নিরাপত্তার দাবিতে কুবি শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি
Published: 2nd, February 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য বরাবর এ স্মারকলিপি দেন তারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণ করে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। মুক্তিপণের জন্য তার পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায়, টানা ৫ ঘণ্টার অভিযান শেষে কুমিল্লা শহরের একটি দোকান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন সহায়তা পাওয়া যায়নি।
স্মারকলিপিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চার দফা দাবি প্রস্তাব করা হয়। প্রথম দুটি দাবি হলো- শহরে আসা-যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিপদে পড়া শিক্ষার্থীদের তৎক্ষণাৎ সাহায্য করার জন্য ‘র্যাপিড অ্যাকশন সেল’ গঠন করতে হবে; ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যায় (ছিনতাই, অপহরণ ইত্যাদি) বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
অন্য দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্পিডব্রেকারের ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা; ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা।
এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুহসিন জামিল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আজ আমরা স্মারকলিপি প্রদান করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে এবং কুমিল্লা শহরে যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। সবুজের সঙ্গে আরো খারাপ কিছু হতে পারত।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী শহরে টিউশনি করেন। যেকোন ধরনের ঘটনাই ঘটতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও ছাত্রীরা নিরাপদ নন। অনেক সময় তাদের হেনস্তার শিকার হতে হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাতে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সেজন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা স্মারকলিপি প্রদান করি।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। নিরাপত্তা তো আসলে একা দেওয়া যাবে না, এর জন্য একটা প্রশাসনিক বডি রয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত কর স ম রকল প র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ’ দিয়ে ফিরলেন অপহরণের শিকার চাচা–ভাতিজা
অপহরণকারীদের দাবি করা মুক্তিপণের ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাড়ি ফিরেছেন টেকনাফের দুই বাসিন্দা। কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবনিয়া এলাকার একটি বসতবাড়ি থেকে গত শনিবার রাতে দুজনকে অপহরণ করা হয়েছিল।
অপহৃত দুজন হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা এলাকার বাসিন্দা নুর কামাল (৫০) ও রঙ্গিখালী এলাকার বাসিন্দা নুর হোসেনের ছেলে বেলাল উদ্দিন (১৮)। তাঁরা সম্পর্কে চাচা–ভাতিজা। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পাহাড়ি এলাকায় তাঁদের ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে প্রথম আলোকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ। অপহৃত নুর কামালের স্ত্রী তৈয়বা বেগমের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, দর-কষাকষির মাধ্যমে অপহরণকারীদের দাবি করা মুক্তিপণের ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁরা দুজন রাতেই বাড়িতে ফিরেছেন। মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য অপহরণকারীরা তাঁদের মারধর করেছে। দুজনকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা শেষে ফিরে এলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপহৃত নুর কামালের স্ত্রী তৈয়বা বেগম বলেন, শনিবার রাত আটটার দিকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে স্বামী নুর কামাল ও ভাতিজা বেলালকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাঁচজনের একটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী দল। এরপর গত রোববার বিকেলে তাঁকে ফোন করে দুজনের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ না দিলে দুজনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
টেকনাফের বাহারছড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, দুজনকে অপহরণের বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশকে অবহিত করা হয়। গতকাল সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অপহৃত দুজনকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে।
বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক শুভ রঞ্জন সাহা বলেন, ‘অপহৃত দুই ব্যক্তি ফেরত আসার বিষয়টি জেনেছি। তবে মুক্তিপণের বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে কেউ কোনো ধরনের কথা বলেননি।’
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত ১৫ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৪৪ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে একই সময়ে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়।