আমার কাছে অশ্লীল মনে হয়নি। আমি সেই সময় বিবৃতি দিয়েছিলাম। তাতে বলেছিলাম, ‘আমি এখনো ভার্জিন।’ কিন্তু মানুষ এটা হজম করতে পারেননি। কারণ হিসেবে তারা বলেছিলেন, ‘বলিউডে পা রাখতে যেকোনো কিছু করতে পারেন।’ মানুষজন এটা করতে পারেন, তারা টাকার জন্য বলিউডে আসতে পারেন। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। কারণ আমার বাবা ৩৫ বছর পরিবহন কমিশনার ছিলেন। সেই সময়ে আমি সেক্স সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, তাই নগ্নতা কী তা আমি বুঝতাম না। আপনি যদি যৌনতার বিষয়ে সচেতন না হন, তাহলে আপনি নগ্নতা ও অশ্লীলতা আলাদা করতে পারবেন না।”
আরো পড়ুন:
ছয় বছর পর অক্ষয়ের সেঞ্চুরি
বিদ্যার সঙ্গে চর্চিত চুম্বন দৃশ্য নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রতীক
মমতা তার ক্যারিয়ারে সাহসী রূপে পর্দায় হাজির হয়েছেন। কিছু ‘বোল্ড’ কথার গানেও নেচেছেন। এ প্রসঙ্গ তোলার পর এই অভিনেত্রী বলেন, “মাধুরী দীক্ষিত বা অন্য কারো নাচের ক্ষেত্রে আমরা গানের কথা শুনি না। আমাদের মূল মনোযোগ থাকে তাদের নাচের স্টেপের দিকে। আমিও গানের কথার দিকে মনোযোগ দিইনি।”
গত ২৪ জানুয়ারি মহাকুম্ভের কিন্নর আখড়াতে ‘মহামণ্ডলেশ্বর’ রীতির মাধ্যমে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন মমতা। এদিন পিণ্ডদানও করেন তিনি। এই রীতির মাধ্যমে নতুন নামও গ্রহণ করেছেন। তার নতুন নাম— শ্রী ইয়মাই মমতা নন্দ গিরি।
২০১৬ সালে থানে পুলিশ ২ হাজার কোটি রুপির একটি মাদক পাচার চক্রের তদন্ত শুরু করে; যেখানে মমতার নাম জড়িয়ে পড়ে। মূলত, মমতা কুলকার্নি ও তার সঙ্গী কথিত মাদক সম্রাট ভিকি গোস্বামীকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। গত বছরের শেষের দিকে এ মামলা থেকে খালাস পান এই অভিনেত্রী। কিন্তু ২৪ বছর এই অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদেশে কাটিয়ে গত বছর ভারতে ফিরেন মমতা।
১৯৯২ সালে রাজ কুমার ও নানা পাটেকরের ‘তিরঙ্গা’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু করেন মমতা কুলকার্নি। নব্বইয়ের দশকে ‘করণ অর্জুন’, ‘ওয়াক্ত হামারা হ্যায়’, ‘ক্রান্তিবীর’, ‘সাবছে বড় খিলাড়ি’-এর মতো হিট সিনেমার নায়িকা তিনি। অক্ষয় কুমার, আমির খান, সালমান খান, গোবিন্দ, সঞ্জয় দত্তের মতো তারকা শিল্পীদের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় ঝড় তুলেছেন মমতা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন মমত
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনসহ অনেক সেবায় সন্তুষ্টি, আছে অসন্তোষও
২০১২ সাল থেকে আবুধাবিতে থাকেন রায়হান। সেখানে ভবন নির্মাণের কাজে যুক্ত তিনি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। তখন ইমিগ্রেশন সমাপ্ত করে ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ পেয়ে যান। শনিবার আবুধাবিতে ফিরে যেতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে তাঁর ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে।
বিমানবন্দরে শনিবার বিকেলে কথা হলো তরুণ এই প্রবাসীর সঙ্গে। তিনি বললেন, আগে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। আজ (শনিবার) অল্প সময়ের মধ্যেই ইমিগ্রেশনের ডেস্ক অফিসার কাজ শেষ করেছেন।
শনিবার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে কথা হলো রায়হানের মতো আরও আট যাত্রীর সঙ্গে। তাঁদের সবাই দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ হওয়া, অল্প সময়ে লাগেজ পাওয়া এবং সম্প্রতি বিমানবন্দরে চালু হওয়া প্রবাসী লাউঞ্জসহ অনেক সেবা নিয়েই সন্তোষ প্রকাশ করলেন। তবে বিমানবন্দরের ই-গেট পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া এবং নির্বিঘ্নে ওয়াই–ফাই সেবা না পাওয়াসহ কিছু বিষয় নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। তা ছাড়া সেবা প্রদানকারী পুলিশ কর্মকর্তারাও তাঁদের কিছু সীমাবদ্ধতা ও কষ্টের কথা জানিয়েছেন।
স্বল্প জনবল ও পুরোনো সরঞ্জামাদি দিয়েই চলছে ইমিগ্রেশনের কাজ। তবু কমেছে ইমিগ্রেশনের সময়।হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে দিনে গড়ে ১৫০টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। পুলিশ দৈনিক গড়ে ২৮ হাজার ৬৫০ জন যাত্রী ইমিগ্রেশন (আগমনী ও বহির্গমন) সম্পন্ন করেন। এত বড় কর্মযজ্ঞের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও আধুনিক সরঞ্জামাদির ঘাটতি রয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশের। এর মধ্যেও ইমিগ্রেশনের জন্য অপেক্ষার সময় অনেক কমিয়ে এনেছে পুলিশ।
ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, তারা বিদেশগামী যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পাশাপাশি স্টপ লিস্টের (দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বা আপত্তি আছে এমন ব্যক্তি) যাত্রীদের আটক এবং ভ্রমণের জাল নথিপত্র জব্দের কাজ করে থাকে। পাশাপাশি ভিসা অন অ্যারাইভাল (আগমনী ভিসা) প্রদান এবং ভিসা মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে জরিমানা আদায় করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
ইমিগ্রেশন পুলিশের জনবল–স্বল্পতা, সরঞ্জামাদির ঘাটতি এবং আন্তরিকতার অভাবে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে বেশ কিছু কার্যকর উদ্যোগের কারণে সম্প্রতি ইমিগ্রেশন সম্পন্নের সময় কমে এসেছে। এ জন্য ইমিগ্রেশনের ডেস্ক অফিসারদের দায়িত্ব বণ্টনসহ বেশ কিছু কার্যক্রমে অটোমেশন আনা হয়েছে।
যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের জন্য যেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়, সে জন্য অটোমেশন কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা ইমিগ্রেশন কার্যক্রমসহ পুরো কার্যক্রম পেপারলেস (কাগজবিহীন) করতে চাই। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম আরও দ্রুততর, গতিশীল ও নিরাপদ হবেপুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন অপারেশনস) এ কে এম আক্তারুজ্জামানগত সেপ্টেম্বর থেকে শনিবার (৮ মার্চ) পর্যন্ত ইমিগ্রেশন পুলিশ ডকুমেন্ট অ্যানালাইসিস সেন্টার থেকে ৪৬টি জাল ভিসা, ৫টি রেসিডেন্সি কার্ড, ৪টি জাল/টেম্পারিং পাসপোর্ট এবং একজনের পাসপোর্টের তথ্য ব্যবহার করে অন্যজনের ছবি ব্যবহার (ইমপোস্টার) করা ৩০ জনকে শনাক্ত করে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ ডিসেম্বর থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ২০৪টি দেশের ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫৬ জন যাত্রীর আগমনী ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সময়ে ১৯৯টি দেশের ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৫ জন যাত্রীর বহির্গমন ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়। ইমিগ্রেশন পুলিশের পাঁচ শতাধিক সদস্য ২৪ ঘণ্টায় ৪ পালায় এই কাজগুলো করেন। প্রতিবছরই যাত্রীসংখ্যা বাড়লেও সেই হারে ইমিগ্রেশন পুলিশের সংখ্যা ও অন্যান্য সুবিধা বাড়েনি।
এ বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন অপারেশনস) এ কে এম আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের জন্য যেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়, সে জন্য অটোমেশন কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা ইমিগ্রেশন কার্যক্রমসহ পুরো কার্যক্রম পেপারলেস (কাগজবিহীন) করতে চাই। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম আরও দ্রুততর, গতিশীল ও নিরাপদ হবে।’
প্রবাসী লাউঞ্জে গিয়ে যা দেখা গেলহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ১১ নভেম্বর দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী লাউঞ্জ চালু করে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রবাসী লাউঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, ১৫-২০ জন যাত্রী সেখানে অবস্থান করছেন। তাঁদের কেউ স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছেন, কেউ পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে কেনা খাবার খাচ্ছেন, কেউ আবার মুঠোফোনে চার্জ দিচ্ছেন।
সেখানে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আলিফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে কুয়েতে থাকেন। লাউঞ্জের সেবা ও ইমিগ্রেশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তিন মাস পরপর যাওয়া-আসা করি। আজ (শনিবার) এক মিনিটে ইমিগ্রেশন শেষ করেছি। পরে প্রবাসী লাউঞ্জের খবর পেয়ে এখানে বসি। এখানে পরিবেশ অন্য জায়গাগুলোর চেয়ে খুবই ভালো, খাবারের দামও তুলনামূলক কম।’
প্রবাসী লাউঞ্জের খাবারের দোকানের কর্মী প্রভাতী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রবাসীরা যেন স্বল্প খরচে খাবার কিনতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি। দাম কম হওয়ায় প্রবাসী শ্রমিকেরা এখান থেকে কিছু কিনে খেতে পারছেন। এখানে সেবাটাই আমাদের কাছে মুখ্য।’
আমি তিন মাস পরপর যাওয়া-আসা করি। আজ (শনিবার) এক মিনিটে ইমিগ্রেশন শেষ করেছি। পরে প্রবাসী লাউঞ্জের খবর পেয়ে এখানে বসি। এখানে পরিবেশ অন্য জায়গাগুলোর চেয়ে খুবই ভালো, খাবারের দামও তুলনামূলক কম।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আলিফ হোসেনই-গেটসহ কিছু বিষয়ে অসন্তোষএই প্রতিবেদক যে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা কিছু ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টির কথাও জানিয়েছেন। বিশেষ করে আড়াই বছর আগে চালু হওয়া ২৪টি ই-গেট এখনো পুরোপুরি চালু না হওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরের ওয়াই–ফাই সেবা নিয়েও তাঁরা অভিযোগের কথা জানান।
ই-গেটে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা জানান, বর্তমানে আগমনী ও বহির্গমনে ১২টি করে ২৪টি এবং দুটি ভিআইপি ই-গেটসহ মোট ২৬টি ই-গেট আছে। ই-পাসপোর্টধারী যাত্রীর ইমিগ্রেশন–প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১৮ সেকেন্ডে শেষ করতে পারার কথা ছিল। তবে সরেজমিনে বেশির ভাগ গেট অকার্যকর দেখা গেছে। অধিকাংশ যাত্রী এই গেট ব্যবহারে অনীহা দেখাচ্ছিলেন।
পরে ই-গেটের ব্যবহার নিয়ে দুই যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁর জানান, ই-গেট থাকলেও তা কার্যত কোনো কাজে আসছে না। ই-গেটে পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করার পর আবার অন্যদের মতো একই প্রক্রিয়ায় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এ জন্য যাত্রীরা ই-গেট ব্যবহার করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ মার্চ দিবাগত রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফেরেন শারমিন শিরি। তিনি ই-গেট পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় তা ব্যবহার করেননি বলে জানিয়েছেন। তবে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ইমিগ্রেশন শেষ হওয়া এবং দ্রুত লাগেজ পাওয়ায় সন্তুষ্টির কথাও জানিয়েছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই তরুণী ওয়াই–ফাই ব্যবহার করতে না পারা নিয়েও ক্ষোভের কথা জানালেন।
২ মার্চ সিঙ্গাপুর থেকে আসা কয়েকজন যাত্রী জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তাঁরা বিমান থেকে নামেন। এরপর দ্রুত ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ইফতারের আগেই লাগেজ হাতে পেয়ে যান। এই যাত্রীরা জানান, ইফতারের সময়ও ইমিগ্রেশন ডেস্কে ইফতার পাশে রেখে কর্মকর্তাদের যাত্রীসেবা দিতে দেখেন।
সেবা প্রদানকারীদের সীমাবদ্ধতাবর্তমানে বিমানবন্দরের আগমনীতে ইমিগ্রেশন পুলিশের ৪৮টি কাউন্টার এবং বহির্গমনে ৪২টি কাউন্টার রয়েছে। চার পালায় এসব কাউন্টারসহ পুরো ইমিগ্রেশন–প্রক্রিয়ায় কাজ করেন পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য। প্রতি পালায় ১২৫-১৩০ জন সদস্য কাজ করেন। আগে তিন পালায় কাজ করলেও ৫ আগস্টের পরে ৪ পালায় কাজ শুরু হয়। তবে জনবলের সংকট এখনো রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জনবলের পাশাপাশি ইমিগ্রেশন পুলিশের বড় সংকট রয়ে গেছে সরঞ্জামাদিতে। ইমিগ্রেশন সফটওয়্যার সিস্টেমের জন্য ব্যবহার হওয়া কম্পিউটার সরঞ্জামাদি বেশ পুরোনো। এগুলো ২০১৪ সালে নেওয়া হয়েছে। ফলে এগুলো এখন ঠিকভাবে কাজ করছে না। তা ছাড়া পাসপোর্ট ও ভিসা যাচাইয়ের জন্য যেসব ‘ডকুমেন্ট অ্যান্ড ব্যাংক নোট ডিটেক্টর’ ইমিগ্রেশন পুলিশ ব্যবহার করে, তার মান নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে। তা ছাড়া বর্তমানে যেসব ‘পাসপোর্ট রিডার’ ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একবারে পাসপোর্টের তথ্য নিতে পারে না। অনেক সময় ৭-৮ বার পাসপোর্ট দেওয়ার পর তথ্য যাচাই করতে পারে এই সরঞ্জামগুলো। এতে যাত্রীদের অনেক সময় অপচয় হয়।
ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এখন প্রতি পালার জন্য ১০টি করে ডকুমেন্ট অ্যান্ড ব্যাংক নোট ডিটেক্টর দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এই যন্ত্রগুলো মাস দুয়েক আগে তাঁরা হাতে পেয়েছেন। তবে ডিটেক্টরগুলোর বেশির ভাগই এর মধ্যে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তখন জাল পাসপোর্ট বা ভিসা শনাক্তে সমস্যা হয়।
সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভিসা অন অ্যারাইভাল এখন থেকে অনলাইনে দেওয়া হবে। পেমেন্টটা বিমানবন্দরে এসে দিলেই হবে। আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে বিদেশ থেকেও কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট দেওয়া যাবে। এভাবে আমরা পুরো প্রক্রিয়া অটোমেশন করে ফেলব।পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মো. গোলাম রসুলএ ছাড়া ভাষা প্রশিক্ষণসহ পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ঘাটতিও রয়ে গেছে। যেমন গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের ১৮ হাজার ১৫১ জন নাগরিক বাংলাদেশে আসেন। দেশ ছেড়ে যান ১৮ হাজার ৩০৮ জন চীনের নাগরিক। ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র বলছে, এই যাত্রীদের ৯৯ ভাগই চায়নিজ ভাষা ছাড়া অন্য ভাষা বোঝেন না। ফলে তাঁদের ইমিগ্রেশন–প্রক্রিয়ায় বেগ পেতে হয়। এ জন্য চায়নিজ ভাষাসহ যেসব দেশের যাত্রীদের আগমন বেশি, সেসব দেশের ভাষার প্রশিক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া ইমিগ্রেশন পুলিশে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের জন্য ভেতরে কোনো খাবারের ব্যবস্থা নেই, এ জন্য বেশি দামে খাবার কিনে খেতে হয়। ইমিগ্রেশন পুলিশের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ বসে দায়িত্ব পালন করা ইমিগ্রেশন ডেস্ক অফিসারদের চেয়ারগুলোও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মো. গোলাম রসুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ভিসা অন অ্যারাইভাল এখন থেকে অনলাইনে দেওয়া হবে। পেমেন্টটা বিমানবন্দরে এসে দিলেই হবে। আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে বিদেশ থেকেও কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট দেওয়া যাবে। এভাবে আমরা পুরো প্রক্রিয়া অটোমেশন করে ফেলব।’